logo ১৪ মে ২০২৫
এবিএম মূসার প্রথম জানাযা সম্পন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
০৯ এপ্রিল, ২০১৪ ১২:০২:৪৬
image

ঢাকা: প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা আর নেই। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে,  তার প্রথম জানাযা বাদ মাগরিক মোহাম্মদপুরে ইকবাল রোডে অনুষ্ঠিত হয়েছে।  আর আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ১২টা থেকে প্রেসক্লাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। বাদ জোহর তৃতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হবে।


বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক এবিএম মুসার বয়স হয়েছিলো ৮৩ বছর। গতকাল মঙ্গলবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকালই পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর রোগমুক্তির কামনা করে দোয়া চাওয়া হয়। আজ বুধবার বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক বিশেষ দোয়া মাহফিলেরও আয়োজন করেছিল প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে। কিন্তু তার আগেই এই প্রবীণ সাংবাদিক চলে গেলেন না ফেরার দেশে। প্রবীণ এ সাংবাদিকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।


এবিএম মুসার বর্ণাঢ্য কর্মজীবন স্মরণ করে তাকে দেশের সাংবাদিকতায় উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে অভিহিত করেন রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এবিএম মুসার অমূল্য অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার মৃত্যু দেশের সংবাদপত্র ও সংবাদ মাধ্যমের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

রাষ্ট্রপতি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্য, হাজার হাজার বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাংখীর প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মুসার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি এক শোকবার্তায় বলেন, দীর্ঘ সাংবাদিক জীবনে মরহুম এবিএম মুসা বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়ে ছিলেন। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার জগতে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

প্রধানমন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।


এর আগে এবিএম মূসার পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি অনেক দিন ধরেই অসুস্থ। গত ২৯ মার্চ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে তাঁকে কয়েকবার হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণকেন্দ্রে নেওয়া হয়।


সোমবার রাতে অবস্থা আরও খারাপ হলে এবিএম মূসাকে লাইফসাপোর্টে নেয়া হয়ে।



পরিচিতি: তিনি একাধারে একজন সাংবাদিক, সম্পাদক ও কলামিস্ট। তিনি দীর্ঘকাল ইংরেজী দৈনিক বাংলাদেশ অবজার্ভার-এর বার্তা সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান সম্পাদক-এর দায়িত্ব পালন করেছেন।


জন্ম: এ বি এম মূসা জন্মগহণ করেন ১৯৩১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে।


ক্যারিয়ার: এবিএম মূসা ১৯৫০ সালে দৈনিক ইনসাফের মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। একই বছরে তিনি ইংরেজি দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারে যোগ দেন। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান অবজারভারে রিপোর্টার, স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় সরকার পাকিস্তান অবজারভার বন্ধ করে দিলে তিনি সংবাদে যোগ দেন।


মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিবিসি, সানডে টাইমস প্রভৃতি গণমাধ্যমের সংবাদদাতা হিসেবে রণাঙ্গন থেকে সংবাদ পাঠাতেন এবিএম মূসা। স্বাধীনতার পর তিনি বিটিভির মহাব্যবস্থাপক, মর্নিং নিউজের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।



(ঢাকাটাইমস/৯এপ্রিল/জেএস/ এআর / ঘ.)