ঢাকা: ২৫ অক্টোবর নিয়ে দেশে এক ধরনের আতঙ্ক ছিল। কী হয়, কী হয়- এ নিয়ে নানা কথা ডালপালা ছড়ালেও শেষ পর্যন্ত কিছু হয়নি ওইদিন। বরং পরদিন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোনের পর বরং ছড়িয়েছিল আশা। কিন্তু দুই নেত্রীর ফোনালাপের এক সপ্তাহ পর আবার ছড়িয়েছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। দুই নেত্রীর এক দফা আলাপের পরও সংলাপে বসেনি দুই পক্ষ। তাই আবার রাজপথে গড়িয়েছে দুই পক্ষের লড়াই। আর এর বলি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
আবার ২৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী দুই দফা ফোন করলেও তৃতীয় দফা ফোন করবেন কে, সে প্রশ্নের সুরাহাও হয়নি। দুই নেত্রীর ফোনালাপে ২৭ থেকে ২৯ অক্টোবরের পর আলোচনায় আপত্তি নেই বলে জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সরকার দল বলছে, প্রধানমন্ত্রী ফোন করেছেন দুই দফা, কাজেই সৌজন্যের খাতিরে এখন খালেদা জিয়ার ফোন করা উচিৎ বলে মনে করছেন দলের নেতারা। তবে বিএনপি বলছে, ফোন আবার আসতে হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
সংলাপ না হওয়ার জন্য দুই পক্ষই দায়ী করছে একে অপরকে। দুই পক্ষই বলছে আলোচনা হতে হবে নিঃশর্ত। আবার দুই পক্ষই আলোচনায় বসার জন্য দিচ্ছে নানা শর্ত।
নির্বাচনকালীর সরকার কেমন হবে, এ নিয়ে দুই নেত্রী দিয়েছেন দুই ধরনের প্রস্তাব। সব দলকে নিয়ে সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, নির্দলীয় সরকারের কথা। কিন্তু আলোচনার আগে বিএনপি শর্ত জুড়ে দিয়েছে, সংলাপের আগে তাদের প্রস্তাব মেনে নিতে হবে। অন্যদিকে সরকার দল বলছে, তারা কথা বলবেন সর্বদলীয় সরকার নিয়ে। আবার সংলাপে বসতে হলে হরতাল প্রত্যাহার করতে হবে, এমন শর্ত দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
দুই পক্ষই আবার অপর পক্ষের শর্তের সমালোচনা করেছন। দুই পক্ষই বলেছেন, শর্ত দিয়ে সংলাপ হয় না। অথচ নিজেদের অবস্থানকে শর্ত বলতে চাইছেন না কেউ।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘আমরা হরতাল তুলে নেয়ার যে আহ্বান জানিয়েছি এটিকে শর্ত মনে করা যাবে না। এটা আলোচনার সুষ্ঠু পরিবেশের স্বার্থেই করতে হবে।’
আবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সর্বদলীয় সরকারের জন্য আলোচনায় ডেকেছেন। কিন্তু আমরা চাই নির্দলীয় সরকার। এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা পেলে তবেই আলোচনায় বসতে বিএনপি রাজি আছে।’ নির্দলীয় সরকারের যে নিশ্চয়তা তারা চাচ্ছেন সেটি শর্ত কি না জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আলোচনার বিষয়টিই ঠিক করতে বলেছি আমরা। এটি কোনো শর্ত নয়।’
প্রবীণ আইনজীবী রফিকুল হক বলেন, ‘আলোচনা না হলে দেশে সংঘাত-সংঘর্ষ বাড়বে। এজন্য দুই দলকে মূল্য দিতে হবে। তাই যত সম্ভব আলোচনা বসার বিকল্প নেই’।
(ঢাকাটাইমস/০৬নভেম্বর/এইচএফ/এসআর/ঘ.)