দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। এ কাঁটা কেবল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরই নয়, একই সঙ্গে প্রধান বিরোধীদল বিএনপিরও। এমনকি দেশের মানুষের জন্যও এ এক বিষম কাঁটা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এমন অস্বস্তিকর নির্বাচন আগে আর কখনো হয়েছে বলে মনে পড়ে না। ১৯৯৬ সালে একবার অনেকটা এরকম নির্বাচন হয়েছিল। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি।
সেবারের সেই একতরফা নির্বাচনকেও বেহায়াপনার দিক দিয়ে হার মানিয়েছে এবারেরটা। সেবার ভোট ছাড়াই ১৫৩ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়নি। বিপুল এই সংখ্যা কেবল ১৯৯৬-এর তুলনাতেই নয়, এই ভূখ-ের যে কোনো সময়ের তুলনাতেই একটা বিরল ঘটনা। বিরোধীদলকে দমনের ক্ষেত্রেও এবারের পরিস্থিতি অতুলনীয়। দেশের মানুষ যখন ভোট দিচ্ছে, তখন প্রধান বিরোধী দলের নেতা নিজগৃহে অন্তরীণ। তিনি বাসা থেকে বের হতে পারছেন না। তার বাসায় সকলকে ঢুকতেও দেয়া হচ্ছে না। দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা হাসপাতালে। অদ্ভুত এক কারণে অদ্ভুত এক ‘চিকিৎসা’ চলছে তার। বিরোধী দলকে কোনো কথাই বলতে দেয়া হচ্ছে না। যে নেতাই কথা বলছে, তাকেই আটক করা হচ্ছে। বস্তুতপক্ষে সহ্য করা হচ্ছে না কোনো ভিন্নমতকেই। ‘চিকিৎসাধীন’ রাজনীতিক এরশাদের মুখপাত্র হিসেবে দু’-তিন দিন কথা বলেছিলেন ববি হাজ্জাজ নামের এক সুবেশধারী যুবক। কিন্তু ওই দু’-তিন দিনই শেষ। এরপর তাকে পালাতে হয়েছে দেশ ছেড়ে। প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার বাসায় গত শুক্রবার ঢুকতে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সঙ্গে ছিল নিউইয়র্ক টাইমসের দক্ষিণ এশিয়া ব্যুরো চিফ ও পলিটিক্যাল এডিটর অ্যালেন বেরি। পুলিশ তাদেরকে সেখানে ঢুকতে দেয়নি।
বেগম খালেদা জিয়া কেবল বিএনপি’র চেয়ারপার্সনই নন, তিনি জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতাও। তিনি বাসা থেকে বের হতে পারছেন না, তার বাসায় কেউ যেতে পারছে নাÑ কেন? এই প্রশ্নের জবাব সরকার যেটা দিচ্ছে তা রীতিমতো বালসুলভ। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন,বেগম খালেদা জিয়াকে অন্তরীণ বা আটক করে রাখা হয়নি। তাকে কেবল নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে। একই কথা বলছেন, পুলিশের আইজি। কিন্তু সাধারণ মানুষ কি তাদের এই কথা বিশ্বাস করছে? প্রশ্ন হচ্ছেÑ এই নিরাপত্তা কি খালেদা জিয়া চেয়েছিলেন? তিনি কি কাউকে বলেছিলেন যে, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় আক্রান্ত, তাকে এ রকম নিরাপত্তা দেয়া হোক? আর বাড়ির সামনে বালির ট্রাক এলোপাতাড়িভাবে রেখে রাস্তা আটকানোর মাধ্যমে নিরাপত্তার যে নমুনা দেয়া হলোÑ তাকে কি কোনো সুস্থ মানসিকতা বলা যাবে? এরকম অসুস্থ মানসিকতার ব্যক্তি যখন মন্ত্রিত্বের দায়িত্বে থাকেন, তখন পুরো দেশের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিতে পারে।
একই কথা বলা যেতে পারে এরশাদের ক্ষেত্রেও। তিনি বলছেন যে, তার দল নির্বাচন করছে না, সরকার বলছেÑ না জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আছে। দলীয় প্রধান হিসাবে নির্বাচন কমিশনে তিনি চিঠি দিলেন, তার দলের লাঙ্গল প্রতীক কাউকে বরাদ্দ না দিতে, অথচ সে চিঠিকে পাত্তা না দিয়ে নির্বাচন কমিশন ঠিকই অনেককে এই প্রতীক দিয়ে রাখল। এমনকি খোদ এরশাদকেও একটি আসনে লাঙ্গল প্রতীক দিয়ে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঝুলিয়ে রাখল।
এহেন ‘ব্যক্তিত্বসম্পন্ন’ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমেই ‘গণতান্ত্রিক’ এই সরকার আয়োজন করেছে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ যেন জেদ বাস্তবায়নের এক এজেন্ডা।
প্রশ্ন হচ্ছে, তারপরও কেন নির্বাচন করতে হচ্ছে সরকারের? এ ধরনের এক হাস্যকর নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার আসলে কি হাসিল করতে চায়?
