বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয়েছে ভারতীয় পণ্য প্রদর্শনী ‘ইন্ডিয়া ইনভেসট্রেড ২০১৫’। বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির সহযোগিতায় ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের উদ্যোগে (আইসিসি) প্রায় চার বছর পর দ্বিতীয় বারের মতো শুরু হওয়া মেলায় ভারতের উদ্যোক্তাদের তৈরি জ্বালানি, বৈদ্যুতিক পণ্য ও সরঞ্জাম, শিল্প যন্ত্রপাতি প্রদর্শিত হচ্ছে। মেলা আয়োজনের বিভিন্ন দিকে নিয়ে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাথে কথা বলেছেন ইন্ডিয়া ইনভেসট্রেডের চেয়ারম্যান নয়ন তারা পাল চৌধুরী। সাক্ষাৎকার নিয়েছে সৈয়দ বাকের। তার সাথে আলাপচারিতার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হল।
ঢাকাটাইমস:এ ধরনের মেলার সুফল কি হতে পারে?
নয়ন তারা: আইসিসি (ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স) থেকে আমরা প্রায়ই এ রকম কনফারেন্স কাম এক্সপোজিশনের আয়োজন করি। এটা সেক্টর স্পেসিফিক, এখানে কয়েকটা সেক্টর পার্টিসিপেট করছে। এই ইন্টার অ্যাকশনটা করলেই দুদেশের মধ্যে ট্রেড অ্যান্ড কমার্স বাড়বে।
ঢাকাটাইমস: এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এ মেলা আয়োজন করা হয়েছে, তাও প্রায় চার বছর পর।
নয়ন তারা: এবার আমরা দেখব কি রকম ফিডব্যাক পাই, বিটুবির ক্ষেত্রে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন কিছুদিন আগে, মুখ্যমন্ত্রী দুবার এসেছেন, এখন দুদিকেই একটা পজিটিভ অ্যাটমোসফেয়ার আছে। আমরা খুব সহযোগিতা পাচ্ছি। এ সুযোগটাতো কাজে লাগাতে হবে। আমাদের এসএমইগুলোকে এনে তাদের সাপোর্ট দেয়া যেতে পারে।
ঢাকাটাইমস: এর দ্বারা বাংলাদেশের মানুষ কিভাবে লাভবান হবে-
নয়ন তারা: এখানে বায়ার-সেলার মিট হচ্ছে। আপনারা যেমন আমাদের পণ্য দেখতে পারবেন, তেমনি আমরাও আপনাদের চাহিদা সম্পর্কে জানতে পারবো। আমাদের সহযোগিতা করছে ঢাকা চেম্বার এবং এফবিসিসিআই (বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি)। মূল বিষয় হচ্ছে, ইজ অব ডুং বিজনেস, হাউ টু মেক বিজনেস মোর ইজিয়ার। সহজ সরলভাবে আমাদের ব্যবসা করতে হবে। একটা ব্যবসা করতে গেলে কত ধরনে সার্টিফিকেটেশন ফরম পূরণ করতে হয়, এগুলোর একেকটা প্রায় একশ পৃষ্ঠা ছিল। আমরা সেগুলোকে সাত-আট পৃষ্ঠায় নামিয়ে এনেছি, অনলাইন অ্যাপ্লাই করা যাচ্ছে, এটাই ইজ অব ডুয়িং বিজনেস।
এছাড়া ইন্দোবাংলা বর্ডারে ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নয়ন, ওয়ারহাউজ, কোল্ড স্টোরেজ, টেস্টিং ল্যাব স্থাপন করে আমাদের এগোতে হবে।
ঢাকাটাইমস: মেলার অন্যান্য উদ্দেশ্য যেমন বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্ভাব্যতা যাচাই করা এবং এর সাথে সম্পর্কিত বিষয় সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জানতে চাইছি-
