logo ২০ এপ্রিল ২০২৫
গুরু দণ্ড পেতে পারে ইবাইস ইউনিভার্সিটিও
মহিউদ্দিন মাহী, ঢাকাটাইমস
৩১ জুলাই, ২০১৬ ০৮:৪১:৩৯
image



ঢাকা: সনদ বিক্রিসহ নানা অনিয়মের দায়ে এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দারুণ ইহসান। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির সূত্র বলছে, মালিকানা দ্বন্দ্বে গুরু দণ্ড পেতে যাচ্ছে আরও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এর নাম ইবাইস ইউনিভার্সিটি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।






গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি বন্ধের আদেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে মালিকানা দ্বন্দ্ব ও সনদ বাণিজ্যের অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের।






একই ধরনের অভিযোগ আছে ইবাইসের বিরুদ্ধেও। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা নিয়ে মামলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন জাকারিয়া লিংকন। তিনি ২০০২ সালের ৬ আগস্ট ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় ইবাইসের অস্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপন করে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করেন। প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ডও গঠন করেন। সেখানে ট্রাস্টি হিসেবে তার ভাই কাওসার হোসেন কমেটের নামও ছিল। ২০১১ সালের শেষের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টি দখলে নেন কাওসার হোসেন কমেট। তার সঙ্গে দেশের একজন শিল্পপতির ছেলেও যুক্ত হন। এরপর দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে।






ইউজিসির আইন শাখার এক কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে জানান, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধেই মামলা ছিল। কিছু মামলা তুলে নিয়ে বিবাদীরা মীমাংসা করেছেন। আবার আদালতের রায়ে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন বাকি আছে ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানা দ্বন্দ্বের মামলা। এটিরও সব কার্যক্রম শেষ। এখন রায়ের অপেক্ষা।






জানতে চাইলে ইবাইস ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মামলা এখনও চলছে। আমরাও রায়ের অপেক্ষায়।






 






নির্দেশনা পাওয়ার পর পদক্ষেপ নেবে দারুল ইহসান






বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দারুল ইহসান বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের কী হবে, এনিয়ে চলছে নানা আলোচনা। বিশ্ববিদ্যারয় কর্তৃপক্ষই বা কী পদক্ষেপ বেন, এই প্রশ্নও সংশ্লিষ্টদের।






জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্ট্রার আফসার আহমেদ ঢাকাটাইমসকে জানান, তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী কাজ করবেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটিই শাখা ধানমন্ডির ৯/এ তে। এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) অনুমোদিত। আমাদের আর কোথাও কোনো শাখা ছিল না, এখনো নেই।’






অনুমোদিত, তারপরও কেনো আপনাদের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হলো? এমন প্রশ্নে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে জানতে পারবো কেনো, কী কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’






বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে বর্তমানে ৮০০ শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যয়নরত। কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার ফলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ পড়েছে অনিশ্চয়তায়। জবাবে আফসার আহমেদ বলেন, ‘অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো। ’কী ধরনের ব্যবস্থা হতে পারে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসির নির্দেশনা যা থাকবে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিবো। মোটকথা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করবো।’






দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপ-সচিব বেগম জিন্নাত রেহানা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় ১৩টি রিট করে টিকে ছিল। এতোদিন আদালতের নির্দেশনা ছিল, প্রতিষ্ঠানটি তার কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এখন আদালতই নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ করে দিতে। আদালতের রায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’






১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি। ২০০৬ সালে মালিকা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধাররা। তারপর যে যার মতো করে যেখানে-সেখানে ক্যাম্পাস খুলতে থাকেন। উঠে সনদ বিক্রির মতো অভিযোগ।






আর সনদ বিক্রি, মালিকানা দ্বন্দ্বসহ নানা সমস্যা নিরসনে ২০১০ সালের শেষের দিকে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করে তদন্তের দায়িত্ব দেয় সরকার। ২০১৩ সালে তদন্তকারী দল তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। যেখানে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।






প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসি ব্যবস্থা নিলে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে এতো দিন কার্যক্রম চালিয়েছে দারুল ইহসান। ২০১৪ সালে ইউজিসি ১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া থেকে বিরত থাকতে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের সতর্ক করেছিল। তার মধ্যে অন্যতম ছিল দারুল ইহসান।






(ঢাকাটাইমস/৩১জুলাই/এমএম/ডব্লিউবি)