logo ২১ এপ্রিল ২০২৫
‘মীর কাসেমকে ৩০২ ধারায় ফাঁসি দেয়া উচিৎ হবে না’
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
২৮ আগস্ট, ২০১৬ ১৭:১৭:২৬
image



ঢাকা: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে  ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর রিভিউ শুনানি শেষে আগামী ৩০ অক্টোবর ফাঁসির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।আদালতে মীর কাসেম আলীর পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন।






শুনানিতে আদালতে যে বক্তব্য দিয়েছেন সে সম্পর্কে পরে খন্দকার মাহবুব সাংবাদিকদের বলেন,মীর কাসেমের ফাঁসির আদেশ বহাল থাকা একটি মাত্র চার্জের বিরুদ্ধে আমরা রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিলাম।এই চার্জে ট্রাইব্যুনাল মীর কাসেম আলীকে অ্যাবেটর (সহযোগী)হিসেবে সাজা দিয়েছিল।তবে আপিল বিভাগ সেটা পরিবর্তন করে প্রিন্সিপাল অফেন্ডার হিসেবে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে।আমরা বলেছি,এই মামলায় যে সাক্ষ্যপ্রমাণ আছে, সেই সাক্ষ্যপ্রমাণে কোনো সাক্ষি বলেননি যে, মীর কাসেম আলী সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আপিল বিভাগ বলেছে, যদি ডাইরেক্ট অ্যাভিডেন্স না পাওয়া যায়, তাহলে ওই সময় প্রকাশিত যে বইপত্র আছে তা পর্যালোচনা করে আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করা যায়।






সাক্ষি প্রমাণের বিষয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা আদালতকে বলেছি, পিডব্লিউ ১৭তে  তিনি  জসিমের মামাতো বোন বলে দাবি করেছেন, তিনি নাকি একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন, লিবারেশনের পরে, কিন্তু দুঃখজনকভাবে উনি ওই বইতে, পত্রিকায় জসিমের কথা বলেন নাই। আমাকে আরো একটা বই প্রসিকিউশন থেকে দেয়া হয়েছে, অ্যাডভোকেট শফিউল আলমের তিনিও একটি দীর্ঘ বই লেখেছেন, সেখানেও জসিমের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।তারপর আর একটি রিসার্স পেপার চিটাগাং থেকে দেয়া হয়েছে, সেখানে জসিম কোথায়, কিভাবে মারা গেছে তার হদিস দেয়া হয়নি,মীর কাসেম আলী কোনোভাবে সম্পৃক্ত ছিল বলে বলা হয়নি।






যে সাক্ষ্যপ্রমাণ আছে, সেই সাক্ষ্যপ্রমাণে অন্তত এই অভিযোগের কারণে অপরাধ প্রমাণিত হয় নাই-উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারপরও যদি আপনারা মনে করেন, অপরাধ প্রমাণ হয়েছে, সেক্ষেত্রেও আমাদের নিবেদন থাকবে যে, যেহেতু মীর কাসেম আলী সরাসরি এই হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রিন্সিপাল অফেন্ডার হিসেবে জড়িত-এটা প্রমাণ হয় নাই। সেই ক্ষেত্রে তাকে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড দেয়া আইনগতভাবে উচিৎ হবে না।






আমরা আরো বলেছি, আমাদের দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ড কখন দেয়া হয়, মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় যদি দেখা যায় আসামি অত্যন্ত দুর্ধর্ষ, তাকে ছেড়ে দিলে আবারও সে একই ধরনের অপরাধ করবে সেই ক্ষেত্রে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।কিন্তু মীর কাসেম আলী সাহেব তাকে যদি মৃত্যুদণ্ড নাও দেয়া হয়, তাহলে উনি এই ধরনের অপরাধ বাংলার মাটিতে করবেন এরকম কোনো সম্ভাবনা নাই। তাই মীর কাসেম আলীর চরম দণ্ড দেয়ার বিষয়টি মীর কাসেম আলীর ক্ষেত্রে  নাই। 






মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ক্ষেত্রে আসামির ট্রুথও দেখা হয়-উল্লেখ করে তিনি বলেন,মীর কাসেম আলী সাহেব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, বিভিন্ন হাসপাতাল করে উনি মানুষের সেবা করেছেন। এইভাবে উনি বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি টিভির মালিক ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।






তিনি জানান, এই মামলা যখন ইনভেস্টিগেশন হচ্ছিল তখন তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন, আবার বিদেশ থেকে এসে উনি আবার বিচারের মুখোমুখি হন। এই সব কিছু বিবেচনা করে, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এবং তার ডাইরেক্ট পার্টিসেপেশন নাই এই কারণে কোনো অবস্থায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া উচিৎ হবে না।






(ঢাকাটাইমস/ ২৮ আগস্ট/ এমএবি/ এআর /ঘ.)