নয়ন তারা: সেক্টর ওয়াইজ যা হয়েছে, তা থাক। এখন নতুন ইন্ডাস্ট্রি যেমন টেলিকমিউনিকেশন, অ্যাগ্রো ফুড প্রসেসিং হাই অ্যান্ড আইডেন্টিফাই করতে হবে। এখন যেসব ইকোনমিক জোনগুলো হচ্ছে সেখানে নতুন নতুন কি অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তা দুদেশ বসে ঠিক করতে হবে। অনেক নতুন স্কোপ আছে, যেমন হাই এন্ড, হাইটেক ইত্যাদি। আমাদের লোকশনের সুবিধা নিতে হবে। দুদেশের ভাষা এক, সব এক। এখন দুদেশ সম্পর্কে ধারণা দুদিকেই ইতিবাচক। সীমান্ত চুক্তি হলো, সব মিলিয়ে দুদেশের সম্পর্কটা খুবই ভালো অবস্থানে আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বলেছেন আমারা সাথ সাথ চলব। আমি বলব আমরা সাথে সাথে চলি।
ঢাকাটাইমস: মেলায় পণ্য প্রর্দশনী ছাড়া আর কি সুযোগ তৈরি হয়।
নয়ন তারা: ইন্ডিয়ান চেম্বার মহিলা উইংয়ের সাথে আপনাদের মহিলা চেম্বারের সমঝোতা সই হয়েছে। এর মাধ্যমে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে। নতুন নতুন প্রোডাক্ট বের করা যায়, যেন আমরা যাই করি তা যেন বিশ্ববাজারে গ্রহণযোগ্যতা পায়। এছাড়া দুদেশের যারা অল্প শিক্ষিত তাদের ট্রেনিং দিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা যায়। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আমরা অবহেলা করতে পারি না। এসব আয়োজনে একটা নেটওয়ার্কিং অপরচুনিটি তৈরি হয়। আমি কতজনের সাথে পরিচিত হলাম।
ঢাকাটাইমস: এজন্য ঢাকার বাইরে এধরনের মেলা আয়োজনের কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা-
নয়নতারা: ব্যাপারটা নিয়ে আমরা ভাবছি। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহীতে করার পরিকল্পনা আমরা রাখছি। তবে সেটা নির্ভর করছে আমরা এখানে কি ফিডব্যাক পাচ্ছি তার উপর।
ঢাকাটাইমস: দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে আর কী কী করা দরকার-
নয়ন তারা: আফটার অল আমাদের এত লম্বা একটা বর্ডার, আমরা হচ্ছি ন্যাচারাল ট্রেড পার্টনার। আমাদের ন্যাচারাল রিসোর্চেস আছে, ন্যাচারালি উই হেভ মিট টু ডু ট্রেড অ্যান্ড কমার্স। কিন্তু আমাদের বর্ডার স্টেশনগুলো আপগ্রেড না করে ট্রেড অ্যান্ড কমার্স বাড়াতে অসুবিধা হচ্ছে, এটা দুদিকেই। শুধু পেট্রাপোল না হিলি, বেনাপোল ইত্যাদি জায়গায় রাস্তাঘাট; সব থেকে যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো স্ট্যান্ডার্ডগুলো ঠিক করা। আমাদের দেশে কিছু অ্যাডাল্ট-চাইল্ড সেফটি অ্যাক্ট এসেছে, সে অনুযায়ী টেস্টিং স্ট্যান্ডার্ড ঠিক করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আমরা দুদেশের মানুষ উৎসাহী কিন্তু ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ওয়ারহাউজ, কোল্ড স্টোরেজ ডেভেলপ করলেই ট্রেড-কমার্স বাড়বে। দুদেশের সরকারকে একসাথে বসে তাড়াতাড়ি এগুলো ঠিক করতে হবে।
আপনাদের শিলমন্ত্রী আমাদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন। কোথায় কী সমস্যা আছে সে নিয়ে ওয়ান্টু ওয়ান ইন্টারঅ্যাকশন হবে, বিটুবি মিটিং হবে, কিভাবে সমস্যাগুলো তাড়াতাড়ি সমাধান করা যায়, এটাই মূল উদ্দেশ্য। এটা সেক্টর ওয়াইজ করা হয়, যাতে কয়েক মাস পরে অন্য আরেকটি সেক্টর নিয়ে হবে, সব একসাথে সমুদ্রের মতো করে তো লাভ নেই।
ঢাকাটাইমস: আপনাকে ধন্যবাদ
নয়ন তারা: আপনাকেও ধন্যবাদ।
(ঢাকাটাইমস/৬আগস্ট/এসবি/এমএম