logo ২০ এপ্রিল ২০২৫
দেশত্যাগ কল্পকাহিনি
ন্যায্যমূল্যে বাড়ি বিক্রি করেছি: অরুণ গুহ মজুমদার
২৯ আগস্ট, ২০১৫ ০১:৩০:৪২
image

ভারত ভ্রমণ শেষে বাংলাদেশে ফিরেছেন ফরিদপুরের অরুণ গুহ মজুমদার তাঁর পরিবারবলেছেন, বাংলাদেশে ছিলেন, আছেন, থাকবেনমেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করতে ভারতে গিয়েছিলেন২৮ আগস্ট শুক্রবার দেশে ফেরেন তিনিফরিদপুরে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোরডটকমকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেন অরুণ গুহ মজুমদার


ঢাকাটাইমস : আপনি অরুণ গুহ মজুমদার বাংলাদেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েছেনভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছেকয়েকদিন ধরে এমন প্রচার হয়েছেআসল ঘটনা কি?


অরুণ গুহ মজুমদার : যতসব অপপ্রচার। ডাহা মিথ্যা কথা। যারা এসব বলেছে, অপপ্রচার করেছে নিশ্চয়ই তাদের কোনো কুমতলব আছে। ভারতে গিয়েছিলাম আমার একমাত্র মেয়ে তুলি মজুমদারের এম.ফিলে ভর্তির জন্য। সেখানকার গুজরাট প্রদেশের বরোদার এম এস বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে ভর্তি হয়েছে গত ২০ আগস্ট। সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গে ফেরার পর দু-একদিন আত্মীয়ের বাড়ি থেকে বাংলাদেশে ফিরলাম আজ (শুক্রবার ২৮ আগস্ট)। আমি মোটেও দেশত্যাগ করিনি, দেশত্যাগে বাধ্য হওয়ার প্রশ্নই আসে না। দেশত্যাগের কল্পকাহিনি রচয়িতা কারা? জানতে ইচ্ছে করছে।


ঢাকাটাইমস : হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত তো ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ফরিদপুর শহরে আপনার বাড়ি দয়াময়ী আশ্রম দখল করে নিয়েছেন এলজিআরডিমন্ত্রীএরপর জোরপূর্বক আপনাকে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়


অরুণ গুহ মজুমদার : যতসব বানোয়াট, উদ্ভট কথা। এটি পরিকল্পিত মিথ্যাচার। আমি পৈতৃক বাড়িটি ন্যায্যমূল্যে এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কাছে বিক্রি করেছি। দখলের প্রশ্ন আসছে কোত্থেকে? আর রানা দাশগুপ্তকে আমি চিনি না। কোনোদিন দেখিনি। জীবনেও কথা হয়নি। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কারো সঙ্গে জীবনে কখনো আমার কথা হয়নি। তাদের কাউকে আমি, আমার স্ত্রী, কন্যা এসব অভিযোগ করিনি। কাউকেই করিনি। অভিযোগ করার কোনো প্রশ্নও ওঠে না। তাহলে উপযাচক হয়ে এসব মিথ্যাচারের মানে কি?


ঢাকাটাইমস : এই কথাও তো উঠেছে, বাড়িটি জোরপূর্বক আপনার কাছ থেকে লিখে নেওয়া হয়েছে


অরুণ গুহ মজুমদার : আমি কিন্তু বারবার বলছি, আমি স্বেচ্ছায় বাড়িটি বিক্রি করেছি। ন্যায্যমূল্য পেয়েছি। আমার আইনজীবী সুবল সাহা এবং আমি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কাছে বাড়িটি বিক্রির প্রস্তাব নিয়ে যাই। মন্ত্রী মহোদয় কিন্তু প্রথমে কিনতেও চাননি। এখানে জোরাজুরির প্রশ্ন আসছে কেন? কারা রটাচ্ছে এসব? তাদের নিশ্চয়ই অন্য মতলব আছে। ফরিদপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আমি যখন জমি বিক্রির রেজিস্ট্রেশনের জন্য যাই তখন আমার আইনজীবী সুবল সাহা আমার সঙ্গে ছিলেন। এছাড়া ফরিদপুরের নামকরা আইনজীবী নারায়ণ চন্দ্র দাসকেও আমি সঙ্গে নেই সাক্ষী হিসেবে। আইনজীবী দেবাশীষ সাহাও সঙ্গে ছিলেন আমার। আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না কেন এসব কথাবার্তা ছড়ানো হয়েছে? আমি বলব, এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য আছে।


ঢাকাটাইমস : হঠাৎ বাড়িটি বিক্রিই বা করলেন কেন?


