ঢাকা: দুটি মন্ত্রণালয় ও তিনটি কমিশন মিলিয়ে পাঁচটি সচিব পদ বেশ কিছুদিন ধরে খালি রয়েছে। কর্মকর্তারা অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ায় এই পদগুলো শূন্য হয়েছে। শূন্য পদে নিয়োগ পাওয়ার মতো কর্মকর্তার কমতি না থাকলেও এখনও পদগুলো পূরণ করা হচ্ছে না।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সাধারণত সচিব পদ খালি হওয়ার দু-একদিনের মধ্যেই নতুন সচিব নিয়োগ দেয়া হয়। অথচ মাসের পর মাস পাঁচটি সচিব পদ খালি পরে থাকলেও তার পুরণ হচ্ছে না। এনিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে নানা গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, বর্তমানের সরকারের রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি আনুগত্যশীল কর্মকর্তা বাছাইয়ে সময় নেয়া হচ্ছে। তাছাড়া সচিব পদে নিয়োগ পেতে বিভিন্নমুখী দৌড়ঝাঁপও চলছে। কৌশলগত কারণেই নিয়োগ চূড়ান্ত করতে সময় নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরকারের নীতি নির্ধারণী একটি সূত্র ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছে, সচিব পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রস্তাব তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সাধারণত প্রস্তাব পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে কিংবা পরদিন এগুলোতে প্রধানমন্ত্রী সই করে থাকেন। অথচ পাঁচটি শূন্য পদে সচিব নিয়োগে এবারই ব্যতিক্রম হচ্ছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন এ মাসের শুরুতে। তিনি নতুন কর্মক্ষেত্রে যোগ দিলেও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদটি শূন্যই রয়ে গেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র জানায়, ভূমি সচিব পদে খাদ্য সচিব মুশফেকা ইকফাৎ ও মো. আব্দুর রব হাওলাদারের নাম শোনা যাচ্ছে। এই দুই কর্মকর্তাই প্রশাসনে ৮২ ব্যাচের সদস্য। এর মধ্যে আব্দুর রব হাওলাদার ৮২ ব্যাচের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব। বর্তমানে তিনি ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান। মুশফেকা ইকফাৎ ২০১২ সালের ২৪ মে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে খাদ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্ব পান। পরের বছরের ৩১ জানুয়ারি তাকে সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষে গত ১৫ নভেম্বর বিদায় নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব নূর মোহাম্মদ। সাবেক এই পুলিশ প্রধানের পর তার জায়গায় কে আসছেন তা এখনও জানা যায়নি। তবে প্রশাসনে একটি সূত্র জানায়, যুব ও ক্রীড়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনোয়ারুল করিমকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব করা হতে পারে। তবে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়।
সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. শাহজাহান আলী মোল্লা অবসরে গেছেন গত ৩১ অক্টোবর। তার পর মাস কেটে গেলেও তার জায়গায় কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। গত ২১ অক্টোবর অবসরে গেছেন প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সদস্য পরিক্ষিৎ দত্ত চৌধুরী। তার পর থেকে এখনও শূন্য আছে পদটি। পরিকল্পনা কমিশনের সচিব আরাস্তু খান গত ২০ নভেম্বর গেছেন অবসরে। সেই থেকে খালি আছে পদটি। তবে এ পদে নিয়োগ পেতে নানামুখী দৌড়ঝাঁপও চলছে বলে জানা গেছে।
তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘শূন্য পদে সচিব নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি সম্মতি দিলে যেকোনো সময়ই নিয়োগ চূড়ান্ত হবে।’ পাশাপাশি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব শফিক আলম মেহেদী এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম খান দুজনেরই আগামী ৩০ নভেম্বর একই দিনে অবসরোত্তর ছুটিতে যাচ্ছেন। তাদের পদগুলোকেও শূন্য ধরে নতুন পদায়নের চিন্তা চলছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। এর মধ্যে নৌ সচিব শফিক আলম মেহেদীর অবসরোত্তর ছুটি বাতিল করে পিএসসির সদস্য করা হতে পারে বলে সরকারের নীতি নির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে।
(ঢাকাটাইমস/ ২৭ নভেম্বর/ এইচএফ/ এইচআর/ এআর/ঘ.)