logo ০৬ মে ২০২৫
যশোর-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে
বাদ পড়ছেন মোস্তফা ফারুক, তালিকায় মনিরুল না আহসান?
হাবিবুল্লাহ ফাহাদ, ঢাকাটাইমস
০৩ নভেম্বর, ২০১৩ ১৯:৫৮:৪৩
image


ঢাকা: আগামী নির্বাচনে যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদকে মনোনয়ন না দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক জরিপে। তাঁর পরিবর্তে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবিএম আহসানুল হককে মনোনয়ন দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে জরিপ প্রতিবেদনে। সংশ্লিষ্ট সূত্র ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছে।



সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন নিয়ে একাধিক জরিপ প্রতিবেদনে যশোর-২ আসনের সার্বিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এসব প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, যশোর-২ নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল। এছাড়া স্থানীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। তাছাড়া বর্তমান সাংসদ ও মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদের সঙ্গেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সম্পর্ক ভাল না। সাংসদ হওয়ার পর এলাকায় গিয়েছেনও খুব কম। যে কারণে এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গেও তার যোগাযোগ কম। তাই আগামীতে তাকে নির্বাচনে প্রার্থী করা হলে দলের জন্য ভাল হবে না।    



স্থানীয় সূত্র ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানায়, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন ঝিকরগাছা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম। ঝিকরগাছা উপজেলার চেয়ারম্যান হওয়ার পরও চৌগাছা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, সমর্থকদের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। ওই এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ভাল। মনিরুল ইসলামের বাবা আবুল ইসলাম দিনাজপুর থেকে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাছাড়া এলাকায় শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবামূলক কর্মকাণ্ডে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে উদ্বুদ্ধ করায় মনিরুল ইসলাম দুবার জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন।



জানতে চাইলে ঝিকরগাছা উপজেলার চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ৯০ হাজার ভোট বেশি পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। এ অঞ্চলে তথ্য ও প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে জনগণের মধ্যে আমি পরিচিত। সুখে-দুঃখে সব সময়ই জনগণের পাশে ছিলাম, এখনও আছি। তাছাড়া বাবা দুই বার সংসদ সদস্য থাকায় পারিবারিকভাবেই রাজনৈতিক পরিম-লে বড় হয়েছি। তাই আগামী নির্বাচনে নেত্রী  (শেখ হাসিনা) আমাকে মনোনয়ন দিলে নিজের সর্বোচ্চ মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে জনগণের মন জয় করব।’   

 

অন্যদিকে এবিএম আহসানুল হক পেশায় একজন কর আইনজীবী। বেশিরভাগ সময় তিনি ঢাকাতেই থাকেন। গ্রামে যান বছরে দু-একবার। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বিভিন্ন উৎসবে এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টারিং, ব্যানার কিংবা ফেস্টুন লাগানোর বাইরে তার সাংগঠনিক কোনো কর্মকা- নেই। এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গেও তার যোগাযোগ কম।  তবে জানা গেছে, চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম হাবিবুর রহমানও আগামী নির্বাচনে দলের টিকিট চাইবেন। এজন্য এলাকায় জনসংযোগও শুরু করেছেন তিনি। জানা গেছে, এসএম হাবিবুর রহমানের সমর্থকদের তোপের মুখে এলাকায় ঢুকতে পারেন না বর্তমান সাংসদ মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ ও আহসানুল হক। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য  হাবিবুর রহমানের মুঠোফোনে কল দিলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।  

 

সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক রফিকুল ইসলামও আগামীতে মনোনয়ন চাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। এজন্য জনসংযোগও চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সবমিলিয়ে আগামী নির্বাচনে যশোর-২ আসনে মনোনয়ন নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি বাড়ছে।



যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে দুই উপজেলায় আছে ২২টি ইউনিয়ন এবং দুইটি পৌরসভা। তিন লাখ ১০ হাজার ৪শ’ ৮ জন ভোটার। দুই উপজেলার মধ্যে চৌগাছা থেকে ঝিকরগাছায় ভোটার সংখ্যা ৫০ হাজার বেশি। প্রতিটি নির্বাচনে এখানে ঝিকরগাছা এলাকার বাসিন্দারাই জয়ী হন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে এই আসনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। আর ২০০১ সালের নির্বাচনে জয়ী হন জামায়াতের মুহাদ্দিস আবু সাঈদ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ।





(ঢাকাটাইমস/ ২৮ অক্টোবর/ এইচএফ/ ১০.১৬ঘ.)