অরুণ গুহ মজুমদার : মোটেও হঠাৎ নয়। বিক্রির চিন্তা ছিল আগে থেকেই। কারণ আমার নগদ টাকার প্রয়োজন ছিল বহুদিন ধরে। আমি অনেকদিন ধরে কার্যত বেকার জীবন কাটাচ্ছিলাম। প্রায় একযুগ ধরে বাড়িটি নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা ছিল। ফলে আগে ইচ্ছে থাকলেও বিক্রির সুযোগ ছিল না। বাড়িটির বড় অংশ সরকারের অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত ছিল। তাই বিক্রির সুযোগ পাইনি। আইনি লড়াইয়ে আমি পূর্বপুরুষের বাড়িটির মালিকানা ফিরে পাই। বাড়িটি বহু পুরনো, কার্যত ধ্বংসপ্রাপ্ত। এটি রক্ষণাবেক্ষণের মতো আর্থিক সক্ষমতা আমার ছিল না। তাই নিকটবর্তী প্রতিবেশী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কাছে বিক্রি করি। তাঁর ওপর আমার অগাধ আস্থা। আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক প্রায় শত বছরের। মন্ত্রী মহোদয়ের শহরের পৈতৃক বাড়ি এবং আমি যে বাড়িটি বিক্রি করলাম সেটি একেবারে লাগোয়া। কোন দেয়াল নেই দুই বাড়ির মধ্যে। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে বড় হয়ে ওঠা আমাদের। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওনার পিতা খন্দকার নুরুল হোসেন (নুরু মিয়া) আমাদের গোটা পরিবারকে আগলে রেখেছেন। আগে পরে যখনই আমরা কোনো বিপদে পড়েছি তখনই নুরু মিয়া চাচা, মোশাররফ ভাই ও তাঁর অন্য ভাইয়েরা আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। অন্য কাউকে বাড়ি বিক্রির প্রস্তাব দিতেও ইচ্ছে করেনি। কারণ, ফরিদপুর শহরে এমন মানুষও তো আছে যে, কথায় কাজে মিল নেই। সেই ধরনের মানুষরা কিন্তু আমাদের জমি নানা কায়দায় নেওয়ার চেষ্টাও করেছে। অন্যকে মালিক সাজিয়ে ভুয়া দলিলও করে রেখেছিল। আমি দিনের পর দিন এসব মামলা লড়েছি। এরপর আইনি লড়াইয়ে জিতেছি। যারা আমার পূর্ব পুরুষের জমির দিকে কুনজর দিয়েছিল তারা তো মোশাররফ সাহেবেরই বিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তি। সেই চক্র যখন আমায় নানাভাবে ভোগানোর চেষ্টা করেছে কই তখন তো কাউকে পাশে পাইনি খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও তাঁর পরিবার ছাড়া।


কোনোদিন আমাদের কোনো কাজে যারা আসেননি, বিপদে যাদের কোনোদিন পাশে পাইনি সেরকম কিছু লোক, গোষ্ঠী এখন বন্ধু সাজতে চাইছেন। এটা রহস্যজনক। আর মিথ্যা রটিয়ে, কাল্পনিক কাহিনি প্রচার করে মোশাররফ ভাইয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টাকারীরা কার স্বার্থ হাসিল করতে চান?


ঢাকাটাইমস : আপনাকে জোর করে ফরিদপুরের অন্যত্র রাখা হয়েছেএমন কথাও কেউ কেউ বলছেন


অরুণ গুহ মজুমদার : মিথ্যা কথা। এসব মিথ্যা শুনতে আর ভালো লাগছে না। আমি পুরনো বাড়ি বিক্রি করেছি। খুব স্বাভাবিকভাবেই সেটি ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র আমায় উঠতে হয়েছে। আপাতত ভাড়া বাড়িতে আছি। রাজেন্দ্র কলেজের সামনে আমার অন্য জমি আছে। সেখানে বাড়িও করব। খুব শিগগিরই করব।


