logo ২৯ মে ২০২৫
খুলনা-৫ আসন: কে হবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী?
এবার জামায়াতকে ছাড় দিতে নারাজ বিএনপি
শেখ আবু হাসান, ঢাকাটাইমস
০৫ নভেম্বর, ২০১৩ ১৬:১০:৫২
image

খুলনা: খুলনা-৫ আসনে দলের মনোনয়ন পেতে মরিয়া আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। এসব নেতাদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সাংসদ ও ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, ফুলতলা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন, ডুমুরিয়া উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক গাজী আব্দুল হাদী ও আওয়ামী লীগ নেতা ড. মাহবুব উল ইসলাম।


বেশ আগে থেকেই আ’লীগের এ চার নেতার আসন এলাকায় নির্বাচনী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দলের হাইকমান্ডের কাছে জোর লবিং শুরু করেছেন। তবে শেষ মুহূর্তে এ আসনে কে মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে এলাকায় চলছে জোর আলাপ-আলোচনা।


আপরদিকে বিগত দুই নির্বাচনে এ আসনে ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতকে ছাড় দেয়া হলেও আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আর ছাড় দিতে নারাজ স্থানীয় বিএনপি। এ আসনের ফুলতলা ও ডুমুরিয়া বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এবার এ দাবিতে ঐক্যবদ্ধ বলে দলের একাধিক নেতাকর্মীর সূত্রে জানা গেছে। আগামী নির্বাচনে আসনটি পুনরুদ্ধারে আগেভাগেই মাঠে নেমেছেন বিএনপি’র মনোনয়নপ্রত্যাশী ডা. গাজী আব্দুল হক।


ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৫ আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই অধিকাংশ সময় নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এ আসনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজীয় হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ২০০১ সালে নির্বাচনে ডুমুরিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে ৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে বিজীয় হন জমায়াতের খুলনা মহানগরের সাবেক আমীর মিয়া গোলাম পরওয়ার। ২০০৮ সালের নির্বাচনে নারায়ণ চন্দের কাছে ৩৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিএনপি-জামায়াত জোট প্রার্থী পরওয়ার পরাজিত হন। আগামী নির্বাচনেও জামায়াত এ আসনে গোলাম পরওয়ারকে ১৮ প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে এবার জামায়াতকে কোনভাবেই ছাড় দিতে নারাজ স্থানীয় বিএনপি।


এছাড়া জাতীয় পার্টির আমলে এ আসনে একবার জাপা প্রার্থী কর্নেল (অব.) আব্দুল গফ্ফার জয়ী হয়েছিলেন। বাকি সব নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।


ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি যথাক্রমে খান আলী মুনসুর ও কওছার আলী জমাদ্দার ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘আমরা আর জামায়াতের প্রার্থী চাই না। এবার বিএনপি’র প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে হবে। তা না হলে স্থানীয় বিএনপি বিদ্রোহ করতে পারে।


ডুমুরিয়া উপজেলার সিনিয়র সহ-সভাপতি আকুঞ্জি জহুরুল ইসলাম, শ্রমিক দলের সভাপতি খান ইসমাইল হোসেন, কৃষক দলের সভাপতি শেখ আতিয়ার রহমান অভিন্ন কণ্ঠে বলেন, এ আসনে আর দাঁড়িপাল্লা চাই না। ধানের শীষ চাই। তারা জানান, দুই উপজেলার ১৮ ইউনিয়নের মধ্যে গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১১টিতে বিএনপি, ৬টিতে আওয়ামী লীগ ও মাত্র ১টিতে জামায়াত জয় পেয়েছে। এ অবস্থায় জামায়াতের চেয়ে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা অনেক  শক্তিশালী। এ অবস্থায় নেতা-কর্মীরা কোন অবস্থাতেই জামায়াত প্রার্থীকে মেনে নেবে না।


এদিকে জামায়াতে ইসলামী সূত্রে জানা গেছে, অনেক আগে থেকেই গোলাম পরওয়ারকে দল এ আসনে প্রার্থীতা চূড়ান্ত করেছে। তিনি (পরওয়ার) কারাগারে থাকায় তার পক্ষে দল নির্বাচনী কর্মকা- পরিচালনা করছে। এ আসনে পরওয়ারই ১৮ দলের প্রার্থী হবেন বলে জামায়াত দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। 


বিএনপি নেতা ডা. গাজী আব্দুল হক ঢাকা টাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাই। সে কারণে দলের কর্মকা-ের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কাজ করছি। এলাকায় ইতোমধ্যে শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে।


এদিকে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জোরালো দাবিদার বর্তমান সাংসদ নারায়ন চন্দ্র চন্দ। সরকারি উন্নয়নের পাশাপাশি তিনি গণসংযোগ ও সাংগঠনিক কর্মকা- গতিশীল করতে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান।


বিগত নির্বাচনের পর থেকেই এলাকায় কাজ করে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছেন ফুলতলা আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন। তিনি জানান, গত নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন চেয়ে পাননি। কিন্তু তাই বলে মাঠ ছাড়েননি। দলের পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন তিনি। এবার মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।


এছাড়া এ আসনে ড. মাহবুব উল ইসলাম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দলের হাইকমান্ডের কাছে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তিনি এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাও গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। বর্তমান ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক গাজী আব্দুল হাদীও মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে তাঁর ঘনিষ্টজনরা জানিয়েছেন।


(ঢাকাটাইমস/ ৫ নভেম্বর/ প্রতিনিধি/ ইইউ/ ১২.৫৫ঘ.)