ঢাকা: রাজধানীতে বড় ভূমিকম্প হলে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয় দিতে রাজধানীতে ১৩টি খোলা জায়গা নির্ধারণ করেছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে আছে গে-ারিয়া ও আজিমপুর কবরস্থান এবং ওয়ারির ওল্ড খ্রিশ্চিয়ান সিমেট্রি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব এলাকায় পরিবার প্রতি ৪৫ বর্গ মিটার হিসেবে উন্মুক্তস্থানে আশ্রয় দেওয়া যাবে।
ফায়ার সার্ভিস যেসব জায়গা চিহ্নিত করেছে তাতে আশ্রয় পাবে ৫০ হাজার ৬৪০টি। আনুমানিক হিসাবে আশ্রয় হবে দুই লাখ ৪৩ হাজার ৭২ জনের।
আহতদের চিকিৎসার জন্য সরকারি বেসরকারি ৩২ টি হাসপাতালকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া জাইকা তেজগাঁও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
গত ছয় মাসে রাজধানীতে মাঝারি আকারের অন্তত দুটি ভূমিকম্প আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউএসজিএস বাংলাদেশ ও আশেপাশের অঞ্চলে মাঝারি থেকে বড় আকারের একাধিক ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিয়েছে। আগামী মে মাসের মধ্যেই এই দুর্যোগ আসতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। এ কারণে ফায়ার সার্ভিসও আগেভাগে কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ সেরে রাখছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ঢাকার সহকারী পরিচারক মাসুদুর রহমান আকন্দ ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘বড় ধরনের দুর্যোগ হলে ৫০ শতাংশ পরিবার হয়ত তাদের আত্মীয়, বন্ধু বা ভাড়া বাড়িতে আশ্রয় নেবে। বাকিদের জন্য হয়ত আশ্রয়ের প্রয়োজন হবে। এ ক্ষেত্রে জনপ্রতি ৪৫ বর্গ মিটার জায়গার প্রয়োজন। ঢাকা শহরে পরিবার প্রতি জনসংখ্যা গড়ে ৪.৮ জন। সেই হিসেবে তাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা আগে থেকেই করা জরুরি’।
আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হবে যেসব খোলা জায়গা
ফায়ার সার্ভিস যে ১৩টি জায়গা নির্ধারণ করেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো সংসদ ভবন মাঠ। এখানে আট লাখ নয় হাজার ৬৩৯ বর্গ মিটারে ১৭ হাজার ৯৯৫টি পরিবারকে আশ্রয় দেয়া যাবে। এছাড়া রমনা পার্ক ও সোহওরার্দী উদ্যানে ছয় লাখ ৭৭ হাজার ২৪৪ বর্গ মিটার জায়গায় ১৫ হাজার ৫০ টি পরিবার আশ্রয় পাবে। এছাড়া ওসমানী উদ্যানের ৮১ হাজার ৫০৯ বর্গ মিটার জায়গায় এক হাজার ৮১০টি পরিবার এবং গুলশান পার্কের ৩১ হাজার ১৩২ বর্গ মিটারে ৬৯০ টি পরিবার আশ্রয় পাবে।
আশ্রয় দেয়া হবে আবাহনী খেলার মাঠেও। এখানে এক লাখ ১৯ হাজার ৭১৫ বর্গ মিটারে দুই হাজার ৬৬০ টি পরিবারের ঠাঁই হবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট (সায়েন্স ল্যাব) মাঠের এক লাখ ৪৫ হাজার ৭৯ বর্গ মিটারে তিন হাজার ২২৫ টি, লালবাগ শাহী মসজিদ মাঠে ৬০ হাজার ২৬৫ বর্গ মিটারে এক হাজার ৩৪০ টি, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আল-মদিনা জামে মসজিদ মাঠের ৩২ হাজার ৬০১ বর্গ মিটারে ৭২৫ টি এবং বায়তুল্লাহ মৌজার ৪৪ হাজার ৫৪ বর্গ মিটারে ৯৮০ টি পরিবার আশ্রয় পাবে।
বনানী ক্যাথলিক চার্চের ২৫ হাজার ১২৫ বর্গ মিটারে ৫৬০ টি পরিবারকে আশ্রয় দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
যে চারটি কবরস্থানে আশ্রয়কেন্দ্র হবে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ জায়গা পাবে আজিমপুরে। এখানে এক লাখ ২৮ হাজার ২৪৫ বর্গ মিটার জায়গায় দুই হাজার ৮৫০ টি পরিবার আশ্রয় পাবে। পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া কবরস্থানের ৬৪ হাজার ১৫৭ বর্গ মিটারে এক হাজার ৪২৫ টি, ওল্ড খ্রিশ্চিয়ান সিমেট্রিতে ৫৯ হাজার ৮৩৬ বর্গ মিটারে এক হাজার ৩৩০টি পরিবার আশ্রয় পাবে।
(ঢাকাটাইমস/১৪জানুয়ারি/এএ/ডব্লিউবি)