logo ০৬ মে ২০২৫
রাসেল, আজমত না জাহাঙ্গীর
হাবিবুল্লাহ ফাহাদ, ঢাকাটাইমস
১৭ নভেম্বর, ২০১৩ ১০:৪৩:৩৮
image


ঢাকা: আগামী নির্বাচনে গাজীপুর-২ (টঙ্গী-গাজীপুর সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ঘিরে তিন ভাগে ভাগ হয়ে গেছেন নেতাকর্মীরা। তবে দৃশ্যত এদের মধ্যে মিল থাকলেও ভেতরে ভেতরে চলছে দ্বন্দ্ব। এ পরিস্থিতিতে গাজীপুর-২ আসন থেকে আগামীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে হচ্ছেন তা জানতে হলে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে আবেদনপত্র কিনেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল। এছাড়াও টঙ্গী পৌরসভার সাবেক মেয়র আজমত উল্লা খানও মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছেন। গাজীপুর-১ ও ২ আসন থেকে মনোনয়ন চাইতে আবেদন করেছেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আলোচিত মুখ জাহাঙ্গীর আলম।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্র ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র আজমত উল্লা খানের সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। গাজীপুর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হারের পেছনে জাহাঙ্গীর আলমই দায়ী বলে মনে করেন আজমত উল্লা খানের অনুসারী-অনুগামীরা। জাহাঙ্গীর যদি নির্বাচনের শুরুতেই দলীয় প্রার্থীর বিপরীতে নিজের প্রার্থীতা তুলে নিতে তবে হয়তো আজমত উল্লা জয়ী হতেন বলে মনে করেন তারা। এসব কারণে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ জাহাঙ্গীর সমর্থকদের ভাল চোখে দেখেন না।

দলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে দলের সমর্থন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে স্থানীয় একজন সাংসদসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দু-একজন নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে কথা দিয়েছিলেন। এজন্য বিভিন্ন সময় ওই নেতারা জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলের সমর্থন না পাওয়ায় জাহাঙ্গীর ওই নেতাদের ওপর বিরাগভাজন হন। এনিয়ে জাহাঙ্গীর মিডিয়াতেও বিভিন্ন সময় তার ক্ষোভের কথা ব্যক্ত করেছেন।   

ওই সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছ থেকে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার আশ্বাসেই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে তিনি এ ব্যাপারে সবুজ সংকেত পেয়েছেন বলেও দাবি করছেন তার সমর্থকরা। তবে তিনি কোন আসন থেকে মনোনয়ন পেতে পারেন তা নিশ্চিত নয়। তাই গাজীপুরের দুটি আসন থেকেই মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র কিনেছেন জাহাঙ্গীর। এদিকে গাজীপুর-১ থেকে এবারও মনোনয়ন চেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সাংসদ আ ক ম মোজাম্মেল হক।   

বিগত নির্বাচনগুলোতে জাহিদ আহসান রাসেলের পক্ষে মাঠে ছিলেন আজমত উল্লা খান। কিন্তু এবার তিনি নিজেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। গাজীপুর আওয়ামী লীগের একটি অংশ মনে করে, আগামী নির্বাচনে গাজীপুর-২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে পিছিয়ে নেই আজমত উল্লা। অন্যদের তুলনায় তার ভাবমূর্তি ভাল। নেতাকর্মীরাও তাকে সজ্জন হিসেবেই চেনেন। তাছাড়া দলের সভানেত্রীও তার ব্যাপারে ইতিবাচক বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে বর্তমান সাংসদ জাহিদ আহসান রাসেল ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘গাজীপুরবাসীর জন্য আমার বাবা জীবন দিয়েছেন। আমি তাঁর ছেলে হিসেবে বাবার আদর্শ ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। এবারও দল থেকে মনোনয়ন চেয়েছি। দল আমাকে মূল্যায়ন করবে বলে আশা রাখি।’

তবে আজমত উল্লা খান বলেছেন, দল থেকে তিনি মনোনয়ন পান বা না পান নৌকা মার্কার জন্য কাজ করবেন। ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘জেলার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলীয় সভানেত্রীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। তিনি যা বলবেন তাই হবে।’

মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী জাহাঙ্গীর আলমও। জানতে চাইলে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘গাজীপুরের দুটি আসন থেকে মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছি। দলের জন্য ত্যাগ করেছি। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু শেষপর্যায়ে দলের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সেখান থেকেও সরে দাঁড়িয়েছি। আশা করি নেত্রী  (শেখ হাসিনা) আমাকে নিরাশ করবেন না।’   



(ঢাকাটাইমস/১৭নভেম্বর/এইচএফ/এএসএ)