ঝিনাইদহ শহরজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৬/৭ জন অপ্রাপ্ত বয়সের বেদে সম্প্রদায়ের মেয়ে। তাদের বয়স বড় জোর ১৩ থেকে ১৬। এই বয়সে ওদের বিয়ে হয়েছে। কারো সাথে বাচ্চা আবার কেউ গর্ভবতী। পরনে ময়লা শাড়ি আর সেলোয়ার কামিজ পরা। দল বেঁধে ছুটে বেড়াচ্ছে। টার্গেট গ্রাম থেকে আসা কলেজপড়–য়া ছেলে বা মেয়ে। কাঠের ছোট বাক্সের মধ্য থেকে সাপের মাথা বের করে আছে। আগন্তকের সামনে এগিয়ে ধরছে সেটি। অমনি ভয়ে চমকে উঠছে। এরপর পথ আগলে দাবি করা হচ্ছে টাকা। চাহিদা মতো টাকা না দিলে ছেলেদের শার্ট আর মেয়েদের ওড়না টেনে ধরা হচ্ছে।
ছোট কাঠের বাক্সে সাপ নিয়ে চাঁদাবাজি নতুন নয়, কিন্তু বর্তমানে তা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। পথচারী ও শহরবাসী সাপের ভয়ে ও ইজ্জত বাঁচাতে চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছে। শহরের পায়রা চত্বর, মুন্সি মার্কেট, পোস্ট অফিসের মোড় ও ১০ তলার সামনে সবচেয়ে বেশি এদের আনাগোনা। ৬/৭ জনের দল বেঁধে এরা চাঁদাবাজি করে। লোক বুঝে পাঁচ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করছে।
টহল পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের সামনেই সোমবার একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা গেছে। প্রথমে টাকা চেয়ে না পেলে সাপ বের করে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হয়।
ঝিনাইদহ শহরের ধোপাঘাটা ব্রিজের নিচে এসব বেদের বহর ঝুপরি করে দল বেঁধে বসবাস করে। এদের ঝুপরিতে মাদক থেকে টিভি ও আধুনিক সব সুবিধা আছে। এসব যাযাবর বেদেদের মূল আবাস সাভার ও নাটোরের সিংড়ায়।
এসব বেদে মেয়ের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতিদিন তারা ৫/৬’শ টাকা আয় করে। পুরষ ছেলেরা বাড়ি আরাম করে আর স্ত্রীরা শহর চষে বেড়ায়। এসব পরিবারের নিজ এলাকায় পাকা ঘরবাড়ি জমি ও ব্যাংকে টাকাও মজুদ আছে। এটা তাদের পেশা। আগে বেদে পরিবারের পুরুষ নারী সদস্যরা সাপ খেলা সাপের ওষুধ বিক্রি সিঙ্গা লাগানো বাতের চিকিৎসা দেয়ার নামে গ্রামের সহজ-সরল মহিলাদের কাছ থেকে টাকা, চাল, মুরগি খাবার আদায় করত। এখন মানুষ সচেতন হওয়ায় এসব প্রতারণা ব্যবসা ও ভুয়া চিকিৎসা ও ওঝাগিরি করতে পারে না। এখন তারা ছোট সাপ দেখিয়ে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে জোর করে টাকা আদায় করে থাকে।
ভুক্তভোগীরা এদের হাত থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।