ঢাকা: এক সপ্তাহ পার হলেও ডাচ্-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিবিসিসিআই) সভাপতি হাসান খালেদের মৃত্যুর রহস্য জানা যায়নি। পুলিশ ও তার স্বজনদের মতে তার কোনো শত্রু ছিল না। তবে কিভাবে তার মৃত্যু হলো সে প্রশ্নের ও কোনো উত্তর দিতে পারেননি তাঁরা।
পুলিশ জানায়, আজকালের মধ্যে হাসান খালেদের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। তখন হয়তো জানা যাবে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ।
গত ২৪ জুলাই সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী নেতা হাসান খালেদ। ওই দিন রাতেই তার শ্যালক মো. শরীফুল আলম ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এর ঠিক তিন দিন পরে বুড়িগঙ্গ নদী থেকে উদ্ধার হয় হাসান খালেদের লাশ। পরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক ইলিয়াস সুরতহাল প্রতিবেদন করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিডফোর্ড) হাসপাতালের মর্গে পাঠান।
এদিকে তার মৃত্যুর সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক মো. খায়রুল বাশার ঢাকাটাইমসকে বলেন, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ একটি জিডিমূলে তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিডিফোর্ড) হাসপাতালের পাঠিয়েছে। সেখানে হাসান খালেদের শরীর থেকে ভিসেরা সংগ্রহ করে তার ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইলিয়াস।
খায়রুল বাশার জানান, আগামীকাল সোমবার হয়তো ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। আর তখন তার মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।
হাসান খালেদের মৃত্যুর ঘটনায় মামলার বিষয়ে এসআই খায়রুল বাশার বলেন, “আমি আজকে (রবিবার) সকালে হাসান খালেদের স্ত্রী দিলারা খালেদ ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক ইলিয়াসের সঙ্গে কথা বলেছি। দিলারা খালেদকে মামলা করতে অনেকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা সময় ক্ষেপণ করছেন।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাসান খালেদের শ্যালক মো. শরীফুল আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, “তার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। তাই এখন পর্যন্ত তার মৃত্যুর কারণ আমাদের কাছে অজানা। দিন দুয়েকের মধ্যে তার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারব।”
হাসান খালেদের মৃত্যুর বিষয়ে কাউকে সন্দেহ করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে মো. শরীফুল আলম বলেন, “তার ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হতো না।”
দিলারা খালেদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে শরীফুল আলম বলেন, “উনি এখনো শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ফলে মাঝেমধ্যে তিনি আমার ফোনও ধরেন না।”
জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক ইলিয়াস ঢাকাটাইমসকে বলেন, “ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না। তবে সুরতহাল রিপোর্টে তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। নদী থেকে ভাসমান লাশ উদ্ধার করেছি আমরা।”
জানা গেছেহাসান খালেদের লাশের ময়নাতদন্ত করেছেন মিডফোর্ট মেডিকেল কলেজের ডা. এলিজা। নানা মাধ্যমে চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
৫৫ বছর বয়সী হাসান খালেদ স্ত্রী দিলারা খালেদ ও একমাত্র মেয়ে জেবুন্নেছাকে নিয়ে ধানমন্ডির ৪/এ সড়কে ৪৫ নম্বর বাড়িতে বসবাস করতেন। নিউ ইস্কাটনের হাসান হোল্ডিং ভবনের অষ্টম তলায় তার অফিস রয়েছে। কেমিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন তিনি। গত ২৫ বছর ধরে তিনি আমদানি-রপ্তানি ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবসায় জড়িত। ডাচ-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি।
(ঢাকাটাইমস/১সেপ্টেম্বর/মোআ)