logo ০২ মে ২০২৫
ট্যাক্সিক্যাবের ভাড়া অনেক কম রাখা সম্ভব
মহিউদ্দিন মাহী, ঢাকাটাইমস
১০ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০৮:৩৩
image


ঢাকা: রাজধানী ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা পৃথিবীর নিকৃষ্টদের একটি, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই পরিবহন বিশেষজ্ঞদেরও। গণপরিবহন বলতে আছে বাস আর অটোরিকশা। মাঝে একবার ট্যাক্সিক্যাব নামানো হলেও উধাও হয়ে গেছে। সরকার নতুন করে ট্যাক্সিক্যাব নামানোর ঘোষণা দিয়েছে পয়লা বৈশাখ থেকে। কিন্তু এসব গাড়ির যে ভাড়া নীতিগত অনুমোদন করেছে মন্ত্রণালয়, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।  অবশ্য যোগাযোগমন্ত্রী বলছেন, ভাড়া এখনো চূড়ান্ত হয়নি, যাত্রী আর ব্যবসায়ী-দুই পক্ষের স্বার্থই দেখবে সরকার।  



বিআরটিএ জানায়, তমা কনস্ট্রাকশন এবং সেনা কল্যাণ ট্রাস্টকে প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা মহানগরে ২৫০টি করে ৫০০টি ট্যাক্সিক্যাব নামানোর অনুমতি দেওয়া হয়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত টয়োটা প্রিমিও, এলিয়ন ও এক্সিও গাড়িগুলো হবে সর্বনি¤œ ১৫০০ সিসির। দাম ১৮ থেকে ২৬ লাখ টাকা। এবার গাড়িগুলো যাত্রীদের জন্য হবে বেশ আরামদায়ক। আর নির্ধারিত ভাড়া এবং যাত্রীদের ইচ্ছামতো গন্তব্যে যাবে গাড়িগুলো।



চুক্তি অনুযায়ী তমা কনস্ট্রাকশন নামাবে মোট ২৫০টি গাড়ি। এগুলো চলবে ঢাকা ও এর আশপাশে। আর সেনা কল্যাণ ট্রাস্ট নামাবে ৪০০টি। এর মধ্যে ঢাকা ও আশপাশে আড়াইশটি এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে চলছে ১৫০টি। পয়লা বৈশাখ তমা ১৯টি এবং সেনা কল্যাণ ট্রাস্ট ২৮টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ক্যাব নামাবে।

 

বিআরটিএ দাবি করেছে, প্রচলিত পদ্ধতিতে বস্তুনিষ্ঠ ব্যয় বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই ট্যাক্সিক্যাবের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় অনুমোদিত হয়েছে। তবে পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নীতিগত অনুমোদনে যে ভাড়া ঠিক করা হয়েছে, এর চেয়ে ভাড়া আরও কম নেওয়া সম্ভব।



জানতে চাইলে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এন সিদ্দিক বলেন, ‘যদিও ভাড়া বাড়ানোর হারটা বেশি হয়েছে। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা হচ্ছে ভাড়া কম হলে তা বাস্তবায়ন করা যায় না। এবার সেটা সম্ভব হবে।’



ভাড়া নিয়ে বিতর্ক

আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন ট্যাক্সিক্যাবে (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) যাত্রীদেরকে প্রতি কিলোমিটারের জন্য ভাড়া দিতে হবে ৩৪ টাকা করে। তবে আর প্রথম দুই কিলোমিটার বা এর কম দূরত্বের জন্য দিতে হবে ১০০ টাকা। এ ছাড়া রাস্তায় আটকে থাকলে প্রতি মিনিটের জন্য দিতে হবে আট টাকা করে।



প্রস্তাবিত ভাড়ায় মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে মতিঝিল শাপলা চত্বরে যেতে সাড়ে সাতশ টাকা লাগবে। বিআরটিএর হিসাবে এই পথের দূরত্ব ১৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এই দূরত্বে ভাড়া আসে ৬৩৭ টাকা। ১৫ মিনিট যাত্রাবিরতি ধরলে ভাড়া হবে ৭৬৪ টাকা।



নন-এসি ট্যাক্সিক্যাবের জন্য প্রথম দুই কিলোমিটারের ভাড়া ৫০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। পরবর্তী প্রতি কিলোমিটার ১২ টাকার বদলে ২০ টাকা হচ্ছে। প্রতি দুই মিনিট যাত্রাবিরতির জন্য তিন টাকার স্থলে পাঁচ টাকা দিতে হবে। এক-চতুর্থাংশ কিলোমিটারের ভাড়া তিন টাকার বদলে পাঁচ টাকা। নন-এসি ট্যাক্সিক্যাবে মিরপুর ১০ নম্বর থেকে মতিঝিলের ভাড়া হবে প্রায় ৪৫০ টাকা।



ভাড়া সংক্রান্ত বিআরটিএর বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে ট্যাক্সিক্যাবের নতুন ভাড়ার হারও নির্ধারণ করা হয়েছে।



