ঢাকা: ঘুম ভালো না হলে নানাভাবে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে শরীরে। রাতে ছয় থেকে আট ঘণ্টার ঘুমকে একজন সুস্থ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য আদর্শ ধরা হয়। দীর্ঘদিন এর অনিয়ম চলতে থাকলে হৃদরোগ, স্ট্রোক কিংবা ডায়াবেটিসের মতো রোগ দেখা দিতে পারে। আধুনিকায়নের সঙ্গে সঙ্গে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং ল্যাপটপ নিঃসন্দেহে ঘুমের ১২টা বাজাচ্ছে।
জানেন কি, ভালো ঘুমের জন্য কার্যকরী কুমড়ার বিচি থেকে ডাবের পানি কিংবা চেরি ফল। এমন কিছু পুষ্টি উপাদান এবং খাবার যেগুলো ভালো ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় তার একটি তালিকা দেয়া হলো।
বিশেষজ্ঞরা এমন কিছু খাবারের তালিকা দিয়েছে, যা ভালো ঘুমের জন্য প্রতি রাতে অবশ্যই পরখ করে দেখতে পারেন।
কার্বোহাইড্রেট: ওটস, লাল চাল ইত্যাদি দিয়ে তৈরি খাবার রাখুন রাতের মেনুতে। এসব খাদ্য উপাদান শরীরে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে এবং পর্যাপ্ত শক্তি দেয়। হয়তো আপনি মনে করছেন, জেগে থাকার জন্য বেশি শক্তি প্রয়োজন। কিন্তু ঘুমের সময়ও আপনার মস্তিষ্কে শক্তি প্রয়োজন। যদি মানবদেহে এই খাদ্য উপাদানের ঘাটতি হয়, তাহলে অ্যারেনালিন এবং ক্যারটিসল হরমোনের উৎপাদন বেড়ে যায়। এসব হরমোন জাগিয়ে রাখতে সাহায্য করে, ফলে ব্যক্তির ঘুম আসে না।
আমিষ: মাছ, মাংস, শিমের বিচি, বাদাম ইত্যাদি উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারও ভালো ঘুমের জন্য প্রয়োজন। আমিষ সমৃদ্ধ খাবারে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, ট্রাইটোপহান যা পরবর্তীতে সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিন হরমোনে রূপান্তরিত হয়। ভালো ঘুমের জন্য বিশেষ ভাবে প্রয়োজন মেলাটোনিন হরমোন। শরীরের ওজন অনুযায়ী, প্রতিদিন নির্দিষ্ট মাত্রায় আমিষ গ্রহণ করতে হবে। এই যেমন যদি কোন নারীর ওজন হয় ৫০ কেজি, তাহলে দৈনিক ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম ওজন গ্রহণ করতে হবে। তবে ঘুমাতে যাওয়ার কয়েকঘণ্টা আগে বেশি মাত্রায় আমিষ গ্রহণ উচিত নয়। কারণ এগুলো হজমে অনেক সময় প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ভালো ঘুমের পরিবর্তে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাবে আমিষ জাতীয় খাবার।
কুমড়ার বিচি: রাতে ঘুমের সমস্যায় কুমড়ার বিচি হতে পারে সেরা ঔষধ। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম। পেশিকে কোমল করে ম্যাগনেসিয়াম। প্রতিদিন এক থেকে দুই চামচ কুমড়ার বিচির সঙ্গে দই মিশিয়ে খেয়ে নিন।
ডাবের পানি: রাতে নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমের জন্য এক গ্লাস ডাবের পানিই যথেষ্ঠ। ইলেক্ট্রলাইট মিনারেল যেমন পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং সোডিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হলো ডাবের পানি। পেশি এবং নার্ভের কর্মক্ষমতা ধরে রাখতে ও শরীরকে আর্দ্র রাখতে এই পানীয়র বিকল্প নেই। দেহে ইলেক্ট্রলাইট মিনারেলের ঘাটতি হলে পেশিতে সংকোচন এবং রাতে পায়ে ব্যথা হয়। যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
চেরি: আগেই বলেছি ভালো ঘুমের জন্য মেলাটোনিন হরমোনের বিকল্প নেই। চেরিতে রয়েছে সামান্য পরিমাণে এই হরমোন।
জিঙ্ক: জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে ঝিনুক, সামুদ্রিক মাছ এবং বাদাম। ট্রাইটোপহানকে সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিন হরমোনে পরিণত করতে প্রয়োজন জিঙ্ক।
(ঢাকাটাইমস/২৫মার্চ/জেএস)