logo ০৫ মে ২০২৫
নুর-ই আলম চৌধুরীর আয় বেড়েছে ২৩৬ গুণ!
বিলকিছ ইরানী, ঢাকাটাইমস
২৬ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০১:৫১
image


ঢাকা: মাদারীপুর-১ আসনের এমপি নুর-ই আলম চৌধুরী। ২০০৮ সালে তার একমাত্র আয় ছিল ব্যবসা থেকে বছরে ৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। তবে এবারের হলফনামায় তার আয় রয়েছে কৃষি, মাছের ঘের, ব্যবসা, পরিবহন, ব্যাংক মুনাফাসহ বহু খাত থেকে। গত পাঁচ বছরে তার নিজের আয় বেড়েছে দাড়িয়েছে ২৩৬ গুন অর্থাৎ তার মোট বার্ষিক আয় এখন ১০ কোটি ৫৯ লাখ ৬৯ হাজার ৪৩৩ টাকা। অন্যদিকে নির্ভরশীলদের আয় শুন্য থেকে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৫১ হাজার ৪৫৪ টাকা। বর্তমানে তার বর্ষিক আয় সহ নিজের মোট সম্পদ আছে ৪১ কোটি ৪৭ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৭ টাকার।

বার্ষিক আয়:

এবারের হলফনামা থেকে জানা গেছে তার বার্ষিক আয় আগে থেকে বেড়েছে প্রায় ২৩৬ গুণ! এবার কৃষি খাত থেকে তার বার্ষিক আয় ৮৫ হাজার টাকা। মাছের ঘের ও স্টক ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক আয় ৮ কোটি ৮৯ লাখ ৯১ হাজার ৬১৮ টাকা। এছাড়া পরিবহন, কনস্ট্রাকশন, ফিলিং ও হারবাল সার্ভিস লিমিটেড থেকে তার বার্ষিক আয় ১৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ব্যাংক থেকে তিনি বার্ষিক মুনাফা পান ১ কোটি ৩১ লাখ ৮৩ হাজার ২৮৩ টাকা। জাতীয় সংসদের হুইফের ভাতা থেকে তার আয় ২০ লাখ ৩৯ হাজার ৫৩২ টাকা। অর্থাৎ তার মোট বার্ষিক আয় ১০ কোটি ৫৯ লাখ ৬৯ হাজার ৪৩৩ টাকা।

এবার কৃষিখাত থেকে নির্ভরশীলদের আয় ২১ হাজার ও মাছের ঘের ও স্টক ব্যবসা থেকে তার নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। পরিবহন, কনস্ট্রাকশন, ফিলিং ও হারবাল সার্ভিস লিমিটেড থেকে তার নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ২২ লাখ ২২ হাজার ৭৯৬ টাকা। নির্ভরশীলরা ব্যাংক থেকে বার্ষিক মুনাফা পান ১২ লাখ ২৭ হাজার ৬৫৮ টাকা। এছাড়া তার উপর নির্ভরশীলদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সম্মানী ভাতা হিসেবে আয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। মোট আয় ৪ কোটি ২৩ লাখ ৫১ হাজার ৪৫৪ টাকা।

অস্থাবর সম্পদ: ২০০৮ সালে তার শেয়ার ব্যবসায় ছিল মাত্র ২০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর ছিল ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। তার কাছে নগদ ছিল ৯ লাখ ২২ হাজার ৭০৭ টাকা ও স্ত্রীর ছিল ২ লাখ ৩২ হাজার ২৫০ টাকা। আগে তার ব্যাংক হিসাবে মাত্র ২৩ হাজার ২৯৭ টাকা ও স্ত্রীর হিসাবে ১ লাখ ৩২ হাজার ৯২৯ টাকা। নিজের নামে আগে ৬ লাখ ২৬ হাজার ৫০০ টাকার একটি টয়োটা গাড়ি ও স্ত্রীর নামে ১০ লাখ টাকার মাইক্রোবাস উল্লেখ আছে। এছাড়া তার নামে ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৫ লাখ ৬২ হাজার ৪০ টাকা ও আসবাবপত্র আছে ৫০ হাজার এবং অন্যান্য আছে ৩ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে আসবাবপত্র ও অন্যান্য মিলিয়ে ছিল ১৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৭৫ টাকা। স্ত্রীর নামে সাড়ে ৭ হাজার ৫০০ টাকার ১৫ তোলা স্বর্ণ উল্লেখ আছে। অর্থাৎ তার আগে মোট অস্থাবর সম্পদ ছিল ২৫ লাখ ৪ হাজার ৫৪৪ টাকা। স্ত্রীর আছে ২৯ লাখ ৯০ হাজার ৫৪ টাকা।  

