logo ২৬ এপ্রিল ২০২৫
২০ দলের অবরোধ কি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষ্ক্রিয়?
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
০৩ জুন, ২০১৫ ০০:০৯:২৩
image

ঢাকা: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলের অবরোধ কর্মসূচি কি এখনো চলছে? সম্প্রতি জোটের নেতাদেরকে এই প্রশ্ন করলেই তারা অনেকটা বিব্রত বোধ করেন জবাব দিতে।


অনেক নেতাকে এই ইস্যুতে বলতে শোনা যায়- ভাই কী আর বলবো, বোঝেন তো!এক জোট নেতা হাসতে হাসতে এই প্রতিবেদককে বলেন, “ভাই এটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে”।


বিশ্লেষকরা বলছেন, তিন তিন বার রাষ্ট্রক্ষমতার যাওয়ার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দল বিএনপির কাছ থেকে জাতি এটা আশা করে ন। কতটা দুরাবস্থায় পড়লে বিএনপির মতো একটি দল দেশব্যাপী এতো বড় একটা কর্মসূচি দিয়ে তার কোনো খোঁজ রাখে না।


কার্যত এই কর্মসূচি এখন না চললেও এটাকে প্রত্যাহার করে নেয়া উচিত।


এদিকে অবরোধ নিয়ে কথা বলতে চাইলে বিব্রতবোধ করেন এবং নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটামসকে বলেন, “আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি পরিষ্কার করা উচিত ছিল অনেক আগেই। না হওয়াটা দু:খজনক।”  


যদিও জোটের প্রধান বেগম খালেদা জিয়া এ ব্যাপারে শরিকদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেছিলেন  তাও বেশ কিছুদিন হয়ে গেল। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর ঐ বক্তব্যের পর এরই মধ্যে এক মাস পার হয়ে গেছে।কবে হবে তাও জানা নেই কারো।


তবে অবরোধের বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার না করায় এ নিয়ে বিব্রত বিএনপি ও জোটের শরিকদলগুলোর নেতারা।  তাদের বক্তব্য, এটি এখন হাস্যকর বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কারণ অবরোধ চলাকালিন সময় থেকেই এর কার্যকারিত হারায়। অনেক আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে এটা প্রত্যাহার উচিত ছিল।


প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি বিকালে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অনির্দষ্টকালের অবরোধের ঘোষণা দেন খালেদা জিয়া। পরবর্তিতে ৬ এপ্রিল তিনি আদালত থেকে জামিন নিয়ে বাসায় ফেরেন। যদিও এর আগেই অবরোধ কর্মসূচি অকার‌্যকর হয়ে পড়ে। তবে এ কর্মসূচি আছে কি নেই সেটা আর আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।


জোট সূত্রে জানা যায়, সবশেষ খালেদা জিয়ার সঙ্গে জোট নেতাদের বৈঠক হয়েছে গত বছরের ২২ নভেম্বর। এরপর সময় কেটেছে আন্দোলনে। তবে আন্দোলন থেমে গেলেও  এদের আর বসা হয়নি। কবে হবে সে বিষয়েও শরিক দলগুলোর নেতাদের জানা নেই।


সম্প্রতি বিএনপির একজন শীর্ষ নেতার জোট নিয়ে দেয়া বক্তব্যে জোটের মধ্যে একধরণের অস্থিরতা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। জোট নেতারা এ নিয়ে প্রতিবাদ জানালেও এখনো বিএনপির বক্তব্য মেলেনি। উল্টো কয়েকজন নেতা ওই বক্তব্যের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।


জোট নেতারা বলছেন, আন্দোলন কর্মসূচি না থাকলেও সার্বিক বিষয় নিয়ে শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হওয়া উচিত। অন্যথায় জোটের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হবে।


তবে কেউ কেউ বৈঠকের কোনো প্রয়োজনীতা আপাতত নেই বলে মনে করছেন।


জোটের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ঢাকাটাইমসকে বলেন, “এখন আসলে অবরোধ ও আন্দোলন কোনটাই নেই।কারণ এখন তো আর এই কর্মসূচি পালনের জন্য আহ্বান জানানো হয় না।”


জোটের বৈঠকের বিষয় তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে জোটের বৈঠকের কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। তবে আমাদের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ আছে।তবে বেগম খালেদা জিয়া প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় ডাকতে পারেন।” 


তবে এই সময়ের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গেও বৈঠক করেননি দলের চেয়ারপারসন। সাধারণত তিনি জোট নেতাদের আগে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।


অবরোধ আছে কি নেই- এমন প্রশ্নে জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী ঢাকাইমসকে বলেন, “এটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। তবে আন্দোলন আপাতত বন্ধ বলে আবার যে হবে না তাতো ঠিক না।”


জোট নিয়ে বিএনপি নেতা শাহজাহান ওমরের বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “কথা যে কেউ বলতে পারেন। কিন্তু দলীয় ফোরামে না বলে প্রকাশ্যে এইভাবে  বলাটা ঠিক হয়নি।”


জোটের একটি শরিক দলের এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে বলেন, “অবরোধের বিষয়টি অনেক আগে পরিষ্কার করা উচিত ছিল। কিন্তু জোট যেমন অকার‌্যকর, তেমনি অবরোধও অকার‌্যকর আপনাকে ধরে নিতে হবে। আর এটা ঘোষণার সময়ই তো ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছিল।”




(ঢাকাটাইমস/৩জুন/বিইউ/এআর/ ঘ.)