কেউ কেউ বলেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যই নাকি নির্বাচনটি করা দরকার ছিল। এ নিয়ে হয়ত অনেক তাত্ত্বিক আলোচনা করা যায়। প্রশ্ন তোলা যায় সংবিধানকে এভাবে সংশোধন করার নৈতিক ভিত্তি নিয়েও। আবার ৫ই জানুয়ারিই কেন? অবস্থা যে বেশি সুবিধার না, সেটা কিন্তু সরকারি দলের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর কণ্ঠেও উচ্চারিত হচ্ছে। তারা বলছেন, এই নির্বাচন নাকি কেবলই নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। নির্বাচনের পরপরই শুরু হতে পারে একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা। আলোচনায় ঐকমত্য হলে, এই সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন করা যাবে।
যদি কেবল নিয়মরক্ষার জন্যই নির্বাচন করতে হয়, তাহলে ৫ জানুয়ারিতেই স্থির থাকতে হলো কেন? সেটা তো ২৩ জানুয়ারিতেও হতে পারত। তাহলে আলোচনার জন্য হাতে আরও কিছু সময় পাওয়া যেত। আবার প্রশ্ন উঠতে পারে, সময় পেলেই কি আলোচনা হতো, সফল আলোচনা হতো? বেচারা তারানকো চেষ্টা তো কম করেননি। আসলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের সদিচ্ছা দুই নেত্রীর মধ্যে কতটা আছেÑ সেটা বলা মুশকিল।
অনেক আওয়ামী সমর্থক বলে থাকেন, শেখ হাসিনা তো ফোন করেছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়া তখন যে ভাবটা দেখালেন, তখনই তো বোঝা গিয়েছিলÑ আলোচনা করে কিছু হবে না। একথা হয়ত সত্য, ফোনালাপে খালেদা জিয়ার অনমনিয়তা আলোচনার জন্য সহায়ক ছিল না। বিষয়টি তারাও হয়তো উপলব্ধি করে থাকবেন। আর তাই, পরে আলোচনার জন্য তাদের মধ্যে যথেষ্ট ইচ্ছা দেখা গেছে। এটাকে আবার বিরোধী দলের দুর্বলতা বিবেচনা করেছে সরকারপক্ষ। তারা এবার আর সাড়া দেয়নি।
দু’পক্ষের এই মনোভাব আর আচরণের মধ্যে আর যা-ই হোক দায়িত্বশীলতা কিছুমাত্র ছিল বলে দাবি করা কঠিন। উভয়পক্ষই নিজেদের ইগো নিয়ে ব্যস্ত ছিল। তারা দেশের কথা, দেশের মানুষের কথা ভাবেননি। এই মনোভাব, এই আচরণ প্রত্যাশিত নয়। রাজনীতিবিদরা এতটা ব্যক্তি বা আত্মকেন্দ্রিক কেন হবেন?
