নিউ ইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়
ব্যর্থ হলে অরাজকতার দিকে যাবে বাংলাদেশ
ঢাকাটাইমস ডেস্ক
০৯ মে, ২০১৬ ১৭:৩৩:০৫

ঢাকা: ‘গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা ও আইনের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে’ ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ দ্রুতই অরাজকতার (Lawlessness) দিকে চলে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক সম্পাদকীয়তে।
‘বাংলাদেশ’জ ডিসেন্ট ইনটু ললেসনেস’ শীর্ষক ওই সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ২০১৩ সাল থেকে কমপক্ষে ২০ জনকে হত্যা করেছে ইসলামি উগ্রপন্থীরা। বেশির ভাগকেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত মাসে মাত্র নয় দিনের মধ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে পাঁচজনকে।
এ অবস্থার জন্য অনেকাংশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার, বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে দায়ী করা হয়েছে সম্পাদকীয়তে।
তাতে বলা হয়, “ব্যাপক সহিংসতা ও বিরোধীদের বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল। ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের জন্য ২০১০ সালে গঠন করা হয় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এ আদালত সরকারের রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে টার্গেট করা হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের। এর সঙ্গে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন ও গুম যোগ হয়েছে। এসব কিছু আইনের শাসনের ওপর যে আস্থা, তা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।”
সম্পাদকীয়তে বলা হয়, “ইতিমধ্যে মতপ্রকাশ ও প্রেসের স্বাধীনতাকে দমন করেছে সরকার। গত মাসে নাস্তিক ব্লগারদের নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যদি কেউ আমাদের নবী (স.) ও অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু লেখে তাহলে তা মোটেও সহ্য করা হবে না।”
এ সবকিছুই উগ্রপন্থার শক্তি বৃদ্ধি করছে উল্লেখ করে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়তে বলা হয়, “ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ সতর্ক করেছে, কঠোর পদক্ষেপের কারণে সরকারের বৈধতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় সুবিধা পাচ্ছে সহিংস দলগুলোর শাখা ও উগ্রপন্থী গ্রুপগুলো। এর মধ্যে রয়েছে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ। আছে ইসলামিক স্টেট। যদিও সরকার বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেটের উপস্থিতি কথা অস্বীকার করেছে।
“গত ২৫ এপ্রিল হত্যা করা হয়েছে এলজিবিটি অধিকারকর্মী ও ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের কর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার এক বন্ধুকে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের উদ্দীপনা ও গর্ব, যার জন্য তারা সহনশীলতা, শান্তি ও বহুত্ববাদের রীতি চর্চা করেন, তা বহন করতেন জুলহাজ মান্নান। এসব হত্যাকাণ্ডের তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন প্রস্তাব করেন জন কেরি।
এ সমর্থনকে স্বাগত জানানো উচিত শেখ হাসিনার সরকারের।”
(ঢাকাটাইমস/৯মে/মোআ)