ঢাকা: আমাদের দেশের দারুণ জনপ্রিয় ফল বেল। অন্যান্য ফলের তুলনায় এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কোনো অংশে কম নয়। গরমের দিনে এক গ্লাস বেলের শরবত শরীর ও মনে তৃপ্তি যোগায়। বেল পেটের নানা রকম রোগ সারাতে জাদুর মতো কাজ করে, কাঁচা বেল ডায়রিয়া ও আমাশায় রোগে অব্যর্থ ওষুধ হিসাবে বিবেচিত। প্রচন্ড গরমে শরীর ও মন দুটোই ভালো রাখতে পান করতে পারেন এক গ্লাস বেলের শরবত।
বেলের শরবত বানাতে যা লাগবে:
পাকা বেল একটি, ঠান্ডা পানি ৩ কাপ, দুধ আধাকাপ, চিনি এবং বরফকুচি প্রয়োজনমত
পাকা বেল ভেঙ্গে কুরিয়ে নিতে হবে। তারপর বিচি বেছে ফেলতে হবে অথবা চালুনি দিয়ে চেলে নিতে পারেন। বিচিসহ ব্লেন্ড করলে শরবত তিতা হয়ে যেতে পারে। সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে বরফকুচি দিয়ে পরিবেশন করেন।
প্রতি ১০০ গ্রাম বেলে রয়েছে:
পানি ৫৪.৯৬-৬১.৫ গ্রাম; প্রোটিন- ১.৮-২.৬২ গ্রাম; স্নেহ ০.২-০.৩৯ গ্রাম; শর্করা ২৮.১১- ৩১.৮ গ্রাম; ক্যারোটিন ৫৫ মিলি গ্রাম; থায়ামিন ০.১৩ মিলিগ্রাম; রিবোফ্লোবিন ১.১৯ মিলিগ্রাম; এসকরবিক এসিড ৮-৬০ মিলিগ্রাম; নিয়াসিন ১.১ মিলিগ্রাম; টারটারিক এসিড ২.১১ মিলিগ্রাম।
বেলের উপকারিতা:
> বেলের পুষ্টিগুন অন্যান্য ফলের চেয়ে অত্যন্ত বেশি। বেলের শরবত কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে। বেলের শরবত খেলে পেট ঠাণ্ডা রাখে। পাইলস, অ্যানাল ফিস্টুলা, হেমোরয়েডের মতো মলদ্বারের রোগ রয়েছে, এমন রোগীদের জন্য বেল উপকারী ফল।
> প্রতিদিন বেলের শরবত পানে ক্লান্তি দূর হয় । বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতিদিনের শারীরিক পরিশ্রেমের পর একগ্লাস বেলের শরবত সারাদিনের ক্লান্তি প্রশমন করে।
> বেলে আছে ভিটামিন সি । ভিটামিন সি গ্রীষ্মকালীন বহু রোগ বালাই দূরে রাখে।
> বেলে আছে ভিটামিন এ। যা চোখের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোর পুষ্টি যোগায়। ফলে চোখের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
> সর্দি হলে বেল পাতার রস ১ চামচ খেলে সর্দি আর জ্বর ভাব কেটে যায়।
>নিয়মিত বেল খেলে কোলন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
> কচি বেল টুকরা করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিলে তাকে বেলশুট বলে। যাদের আলসার আছে তারা বেলশুটের সঙ্গে পরিমান মতো বার্লি মিশিয়ে রান্না করে নিয়মিত খেলে আলসার দ্রুত সেরে যায়।
> বেল মুখের ব্রণ সারাতে সাহায্য করে।
> শিশুদের কানের ব্যাথা ও সংক্রামন সারাতে বেল পাতার জুড়ি নেই। বেল পাতা ও তিলের তেল জ্বাল দিয়ে ওই তেল ড্রপার দিয়ে কানে দিলে ব্যাথা সেরে যায়।
> জন্ডিসের সময় পাকা বেল গোল মরিচের সঙ্গে শরবত করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
> বেলের শাঁস পিচ্ছিল ধরনের। এমন হওয়ার কারনে এই ফল পাকস্থলীতে উপকারি পরিবেশ সৃষ্টি করে। খাবার সঠিক ভাবে হজম করতে সাহায্য করে। ফলে কোষ্ট কাঠিন্য দূর হয়।
(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/জেএস)