তবে এবারের হলফনামায় নিজের নগদ আছে ১১ লাখ ৯৫ হাজার ২০১ টাকা ও স্ত্রীর ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫০ টাকা। এবার নিজের ব্যাংক হিসেব ২৩১ গুন বেড়ে হয়েছে ৫৩ লাখ ৯৭ হাজার ১২১ টাকা ৩৬ পয়সা ও স্ত্রীর হিসাবে ২৭ গুণ বেড়ে হয়েছে ৩৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৩৫ টাকা ২৯ পয়সা। এছাড়াও তিনি মধুমতি ব্যাংক লিমিটেডে বিনিয়োগ করেছেন ২০ কোটি টাকা। এছাড়া তার শেয়ার ব্যবসায় আছে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে আছে ৮১ লাখ ৮২ হাজার ৬৬৩ টাকা।

বি এস পি ও এফ ডি আর খাতে আগে কোন বিনিয়োগ না থাকলেও এবার স্ত্রীর নামে আছে ২ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার ৫৬১ টাকা। আগের টয়োটা গাড়ির পরিবর্তে এবার উল্লেখ আছে ৫৮ লাখ ৬৯ হাজার ৬৬৮ টাকার একটি জীপ গাড়ি ও স্ত্রীর রয়েছে ৫০ লাখ ৩৬ হাজার ৯৭৮ টাকার সেলুন ব্যান্ডের একটি গাড়ি।

তার স্ত্রীর স্বর্ণের স্থলে এবার লেখা হয়েছে ৩১ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা। চিংড়ি ঘেরে ও স্টক ব্যবসায় নিজের নামে আছে ৭ কোটি ৯৮ লাখ ৯৫ হাজার ৮১৮ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৫ কোটি ২০ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। এছাড়া তার নামে ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র আছে ২১ লাখ ৮০ হাজার ৪০ টাকার ও স্ত্রীর নামে আছে ১৫ লাখ ৭২ হাজার টাকার। তার বর্তমান মোট অস্থাবর সম্পদ ২৯ কোটি ৫৭ লাখ ৮৭ হাজার ৮৪৬ টাকা। আগে থেকে বেড়েছে প্রায় ১১৮ গুণ!

স্থাবর: ২০০৮ সালে তার কৃষি জমি ছিল মাত্র ৭৬ হাজার টাকার ও স্ত্রীর নামে কোন কৃষি জমি ছিল না। নিজ নামে অকৃষি জমি ছিল মাত্র ৫ লাখ ৭ হাজার ৩৭৫ টাকার ও স্ত্রীর নামে ২ লাখ টাকার। এছাড়া যৌথ মালিকায় খুলনায় ৫৯ হাজার ১৫০ টাকা মূল্যের একটি গুদামঘর ও গ্রামের বাড়িতে একটি পৈত্রিক দালান ছিল। আগে ছিল ৬ লাখ ৪২ হাজার ৫২৫ টাকা।

বর্তমানে নিজ নামে কৃষি জমি আছে ৬ হাজার টাকার ও স্ত্রীর নামে ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৮৪৮ টাকার। অকৃষি জমি নিজ নামে ৭৯ লাখ ৫২ হাজার ৯১০ টাকার ও স্ত্রীর নামে ৩৩ লাখ ৩১ হাজার ৮০ টাকার। এছাড়া নিজ নামে ৯৩ লাখ ৪০ হাজার ৬৬৮ টাকায় তিন কাঠা জমির উপর একটি দালান রয়েছে তার। মোট আছে ১ কোটি ২৯ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮ টাকা। আগে থেকে বেড়েছে ২০ গুণ!

তবে ২০০৮ সালের হলফনামায় তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের কাছে ৬৮ লাখ ২৪ হাজার ৪২৪ টাকা দেনা উল্লেখ থাকলেও এবার কোন দায় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ নেই।

(ঢাকাটাইমস/ ২৪ ডিসেম্বর/ বিআই/এমএম)