ঢাকাটাইমস: আপনি বদরপুরে আছেনএলজিআরডিমন্ত্রীর বাড়ি সেখানেএজন্যও হয়ত কথা উঠেছে


অরুণ গুহ মজুমদার : আগেও তো মন্ত্রী মহোদয়ের বাড়ির সঙ্গেই ছিলাম। এখনো আছি। সমস্যা কি? আর এটা আপনাদের বোঝা উচিত আমি পুরনো বাড়িটি বিক্রি করে সেখানে তো আর অবস্থান করতে পারি না। বহু বছর আগের তারিখে আমার জমির ভুয়া দলিল যে চক্রটি করে রেখেছিল তাদের কেউ কেউ এ বছরের প্রথমদিকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। আমি চেয়েছি, এমন একটি জায়গায় আপাতত বাড়ি ভাড়া করি যেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাজনিত সুবিধাও আছে। অথচ এটাও দোষ বলে প্রচার হচ্ছে! আমি পরিষ্কারভাবে বলছি, মোশাররফ ভাই ও তাঁর পরিবারের চেয়ে বড় শুভাকাক্সক্ষী, বন্ধু শুধু ফরিদপুর কেন গোটা বাংলাদেশে আমার নেই। আজ যারা বন্ধু সাজার ভান করছেন, তারা অন্য কোনো মতলব আঁটছেন, এটা বুঝতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না আমার।


ঢাকাটাইমস : দয়াময়ী আশ্রমে কোনো মন্দির ছিলএটি ভাঙা হয়েছে? কে ভেঙেছে?


অরুণ গুহ মজুমদার : পারিবারিক মন্দির ছিল। এটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। কোনো মন্দির ভাঙা হয়নি। রাজেন্দ্র কলেজের সামনে আমার অন্য যে জমি আছে সেখানেও একটি পারিবারিক মন্দির করব শিগগিরই।


ঢাকাটাইমস : খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এপিএস ছিলেন সত্যজিতচিনতেন তাকে?


অরুণ গুহ মজুমদার : সত্যজিতকে চিনি। মোশাররফ ভাইয়ের এপিএস থাকা অবস্থায় কয়েকবার আমায় টেলিফোন করেছেন।


ঢাকাটাইমস : কেন টেলিফোন করেছেন সত্যজিত?


অরুণ গুহ মজুমদার : আমার বাড়িটি কেনাবেচার কথা যখন হয় তখন সত্যজিত টেলিফোন করে জানতে চেয়েছে আমার মূল বাড়ির সামনের দিকে একতলা যে হলুদ রয়ের ছোট বাড়িটি আছে এই জায়গা আমি বিক্রি করেছি কি-না? ওই বাড়িতে বসবাসরত প্রণব কুমার মুখার্জির সঙ্গে আমার সম্পর্কটা কি?


ঢাকাটাইমস : আরও বিস্তারিত বলুন


অরুণ গুহ মজুমদার : বোয়ালমারী উপজেলার প্রণব কুমার মুখার্জি ও তার পরিবার বহু বছর ধরে আমাদের অনুমতি নিয়েই বাড়ি করে বসবাস করছিল। আসলে আমি এই পরিবারকে থাকার অনুমতি দিয়েছিলাম যাতে অন্য কেউ ঢুকে না পড়ে সেই চিন্তা থেকেও। তো সত্যজিত জানতে চাইছিল, আমি প্রণবদের কাছে জায়গা বিক্রি করেছি কি-না। যে দু’তিনবার কথা হয়েছে তাতে আমি পরিষ্কারই বলেছি না প্রণব আমাদের কাছ থেকে জায়গা কেনেননি। অনুমিত দখলদারমাত্র।


ঢাকাটাইমস : কিন্তু সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকে তো কেউ কেউ প্রচার করেছেন, সত্যজিত আপনার বাড়ি দখলের বিরোধিতা করায় মন্ত্রী তাকে বরখাস্ত করেছেন


অরুণ গুহ মজুমদার : ফেসবুক কি আমি বুঝি না। তবে আমার মেয়ে এটা বোঝে। ওর কাছে শুনেছি এ কথা। আমরা পরিবারে এই আলোচনা করছি, মিথ্যাচারেরও একটা সীমা থাকে। আমি পুরনো বাড়িটি বিক্রি করেছি। দখলের প্রশ্ন আসছে কোত্থেকে? আর দখলের বিরোধিতার তো প্রশ্নও ওঠেনা। ফরিদপুরের আরও অনেকের মতো আমিও জানি, সত্যজিতকে অনিয়ম, দুর্নীতির কারণে মন্ত্রী মহোদয় বরখাস্ত করেছেন। বাদ দিয়েছেন। সস্তা প্রচারের জন্য আমার বাড়ি বিক্রির সঙ্গে সত্যজিতের চাকরি যাওয়ার বিষয় মেলানো অবান্তর। সত্যজিত যদি এটা বলে থাকে তাহলে এটা হীনস্বার্থে করেছে। এখানে অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে।


ঢাকাটাইমস : ফরিদপুরের অন্য কোনো সাংবাদিক আপনার পুরনো বাড়ি নিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলেছে কখনো?