বলা হচ্ছে, নির্বাচনের পরে নাকি আবার আলোচনা হবে। কি হাস্যকর কথা। আলোচনাই যদি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে, তাহলে সেটা আগে কেন নয়? সময় কি ছিল না আরও। আমি নিজে সংবিধান বিশেষজ্ঞ নই। তবে আজকাল বিভিন্ন টেলিভিশনের টকশো আর পত্রপত্রিকার নিবন্ধ থেকে জেনেছি, এই সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ৯০ দিন সময় ছিল। তাহলে সময় ছিল না, এমনটি যারা বলেন, তারা আসলে ওই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী গোত্রেরই মানুষ।
নির্বাচন নিয়মরক্ষারই হোক, আর নিয়ম তৈরির জন্যই হোক আয়োজনে কিন্তু কোনো ত্রুটি রাখা যাবে না। বরং যে নির্বাচনের দিকে কারও তেমন নজর নেই, সেখানে অপব্যয় আর অপচয়ের (আইনগত ঝামেলায় পড়তে চাই না বলে ‘লুটপাট’ শব্দটা ব্যবহার করলাম না) সুযোগও থাকে বেশি। এবারও হয়েছে তাই। সব দলের অংশগ্রহণের যখন নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা হয়, তখন এর বাজেট ছিল ছয়শ’ কোটি টাকা। এখন দেখা যাচ্ছে ১৫৩ আসনের বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় অর্ধেকের বেশি আসনেই আর নির্বাচন হচ্ছে না। সাধারণ গণিত বলে, ব্যয়ের পরিমাণও তাহলে আনুপাতিক হারেই কমে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। সাধারণ মানুষের গণিত নয়, এখানে নির্বাচন কমিশনীয় হিসাব প্রযোজ্য হয়েছে। সম্ভাব্য ব্যয় সেই ছয়শ’ কোটি টাকাই রয়ে গেছে। অনেক হিসাব-নিকাশ করেও তারা এর থেকে কমাতে পারেননি।
নিয়মরক্ষার নির্বাচনের যারা প্রবক্তাÑ তাদেরকে যদি দেশের আম জনতাদের একজনও প্রশ্ন করেন এই ৬০০ কোটি টাকা কি আপনার বাপের বাড়ি থেকে পেয়েছেন? আমাদের কষ্টার্জিত অর্থ এভাবে ‘নিয়মরক্ষা’র নামে অপচয়ের অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে? জানা কথা, এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব নয়। বরং এ ধরনের বেয়াড়া প্রশ্ন করার অপরাধে তাকে শাস্তিযোগ্য বলে বিবেচনা করা হতে পারে।
যদি ধরেও নিই, নিয়মরক্ষার জন্য, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে, নির্বাচনের নামে এ ধরনের একটা অপচয় জরুরি ছিল; তার পরও কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়। প্রশ্ন উঠতে পারে, নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি কি দাড়াবে? সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার নামে আমরা কি একটা ধারাবাহিক গ-গোলের মধ্যে পড়ে যাব না?
একথা ধরেই নেয়া যায়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যারা নেত্রীর আশীর্বাদে এমপি হয়ে যাবেন, তাদের সেই চেষ্টা বা আকাক্সক্ষাকে কোনোভাবেই অসাংবিধানিক বলা যাবে না। বরং তাদেরকে সরে যেতে বলাটাই হয়ে দাঁড়াবে অসাংবিধানিক। তখন আবার বিরোধী দল লিপ্ত হবে ‘অসাংবিধানিক’ আন্দোলনে। আর নতুন সরকার জান লড়িয়ে দেবে সংবিধান সমুন্নত রাখতে।
কিন্তু একটা বিষয় আমি কিছুতেই বুঝি না। গদিতে আসীন হতে পারাটাই কি সব? আপনি ছলে বলে কৌশলে (যা এখন হচ্ছে) ক্ষমতা দখল করলেন, মন্ত্রী হলেন, তাহলেই কি আপনি সব পেয়ে গেলেন? ওই চেয়ারে টিকে থাকতে হবে না? দেশ চালাতে হবে না? গায়ের জোরে কি ঝড় থামানো যায়? বজ্রপাত? মানুষের মনে যে তীব্র ঘৃণা থাকে, তাকে উপেক্ষা করবেন কিভাবে?
এসব না হয় তাত্ত্বিক কথা। কিন্তু বাস্তবতার কথাও কি ভাবছে কেউ? যে যা-ই বলুন না কেন, একথা মানতেই হবে বাংলাদেশ একটি গরিব দেশ। বিদেশের অনুদান কিংবা ঋণের ওপর নির্ভর করে চলতে হয় আমাদেরকে। মুখে যত বড় বড় কথাই বলি না কেন, বাস্তব অতো সহজ নয়। পদ্মা সেতু নিজেদের টাকাতেই বানিয়ে ফেলবÑ এমন হুঙ্কার তো কম শুনিনি। কিন্তু হয়েছেটা কি? একটা পিলারও তৈরি করা যায়নি। আমরা এখন একটা গ্লোবাল ভিলেজের মধ্যে আছি। এখানে ‘একা একা’ চলা সম্ভব নয়। অনেকেই চেষ্টা করেছে, পারেনি। আসলে এটা পারা যেমন সম্ভব নয়, তেমনি উচিতও নয়।
এখানে যে কেবল ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা যুক্তরাষ্ট্রের কথাই যে বলা হচ্ছেÑ তা নয়। এ পর্যন্ত কোনো দেশ কি পাওয়া যাবে, যে কিনা বাংলাদেশের এই নির্বাচনকে প্রশংসা করেছে। এমনকি যে ভারতের কথা বলাবলি হয়ে থাকে, তারা নাকি আওয়ামী লীগ সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিচ্ছে, সেই ভারতও কি এ পর্যন্ত একবারও প্রকাশ্যে এই নির্বাচনকে ‘গ্রহণযোগ্য’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে? যাকে কেউ মানছে না, তাকে জোর করে মানাতে যাওয়া কেন?