এশিয়ার বিভিন্ন দেশের তুলনায় ভাড়ার এই হার অনেক বেশি। কলকাতায় প্রথম দুই কিলোমিটারের জন্য বাংলাদেশী টাকায় ভাড়া দিতে হয় ৩১ দশমিক ৬৫ টাকা । পরের প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া হয় ১৫ দশমিক ১৯ টাকা।



মুম্বাইয়ে প্রথম দেড় কিলোমিটারের ভাড়া ২৪ টাকা। পরের প্রতি কিলোমিটারের জন্য দিতে হয় ১৫ দশমিক ৬৩ টাকা। দিল্লিতে সর্বনিম্ন ভাড়া ৩১ দশমিক ৬৫ টাকা। পরের প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ২০ দশমিক ২৫ টাকা। নেপালের কাঠমান্ডুতে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ২৮ দশমিক ৯২ টাকা। কলম্বোতে সর্বনিম্ন ভাড়া ২৯ দশমিক ১৫ টাকা আর প্রতি কিলোমিটারে দিতে হয় ১৮ দশমিক ৬৬ টাকা।



এদিকে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে ট্যাক্সিক্যাবের ভাড়া নীতিগত অনুমোদনের ক্ষেত্রে নানা স্বার্থগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। যে দুটি প্রতিষ্ঠান এই গাড়িগুলো নামানের অনুমোদন পেয়েছে তাদের চাপেই এই ভাড়া ঠিক করা হয়েছে বলে এরই মধ্যে খবর প্রকাশিত হয়েছে। কোম্পানি দুটির কর্মকর্তাদের সাথে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুসম্পর্কের কারণেই এটা হয়েছে বলেও কথা উঠেছে। যদিও ক্যাব কোম্পানির পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।



বাংলাদেশে প্রথম ট্যাক্সিক্যাব নামানো হয় ১৯৯৭ সালে। সে সময় কালো রঙের নন-এসি এবং হলুদ রঙের এসি ক্যাব চালু করা হয়। একাধিক কোম্পানি ট্যাক্সিক্যাব আমদানি করে। এর মধ্যে ক্যাব স্যালিডা, অনুদীপ এবং ক্যাব-এক্স কোম্পানির নামে আমদানি করা হয় খুবই নিম্নমানের ক্যাব। নাভানাসহ দুটি কোম্পানি উন্নতমানের ক্যাব আমদানি করে। বিশেষ করে ২০০২ সালে ক্যাব-এক্স অস্বাভাবিক নিম্নমানের ক্যাব আমদানি করে, যেগুলো বছর ঘুরে আসার আগেই অকেজো হয়ে যায় এবং এর ফলে অসংখ্য ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী সর্বস্বান্ত হন। এরপর নতুন করে আর ট্যাক্সিক্যাব আমদানি করা হয়নি। সে অভিজ্ঞতার আলোকেই মহাজোট সরকারের আমলে একটি বা দুটি নির্দিষ্ট কোম্পানিকে পূর্বনির্ধারিত মানের ক্যাব আমদানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।



ভাড়া অনেক কম রাখা সম্ভব

নতুন ট্যাক্সিক্যাব নামানোর খবরে যারা নগর পরিবহন নিয়ে আশান্বিত হয়েছিলেন এরই মধ্যে ভাড়ার উচ্চহারের খবরে আশা ভঙ্গ হয়েছে তাদের। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি ভাড়ার ট্যাক্সিক্যাব নামলে আমাদের কোনো লাভ হবে না।’



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুব হোসেন ইমরান বলেন, ‘আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ মধ্যবিত্ত শ্রেণির। সুতরাং তাদের কথা মাথায় রেখেই ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ছিল।’     



অর্থনীতিবিদ ও তত্তা¡বধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান বলেন, ‘যদি জনমানুষের নাগালের মধ্যে হয় তাহলে তারা ওই ট্যাক্সিক্যাবে উঠবে। আর যদি নাগালের বাইরে যায় তাহলে উঠবে না। ভাড়া সরকার কত বাড়ালো সেটা বিষয় নয়। মানুষ এটাকে কীভাবে নেয় সেটাই বিষয়। সাধারণ মানুষ যদি ট্যাক্সিক্যাবে না উঠে তখন তারা বাধ্য হয়েই কমাবে। কিন্তু সরকার যেটা ভুল করছে সেটা হলো তারা দাম নির্ধারণ করছে। এটা সরকারের উচিত হয়নি। এটা বাজারের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল।’  



বুয়েটের এআরআই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, ‘মিরপুর-১০ নম্বর থেকে মতিঝিলের ভাড়া তিনশ টাকা হলে সেটা যৌক্তিক। কিন্তু সাড়ে সাতশ টাকা হলে সেটা অবশ্যই নয়।’