অরুণ গুহ মজুমদার : না। কেউ আমায় কিছু বলেনি। আমিও কাউকে কখনো কিছু বলিনি।


ঢাকাটাইমস : সাংবাদিক প্রবীর শিকদার?


অরুণ গুহ মজুমদার : নাম শুনেছি। ফরিদপুরে বাড়ি এটাও শুনেছি। কখনো আমার সঙ্গে কথা হয়নি। আমার স্ত্রী, কন্যার সঙ্গেও তার কখনো কথা হয়নি।


ঢাকাটাইমস : ফরিদপুরের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কোন নেতার সাথে বাড়ি কেনা-বেচা নিয়ে কখনো কোনো কথা হয়েছে? কাউকে কখনো কোনো অভিযোগ করেছেন?


অরুণ গুহ মজুমদার : না। ফরিদপুরের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কোনো নেতার সাথে আমার যোগাযোগই নেই। বাড়ি বিক্রি নিয়ে তাদের কারো সাথে কখনোই কোনো আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না।


ঢাকাটাইমস : চাপে পড়ে কোন কিছু বলছেন কি-না?


অরুণ গুহ মজুমদার : প্রশ্নই ওঠে না। আপনারা অনেক কিছুই জানেন না। তাই সস্তা প্রচার, অপপ্রচারকে গুরুত্ব দিয়ে ঘুরেফিরে একই প্রশ্ন করছেন। মোশাররফ ভাই ও ওই পরিবারের সাথে আমাদের আত্মার সম্পর্ক। ধমক, চাপ, হুমকি এসব আমরা কেউ কখনো চিন্তাও করি না, ওনারাও করেন না।


একটা ঘটনার কথা বলি। তখন নুরু চাচা (খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পিতা) বেঁচে আছেন। আমার স্ত্রী ইলেকট্রিক হিটারের চুলায় রান্না করতেন। কিভাবে যেন বিদ্যুৎ বিভাগের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে খবর গেছে। ম্যাজিস্ট্রেট গাড়ি নিয়ে, লোকজন নিয়ে হাজির। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। আমার স্ত্রী দৌড়ে গেলেন নুরু চাচার বাড়িতে, উনি তখন ভাত খাচ্ছেন। সব শুনে ভাত হাতেই ছুটে এলেন। ম্যাজিস্ট্রেটকে বললেন, এ আমার মেয়ে। এর বিরুদ্ধে মামলা হলে আমরা কিন্তু বসে থাকবো না! ম্যাজিস্ট্রেট যা বোঝার বুঝে গেলেন। ইলেকট্রিক হিটার ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়ে ফেরত গেলেন। আমার মেযের ডাক নাম বন্যা। এটাও নুরু চাচার দেওয়া। আমার মেয়ের বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছে। এই কদিন আগেও এক পাত্রের সন্ধান দিয়েছেন মোশাররফ ভাইয়ের এক বোন।


দুই পরিবারের সম্পর্ক সুগভীর। টাকার প্রয়োজনে জায়গা বিক্রি করেছি। নায্যমূল্য পেয়েছি। বুঝেশুনেই মোশাররফ ভাইকে প্রস্তাব দিয়েছি। যারা অপপ্রচার করছেন, তারা কারো কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়েছেন বলে মনে করি। এটা ঠিক হয়নি।


ঢাকাটাইমস : হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক যে অভিযোগ তুলেছেন তার সত্যতা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসনতদন্ত কমিটি হয়েছে


