সিলেট: টানা সপ্তম বারের মতো গত রবিবার সুরমা নদীতে সিলেট বিভাগীয় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা-২০১৪ আয়োজন করে বাংলালিংক।
বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উন্নয়ন ও তা সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে নেয়া অব্যাহত কর্মসূচির আওতায় বাংলালিংক এই প্রতিযোগিতায় সহযোগিতা করে থাকে।
নদীমাতৃক বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ নদী। এর মধ্যে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা এদেশের লোক সংস্কৃতির গুরত্বপূর্ণ উপাদান। বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন ধরনের নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা সাধারণত ভাদ্র ও আর্শ্বিন মাসে হয়ে থাকে। প্রতিযোগিতার সময় নৌকা চালকরা সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে আর্শীবাদ চেয়ে একত্রে গান গান।
নৌকাগুলোর নাম তাদের গতি বা ডিজাইনের ভিত্তিতে খুব আকর্ষণীয় হয়ে থাকে যেমন-ঝড়ের পাখি, পক্ষীরাজ, সাইমুন, তুফান মেইল, ময়ূর পক্ষী, অগ্রদূত, দ্বীপরাজ এবং সোনার তরী।
সেই আলোকেই সারা দেশে এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে গঠন করা হয় বাংলাদেশ রোয়িং ফেডারেশন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয়ভাবে অনেকগুলো নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়ে থাকে। তবে সিলেট বিভাগের নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতাটিকে সাধারণত সিলেট বিভাগীয় ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আয়োজনগুলোর একটি বলে মনে করা হয়।
প্রতিযোগিতাটি আয়োজনে সহায়তা করেছে বাংলাদেশ রোয়িং ফেডারেশন ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা। প্রতিযোগিতার সেরা তিন বিজয়ী নৌকা বা দল পরবর্তীতে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
বাংলালিংকের এই উদ্যোগ স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছিল। বয়স, শ্রেণি-পেশা ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থী প্রতিযোগিতাটি উপভোগ করেছেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চেীধুরী, সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসক আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান, সিলেট মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মিজানুর রহমান, সিলেট জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ রোয়িং ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম, বাংলালিংকের সিলেট রিজিওনাল কমার্শিয়াল হেড সৈয়দ লিয়াকত হোসেইন, মার্কেটিং, পিআর অ্যান্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজার ইফতেখার আজম এবং মার্কেটিং পি আর অ্যান্ড কমিউনিকেশন সিনিয়র অ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার খন্দকার আশিক ইকবাল।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার সাজ্জাদুল হাসান। সিলেট বিভাগের সাধারণ মানুষের জন্য এই অনুষ্ঠান ছিল এক মিলনমেলা।
বাংলালিংকের মার্কেটিং ডিরেক্টর সোলায়মান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিগত বেশ কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরে বাংলালিংক দেশের প্রতিটি বিভাগে বেশ কয়েকটি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। নৌকা বাইচ বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক যার উপলব্ধি থেকেই এই প্রয়াসের সঙ্গে আমাদের একাত্মতা।’
তিনি বলেন, ‘এই রকম প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দেরই অনুপ্রাণিত করে না, বরং সেই সঙ্গে লক্ষাধিক মানুষকেও টেনে আনে। যা প্রকারান্তরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও বন্ধন জোরদারে ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই খেলার উন্নয়ন ও তা সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় সম্পৃক্ত হতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত ও গর্বিত এবং আমরা এই সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’
বাংলালিংক বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর; যাদের বর্তমানে ২৯ মিলিয়ন বা দুই কোটি ৯০ লাখেরও বেশি গ্রাহক রয়েছে। এটি নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক ভিমপেলকম লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
(ঢাকাটাইমস/১৮ আগস্ট/এজে)