এই পরিবহন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এই গাড়ি কি এমন যে, যানজট হলে সেটা উড়াল দিবে? তাহলে কেন এত টাকা নিবে? যত ভালো মানের গাড়িই নামানো হোক না কেন, সেটা যদি জনস্বার্থবিরোধী হয় তাহলে মানুষ গ্রহণ করবে না। বরং এই ধরনের ঘটনায় মানুষের হয়রানি বাড়ে।’



পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, ‘নতুন ট্যাক্সিক্যাবের জন্য যে ভাড়া ধরা হয়েছে সেটা অনেক বেশি বলেই আমার কাছে মনে হয়েছে। তবে আমি কোনো বিশ্লেষণ দিতে পারব না। কাগজপত্র মাত্র হাতে পেয়েছি, সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলতে পারব কত ভাড়া যৌক্তিক। তবে যা ধরা হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম হবে।’



ভাড়া নির্ধারণে কারসাজির অভিযোগ

ট্যাক্সিক্যাব পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান তমা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান মানিক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফরিদউদ্দিন বন্ধু। ফরিদউদ্দিন আবার ট্যাক্সিক্যাব সেবা সংক্রান্ত কমিটির প্রধান। তমাকে দরপত্রের মাধ্যমে এবং সেনা কল্যাণ ট্রাস্টকে আদের আবেদনের ভিত্তিতে ক্যাব চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গাড়ি নামানোর চুক্তির পর ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আতাউর রহমান আর ফরিদউদ্দিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এতে অবদান রেখেছে কি না, সে বিষয়ে এরই মধ্যে উঠেছে প্রশ্ন।

তমা গ্রুপের উপ-মহাব্যবস্থাপক আনিসুর রহমান বলেন, ‘তমা গ্রুপ কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নয়। ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের। আমরা প্রস্তাব করেছি। সে প্রস্তাব মন্ত্রণালয় মানেনি। তারা নিজেদের মতো করে ভাড়া বাড়িয়েছে। আমাদের প্রস্তাবকে পাত্তা দেয়নি মন্ত্রণালয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটাতো গণপরিবহন নয়। এই গাড়িতে সবাই উঠবে না। যাদের সামর্থ্য আছে তারাই উঠবে।’ বাড়তি খরচের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগে ট্যাক্সিক্যাব আনা হতো তিন লাখ টাকায়। আর এখন সেই ট্যাক্সিক্যাব কেনা হচ্ছে ২৮ লাখ টাকায়। ভাড়া তো বাড়বেই।’



তবে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ট্যাক্সিক্যাবের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি একটি প্রস্তাবনা, এটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। জনস্বার্থ বিবেচনায় প্রয়োজনে এ সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।’



তবে ভাড়া বাড়ানোর পেছনে যুক্তিও আছে যোগাযোগমন্ত্রীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে সুদের হার এশিয়ার অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক বেশি। এ সব ট্যাক্সিক্যাবে ট্র্যাকিং সিস্টেম থাকবে। অকটেনে এ গাড়ি চলবে। এগুলো হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এক হাজার পাঁচশ সিসির গাড়ি। তাই এখানে ভাড়াটা একটু বেশি আসবে।’



কম ভাড়ার গাড়ির অভিজ্ঞতাও ভালো নয়

২০০৮ সালে এসি ট্যাক্সিক্যাবের ভাড়া ছিল প্রথম দুই কিলোমিটারের জন্য ৪০ টাকা। পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের জন্য আট টাকা। প্রতি দুই মিনিট যাত্রাবিরতির জন্য এক টাকা। ২০১০ সালে নতুন ট্যাক্সিক্যাব নামানোর কথা বলে ভাড়া বাড়িয়ে প্রথম দুই কিলোমিটারে ভাড়া ছিল ৬০ টাকা, পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারে ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। প্রতি দুই মিনিট যাত্রাবিরতির জন্য ধরা হয় পৌনে চার টাকা। কিন্তু গত তিন বছরে কোনো ট্যাক্সি রাস্তায় নামেনি।



ট্যাক্সিক্যাবের জন্য নির্ধারণ করা ভাড়াকে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। বিআরটিএ বলেছে, ট্যাক্সিক্যাব নীতিমালা অনুযায়ী ১৯৯৮ সালে যে ট্যাক্সিক্যাব নামানো হয়েছিল, তা অত্যন্ত নি¤œমানের এবং সর্বনি¤œ ইঞ্জিন সিসি ছিল ৮০০। ফলে ওগুলো অল্প কিছুদিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। ওই সময় ভাড়া নির্ধারণে ব্যয় বিশ্লেষণ করে ট্যাক্সিক্যাবের দাম ধরা হয়েছিল তিন লাখ টাকা। পরে বিভিন্ন সময়ে ট্যাক্সিক্যাবের মূল্য, যন্ত্রাংশ, মেরামত খরচ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি পেলেও সেই তুলনায় ব্যয় বিশ্লেষণ করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়নি। ২০১০ সালে ট্যাক্সিক্যাব সার্ভিস গাইডলাইন করা হলেও গাড়ি নামানো যায়নি।

(ঢাকাটাইমস/৯এপ্রিল/এমএম/জেএস)