অরুন গুহ মজুমদার : আমার জায়গা, আমার বাড়ি। আমি তো কোনো অভিযোগ করিনি। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কোথায় পেল এই আজগুবি তথ্য! জেলা প্রশাসন তদন্ত করে যে সত্য পাবে তা তো প্রমাণ হবে আমি পুরনো বাড়িটি বিক্রি করেছি। লেনদেন হয়েছে। কিন্তু হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ তো একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এই সংগঠন এভাবে যা খুশি তাই অভিযোগ করতে পারে? এটা কি কারো স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যে? ওই সংগঠনের অপপ্রচারের কারণে যে মোশাররফ ভাইয়ের মতো একজন সুনামধারী রাজনীতিক, মন্ত্রীর সুনাম বিনষ্টের চেষ্টা করল কিছু লোক, তার কি হবে? কারো মিথ্যা তথ্যে প্ররোচিত হয়ে এভাবে বলাটা মোটেও উচিত হয়নি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের। কেউ এমন তথ্য দিলে তাদের উচিত ছিল, তা ভালোভাবে যাচাই করা


আর বলা হলো, অরুণ গুহ মজুমদার কোনদিন ভারতে যাননি, আর এখন চলে গেলেন? কে বলেছে আমি কোনদিন ভারতে যাইনি। বেশ কয়েকবার গিয়েছি। অন্তত ৫ বার গিয়েছি। যিনি বা যারা আমার হীতাকাক্সক্ষী সাজতে চাইছেন, কোনদিন কি তিনি বা তাদের সংগঠন আমার কোন কাজে পাশে ছিলেন? সস্তা প্রচারের উদ্দেশ্যে আমার বিক্রি করা পুরনো বাড়ি দখল হয়ে যাওয়ার কল্পকাহিনি প্রচার করলেন তারা কি কাজটা ভালো করলেন? তারা কি উস্কে দিতে চাইলেন? ঘোলাজলে আসলে কি শিকারের উদ্দেশ্য আছে? এই প্রশ্নই করতে চাই।


ঢাকাটাইমস : ফরিদপুরে আপনার অন্য সম্পত্তি আছে?


অরুণ গুহ মজুমদার : আগেই বলেছি, রাজেন্দ্র কলেজের মূল গেটের বিপরীতে জমি আছে। সেখানে নতুন করে বাড়ি করব। ভাজনডাঙ্গায়ও জমি আছে। ওই জমি নিয়ে এখনো মামলা মোকদ্দোমা চলছে।


ঢাকাটাইমস : তাহলে বাংলাদেশে থাকবেন? ভারতে পাকাপাকিভাবে যাবেন না?


অরুণ গুহ মজুমদার : বাংলাদেশ আমার দেশ। ছিলাম, আছি, থাকব। যারা আমাকে নিয়ে এসব অপপ্রচার চালিয়েছেন তারা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে করেছেন। ভারতে বসবাসের প্রশ্ন যারা তুলেছেন তারা কোনো মতলব এটেছিলেন বলেই এভাবে প্রচারের চেষ্টা করেছেন। একটি কথা বলতে চাই, আমার দাদু সতীশ চন্দ্র মজুমদার ফরিদুরের প্রথম পৌরসভা চেয়ারম্যান। তিনি ফরিদপুর শহরের সেরা আইনজীবি ছিলেন তার আমলে। আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য আছে। আমরা ভেসে আসিনি, আমাদের নিয়ে এসব অপপ্রচারের মানে কি? আমরা যা খুশি তাই বলতে শিখিনি। মিডিয়ার কাছে অনুরোধ, যারা এসব অপ্রচারের চেষ্টা চালিয়েছে দয়া করে তাদের খোঁজ করুক। তাদের উদ্দেশ্য বের করার চেষ্টা করুন।


আমার মেয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্কিওলজিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছে। বরোদার এম এস বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো এম.ফিল করার জন্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার ইচ্ছে ওর। জাহাঙ্গীরনগরে সার্কুলার হলেই সে আবেদন করবে। আমরা এসব নিয়ে ভাবছি।


ঢাকাটাইমস : আর কিছু বলার আছে?


অরুণ গুহ মজুমদার : আর কি বলবো? শুধু বলতে চাই জ্ঞানী লোকেরা কেন প্ররোচিত হবেন? সুক্ষ্মভাবে একটি গোষ্ঠী, অপ্রচার করে সাময়িক ফায়দা নিতে চাইলো। এমন যেন না হয় আর।


সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: হাবিবুল্লাহ ফাহাদ


অসত্য তথ্য: রানা দাশগুপ্তের দুঃখ প্রকাশ করা উচিত


অসত্য তথ্য উপস্থাপন করা মানহানিকর