‘যেখানে শেখ হাসিনা-সেখানেই প্রতিরোধ’-এমন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র সফরের দিন কোনো কর্মসূচিই পালন করেনি। অথচ এর আগে প্রধানমন্ত্রী যতবার যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছেন, ততবার এর প্রতিবাদে বিমানবন্দর এলাকায় নানা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি-জামায়াতের অনুসারীরা।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সোমবার যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। তাকে স্বাগত জানাতে নিউ ইয়র্কের লাগোর্ডিয়া বিমানবন্দরের আশেপাশে জড়ো হন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু বিএনপি সমর্থকরা এদিন কোনো কর্মসূচি পালন করেননি। খবর এনার।
গত ২০ বছরে ধরেই বাংলাদেশের কোনো প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন তখনই বিমানবন্দরে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা কালো পতাকা প্রদর্শনসহ বিক্ষোভ করে আসছে। দুই দশক পর এবার কেন ব্যতিক্রম হলো- জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানান, ‘আমরা আওয়ামী লীগকে ওয়াকওভার দিয়েছি।’ কারণ জানতে চাইলে ওই নেতা বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কোন কমিটি নেই। তার উপরে সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন নিউইয়র্ক স্টেট কমিটি করার দায়িত্ব নিয়ে এসে বিএনপিকে আরো বিভক্ত করেছেন। যে বিভক্তির কারণে নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির কমিটি এখন ছয়টি ভাগে বিভক্ত। সব মিলিয়ে হতাশায় বিএনপির নেতাকর্মীরা এবার এয়ারপোর্টে বিক্ষোভ অথবা কালো পতাকা দেখতে যাননি।’
তবে ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যখন প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন তখন বিএনপি বিক্ষোভ করবে বলে জানান, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ স¤্রাট। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনার দিন হোটেলের সামনেও বিক্ষোভ করবে তারা।
প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিরোধে বিএনপি সমর্থকরা ঘোষণা দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ পাল্টা ঘোষণা দিয়েছিল। ‘যেখানে বিএনপি-জামাত-সেখানেই প্রতিরোধ’-ঘোষণা নিয়ে সক্রিয় আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। তবে বিএনপি সমর্থকরা উপস্থিত না হওয়ায় বিমানবন্দর এলাকায় দুই পক্ষে কোনো গোলযোগ ঘটেনি।
আর বিএনপি সমর্থকদের এই ‘পিছুটান’ এর জন্য পুরো কৃতিত্ব নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ আর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা। এয়ারপোর্টে নানা স্লোগানে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান তারা।
বিমানবন্দর থেকে শেখ হাসিনা সোজা জাতিসংঘ সংলগ্ন হোটেলে চলে যান। এই সফরে তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন। ২২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে ভার্জিনিয়ায় তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাসায় যাবেন শেখ হাসিনার। সেখান থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন। জয়ের বাসায় অবস্থানকালে তিনি কোন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন না বলেও উল্লেখ করেছে দূতাবাসের সূত্র।
সোমবার থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের বিভিন্ন অধিবেশনে যোগ দিবেন। কমনওয়েথ সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গেও তার বৈঠক হবে। মঙ্গলবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আয়োজিত লিডার্স সামিট অর রিফিউজিতেও শেখ হাসিনা অংশ নেবেন। বুধবার সাধারণ অধিবেশনে যোগদান শেষে স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় গ্র্যান্ড হায়াতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সংবর্ধনায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। পরদিন সকাল ১০টায় বাংলাদেশ মিশনে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী এবং ঐ দিনই ওয়াশিংটনের উদ্দেশে নিউইয়র্ক ছাড়বেন তিনি।
(ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/ডব্লিউবি)