বাইরের দেশগুলো যদি নির্বাচনকেই মেনে না নেয়, তাহলে এই সরকার কিভাবেই বা তাদের কাছে সাহায্যের জন্য যেতে পারবে? আশা করতে পারবে বিদেশি বিনিয়োগের? বিদেশের কথা যদি বাদও দিই, দেশের অভ্যন্তরের কথা কিভাবে উপেক্ষা করা যাবে? নির্বাচন হয়ে গেলেই কি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে? বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি কি তখন শেষ হয়ে যাবে? সরকার সমর্থকরা হয়ত বলবেন, বিরোধী জোট তো হরতাল অবরোধ দিয়েই যাচ্ছে, তাতে কি রাস্তায় যানবাহন চলছে না? তাদের এই বক্তব্য হয়ত একেবারে ভুল নয়। রাজধানীতে ইদানীং হরতাল কিংবা অবরোধকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না জনগণ। দিনের পর দিন রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে অনেক কিছুই হয়ত গুরুত্ব হারিয়েছে, পানসে হয়ে গেছে। হরতালের মধ্যেও ঢাকা মহনগরীতে মাঝেমধ্যে ট্রাফিক জ্যাম দেখা যায়। কিন্তু এ দৃশ্য থেকে আত্মতৃপ্তির কোনো সুযোগ নেই। হরতাল কিংবা অবরোধ যত শিথিলই হোক না কেন, তাকে কিন্তু কোনোভাবেই স্বাভাবিক বলা যাবে না। দূরপাল্লার রাস্তায় এখনও যান পরিবহন স্বাভাবিক নয়, এ ধরনের কর্মসূচি থাকলে স্বাভাবিক হবেও না। ফলে এখনই থমকে গেছে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা। রফতানি বাণিজ্য নেই বললেই চলে। মুখ থুবড়ে পড়েছে অর্থনীতি। এখনই এই অবস্থা, নির্বাচনের পর এটা যদি আরও দীর্ঘমেয়াদি সময়ের জন্য হয়, কি ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব হবেÑ ভাবা যায়?
এতসব আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যে প্রশ্নটি অবধারিত তাহলো¬Ñ সমাধানের পথটা কোথায়? আসলে এটিই এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি প্রশ্ন। কার কারণে এই উদ্ভট জটিলতার উদ্ভব হলো, শেখ হাসিনা তার নিজের সুবিধার জন্য এভাবে সংবিধান সংশোধন না করলেও পারতেন, খালেদা জিয়া আলোচনার আমন্ত্রণ পেয়েও তা গ্রহণ না করার গোয়ার্তুমি না দেখালেই ভালো হতোÑ এসব নিয়ে অন্তহীন আলোচনা করা যায়। কিন্তু এই এখন, তারও চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছেÑ ভয়ঙ্কর এই খাদ থেকে বের হয়ে আসতে পারা। সেদিন আমার এক সহকর্মী এ প্রসঙ্গে মোক্ষম একটা প্রশ্ন করলেন। বললেনÑ আচ্ছা ধরা যাক, শেখ হাসিনা তার ভুলটা বুঝতে পারলেন। বুঝতে পারলেনÑ এভাবে সংবিধান সংশোধন করাটা তার ঠিক হয়নি। ভুলটা উপলব্ধি করে এখন তার সংশোধন করতে চান। এখন যদি তিনি বিরোধী জোটের দাবি মেনে নেন, পুরো দেশের পরিস্থিতি কি দাঁড়াবেÑ একবার ভাবতে পারেন? বিজয় হয়ে গেছে বিবেচনা করে বিএনপি-জামায়াত ঝাঁপিয়ে পড়বে সারাদেশে। ২০০১ সালে কি হয়েছিল, তা তো আমরা ভুলিনি। এই প্রতিহিংসার কাজটা বিএনপি-জামায়াত যে কতটা নির্মমভাবে করতে পারে, তখন সেটা দেখা গেছে। আর জামায়াত এখন আরও বেশি জঙ্গি, আরও বেপরোয়া। ফলে পুরো দেশে একটা রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে।
সহকর্মীর আশঙ্কাকে একেবারে উড়িয়ে দেয়ার মতো জোর কিন্তু আমি আমার কণ্ঠে খুঁজে পাইনি। এ আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। একে মাথায় রেখেই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। মনে রাখতে হবেÑ যতই সময় যাবে, সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকবে।
ইমেইল: [email protected]
(ঢাকাটাইমস/৭জানুয়ারি/জেএস)