গাজীপুরে শিশু গৃহকর্মী জান্নাতের ওপর বর্বরোচিত নির্যাতনকারী গৃহকর্ত্রী মনি বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার সাতারকুলে মনি বেগমের বোনের বাড়ি থেকে গাজীপুর থানা পুলিশ বাড্ডা থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করে।
গাজীপুর থানার এসআই আজিজুল হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে তুলে রিমান্ড চাওয়া হবে।
পেটের দায়ে চাঁদপুরের বাসিন্দা ৯ বছরের শিশু জান্নাত গাজীপুরের জয়দেবপুরে মনি বেগমের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতো। তার ‘অপরাধ’ ছিল, সে মা ও ভাইবোনদের দেখতে বাড়ি যেতে চাইতো। আর এ অপরাধে গৃহকর্ত্রী ও গৃহকর্তা উভয়েই তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাতো।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটির প্রতিবেশী শাহজাহান ভূঁইয়া তিনজনের বিরুদ্ধে চাঁদপুরের হাইমচর থানায় মামলা করেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে গাজীপুর পুলিশের সহায়তায় গৃহকর্তা ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার করে চাঁদপুর পুলিশ।
শিশুটির পরিবার বলছে, পাঁচ সন্তান ও স্ত্রীকে ফেলে শিশুটির বাবা অন্যত্র চলে গেছেন। পরে মা ফিরোজা বেগম শিশুটিকে মানুষের বাসায় কাজে দেন। এক বছর আগে হাইমচরের মোস্তফা সরদার নামের এক ব্যক্তি শিশুটিকে গাজীপুরের জয়দেবপুরে ওমর ফারুক-মনি বেগম দম্পতির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে নিয়ে যান। সম্প্রতি শিশুটি বাড়ি যাওয়ার জন্য গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রীর কাছে আবেদন করে। এ কারণে তারা শিশুটিকে প্রচণ্ড মারধর করেন। আরও পড়ুন: প্রায়ই জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শিশুটি
পুলিশ জানায়, এ ঘটনার খবর পেয়ে মোস্তফা সরদার শিশুটিকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে গাজীপুরের ওই বাড়ি থেকে হাইমচরে নিয়ে আসেন। পরে শিশুটির অবস্থা দেখে স্থানীয় লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে এবং মোস্তফা সরদারকে পুলিশে দেয়।
চাঁদপুরের হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর জানান, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামছুন্নাহারের নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটির প্রতিবেশী হাইমচর এলাকার শাহজাহান ভূঁইয়া তিনজনকে আসামি করে শিশু নির্যাতন দমন আইনে হাইমচর থানায় মামলা করেন।