logo ০৬ মে ২০২৫
নির্বাচনে নারীদের মাঠে নামাচ্ছে মহাজোট, যাবেন বাড়ি বাড়ি
ওমর ফারুক, ঢাকাটাইমস
০৮ নভেম্বর, ২০১৩ ১০:৫৬:৩৬
image


ঢাকা : আওয়ামী লীগ আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কৌশল হিসাবে নারী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ১৪ দলের নেতারাও বিভিন্ন সংগঠনের নারী নেতাকর্মীদের মাঠে নামানোর এই উদ্যোগের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, নির্বাচনে জয়লাভের জন্য নারী সংগঠনকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডীতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের নেতারা এ নিয়ে বৈঠক করেছেন। সভায় এ ব্যাপারে নারী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তাদের  দীর্ঘ মতবিনিময় হয়।

সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়লাভ করার স্বার্থে নারীদেরকে এখন থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ জন ভোটারকে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার শপথ করাতে হবে। এখন আমাদের সামনে জয়লাভ করা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। কাজেই শিল্পী কবীর সুমনের গানের কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে সবাইকে বলতে হবে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আমার মতে ১০ জনের পরিবর্তে প্রতিদিন ২০ জন ভোটারকে নৌকা মার্কার ভোটার করতে হবে।

নারী নেত্রীদেরকে নির্বাচনে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্য জানতে চাওয়া হলে তিনি ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নারীরা যতটা বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলের জন্য সহজে কাজ করতে পারেন অন্যের পক্ষে কাজটা ততটাই কঠিন। যেকারণে নারী নেতৃবৃন্দকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে বিজয় সুনিশ্চিত করায় আমাদের টার্গেট।

সভায় নারী নেতৃবৃন্দও সকল ভেদাভেদ ভুলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি রেখা চৌধুরী বলেন, আমরা চাই স্বাধীনতারবিরোধী শক্তি যেন কোনদিন বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসতে না পারে। সেকারণে আমাদেরকে কাজ করতে হবে।

জাগো নারী ফাউন্ডেশনের সভাপতি নূর নাহার বিরোধীদলের নানা অপকর্মের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিএনপি জামায়াত আবার ক্ষমতায় আসলে আমাদেরকে হিজাব বা বোরকা পরে বাহির হতে হবে। নারীর স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

দেশে নির্বাচন নিয়ে যখন চরম অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে তখন নারী নেতৃবৃন্দের সাথে ১৪ দলের মতবিনিময় সভাকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কৌশল হিসাবে দেখছেন অনেকেই।

মতবিনিময় সভায় সমাজকর্মী ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিনী বলেন, আমরা চাই জামায়াত-শিবির নিপাত যাক, আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় আসুক। সেজন্য আমাদেরকে মাঠে থেকে যা করা দরকার তা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

পেশাজীবী নারী সমাজের সভাপতি মাহফুজা খানম বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে দেশকে বানাবে আফগান আর আমাদেরকে বানাবে তালেবান। আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কাউকে ক্ষমতায় দেখতে চাইনা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নারী নেত্রী পান্না কায়সার বলেন, আওয়ামী লীহ শুধু একটি দলই নয় এটি একটি স্বতন্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেকারণে দেশের উন্নয়ন কিভাবে করতে হয় আওযামী লীগ পাঁচ বছরে তা দেখিয়ে দিয়েছে।  আমাদের উচিত জনগণের সামনে এই উন্নয়ন তুলে ধরার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের সকল উন্নয়ন নিয়ে একটি ডকুমেন্টারী তৈরি করতে হবে। আবার তারেক, কোকো ও গিয়াস উদ্দীন মামুনের দুর্নীতি নিয়ে আলাদা একটি ডকুমেন্টারী করে তা জনগণের মাঝে প্রচার করতে হবে।

পেশাজীবী নারী সমাজের সাধারণ সম্পাদক শারমিন হাফিজ ডেইজি বলেন, আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করতে আমাদের তিনটি কাজ করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে কাছে টানা। অভিনয় শিল্পীদেরকে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালের মতো উদ্বুদ্ধ করা ও বিড়ঙ্গনা নরীদেরকে সঠিক সম্মান দেয়া।

আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, নারী নীতি বাস্তবায়নের জন্য শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করার বিকল্প নেই। পুরুষের পাশাপাশি নারীরা মাঠে না নামলে ভালো কিছু করা সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসলে শুধু হিজাব পরা নয় মেয়েদেরকে আরব আখেরাতের নারীদের মতো পোশাক পরতে হবে।

এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নির্বাচনে বিজয়ী হতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করার আহবান জানান। তিনি বলেন, এখন আমাদের দলের ছোটখাট সমস্য সমাধানের সময় নয় এখন একটাই কাজ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করা।

(ঢাকাটাইমস/৮ নভেম্বর/ওএফ /এআর/ ঘ.)