ঢাকা: ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট, রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভা। এমন সভা কতই হয় বাংলাদেশে, কিন্তু শেষ হতে না পারা সেই জনসভার কথা কখনো ভোলা যাবে না। তখন বিরোধীদলে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও সে সময়ের বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা কেবল শুরু করলেন বক্তব্য। হঠাৎ ওপরের কোনো একটি ভবনের ছাদ থেকে হয় গ্রেনেড হামলা। প্রকাশ্য জনসভায় এ রকমের সন্ত্রাসী হামলায় হতচকিত হয়ে পড়ে নেতা-কর্মীরা। স্পিøন্টারের আঘাতে প্রাণ হারাচ্ছে তারা। এর মধ্যে দুশ্চিন্তা নেত্রীর কিছু হয়নি তো? মুহূর্তেই নিজের জীবনের মায়া ভুলে শেখ হাসিনাকে ঘিরে মানববর্ম তৈরি করেন নেতারা। অস্থায়ী মঞ্চ ট্রাকের নিচে থাকা গ্রেনেডটিরও বিস্ফোরণ হয়নি সৌভাগ্যক্রমে। প্রাণে বেঁচে গেলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
১৫ আগস্টের শোকাবহ ঘটনার পর ২১ আগস্ট আরও একটি কালোদিনে পরিণত হলো বাংলাদেশ। ন্যক্কারজনক হামলার পর ঘটলো আরও মর্মান্তিক ঘটনা। ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করে সে সময়ের চারদলীয় জোট সরকার। হতাহতদের উদ্ধার না করে উল্টো নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ, তাদের হটাতে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। পরে অবিস্ফোরিত গ্রেনেডটিসহ নষ্ট করা হয় প্রায় সব আলামত। তদন্তের নামে করা হয় আরেক নাটক। জজ মিয়া নামে এক হকারকে এই ঘটনায় জড়িয়ে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। পরে প্রকাশ হয়ে যায় পুরো ঘটনা। আসামি করার বিনিময়ে নোয়াখালীতে জজ মিয়ার পরিবারকে প্রতি মাসে টাকা পাঠাত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।
পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পুনঃতদন্ত শেষে আবার শুরু হয় বিচার। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর হয় অধিকতর তদন্ত। এসব ঘটনায় পিছিয়েছে বিচার। একেকটি দিন যায় আর স্বজনহারাদের বুকে তৈরি হয় ক্ষোভ।
প্রকাশ্যে হামলার পর কেটে গেল ১০টি বছর। বিচার শেষ হতে আর কত সময় লাগবে? রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের আনুমানিক হিসাব বলছে, আরও প্রায় বছরখানেক লাগবে রায় হতে। প্রকাশ্যে খুব বেশি আলোচনা না হলেও এই মামলার রায়ের দিকে তাকিয়ে আছে বিরোধীদল বিএনপি।
এই গ্রেনেড হামলা যেমন ঘটনাপরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে রেখেছে অনুঘটকের ভূমিকা, তেমনি এর বিচার পাল্টে দিতে পারে ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতি-প্রকৃতি। কারণ এ মামলার আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, চারদলীয় জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ গুরুত্বপূর্ণ বিএনপি নেতারা।
মামলার রায় বিএনপির অনুকূলে যাবে না প্রতিকূলে যাবে তা নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন এই মামলার রায় বিএনপির রাজনীতির পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশ বেকায়দায় আছে তিনবার দেশের ক্ষমতায় যাওয়া দলটি। কারণ রায় প্রতিকূলে গেলে তারেক রহমানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পড়বে হুমকিতে। অভিযুক্তরা সাজা পেলে ভবিষ্যতে বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানো কতটা সম্ভব হবে তা নিয়েও আছে প্রশ্ন।
গ্রেনেড হামলার পর পর সে সময়ের সরকারের আচরণ আর কিছু ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে এবারের স্মরণ সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি বলেছেন, ‘সে সময়ের সরকারের মদদ ছাড়া এই হামলা করা সম্ভব ছিলো না।’... এই হামলায় বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রীরা জড়িত।’
তবে বিএনপি নেতাদের দাবি, তাদেরকে ঘায়েল করতেই গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের জড়ানো হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আগামী দিনে বিএনপির কর্ণধার তারেক রহমান। বেগম জিয়ার পর দলের ভার তার কাঁধে যাবে। তার নেতৃত্বে আগামী দিনে বিএনপির রাজনীতি চলবে। সরকার সেটা বুঝতে পেরেই এ ধরনের নাটক সাজিয়ে তাকে দেশে ফেরার পথে বাধা সৃষ্টি করতে চাইছে।’
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানকে কঠিন শাস্তি পেতে হবেÑএমন আশঙ্কা থেকেই তিনি দেশে ফিরছেন না। চিকিৎসার নাম করে বিদেশে পড়ে আছেন। দলের সভাপতিম-লীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘২১ আগস্টের ঘটনা এখনো দেশের মানুষের মনে দগদগে হয়ে আছে। খুনিদের বিচার হওয়ার আগ পর্যন্ত এই ক্ষত মুছে যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান যদি অসুস্থই হবে তবে লন্ডন থেকে মালয়েশিয়া, সৌদি আরব ঘুরে বেড়ান কীভাবে?’
গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, ‘হামলার পর তৎকালীন সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ১৫ আগস্টের খুনিরা যেমন ছাড়া পায়নি, তেমনি ২১ আগস্টের খুনিরাও নিষ্কৃতি পাবে না।’
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে কাজ করেছেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির। কারাগারে থাকা জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানের সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় বলেছি বঙ্গবন্ধুর হত্যা এবং তার কন্যা শেখ হাসিনার ওপর উপর্যুপরি হামলা ও হত্যাপ্রচেষ্টা একই সূত্রে গাথা। একই উদ্দেশ্যে একই জায়গা থেকে পরিকল্পনা হচ্ছে, যা বাংলাদেশকে জিয়াউল হকের পাকিস্তান বা মোল্লা উমরের আফগানিস্তানের মতো মৌলবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানোর আগ পর্যন্ত চলবে।’
শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘১৫ আগস্ট বা ২১ আগস্টের তদন্তে জামায়াত আইএসআইর নাম উচ্চারিত হয়নি। আমাদের তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে আইএসআই হচ্ছে গ্রাম্যবধূূর ভাসুরের মতো, যে নাম কখনো উচ্চারণ করা যাবে না। এ ধারা অব্যাহত থাকলে শুধু শেখ হাসিনা ননÑ জাতি ও রাষ্ট্রের জন্য অনেক বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।’
জজ মিয়া নাটকে ‘আষাঢ়ে গল্প’
চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকতে ২০০৪ সালের ওই ঘটনার দিনই পুলিশ বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় একটি মামলা করে। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি)। শুরু থেকেই ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কথিত জজ মিয়ার জবানবন্দি নিয়ে ‘আষাঢ়ে গল্প’ ফেঁদেছিল তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি আবদুর রশিদ ও সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন। সিআইডির এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান তদন্তের ভার পাওয়ার পর তিনিও হেঁটেছেন সাজানো পথে।
ক্ষমতায় থাকতে বিএনপির অনেক নেতা এও বলেছিলেন যে, আওয়ামী লীগ নিজেরাই এ ঘটনা ঘটিয়ে সরকারের ওপর দোষ চাপাতে চাইছে। ঘটনার ১০ মাস পার হলে ২০০৫ সালের ৯ জুন নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বীরকোট গ্রামের বাড়ি থেকে জজ মিয়া নামের এক যুবককে সিআইডি আটক করে। ১৭ দিন রিমান্ডে রেখে জজ মিয়া ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেয়। যাতে জজ মিয়া বলেন, তিনি আগে কখনো গ্রেনেড দেখেননি, গ্রেনেড ও বোমার মধ্যে পার্থক্য তিনি জানেন না। পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে বড় ভাইদের নির্দেশে তিনি অন্যদের সঙ্গে গ্রেনেড মারতে এসেছেন। কারা এই বড় ভাই? জবাবে তিনি বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, জয়, মোল্লা মাসুদ, মুকুল প্রমুখ। এর প্রায় দুই বছর পর ২০০৬ সালে জজ মিয়া নাটকের সব ভ-ুল করে দেন তার মা জোবেদা খাতুন। একটি পত্রিকাকে তিনি বলেন, জজ মিয়া গ্রেপ্তারের পর থেকে সিআইডি তার পরিবারকে মাসে মাসে খোরপোষের টাকা দিয়ে আসত। জজ মিয়াকে রাজসাক্ষী করতে সিআইডির প্রস্তাবের কথাও বলেন জোবেদা।
ঘটনা তদন্তে ২০০৪ সালের ২৪ আগস্ট বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনকে চেয়ারম্যান করে এক সদস্যের একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনও করেছিল চারদলীয় জোট সরকার। সেই কমিশন ১০ দিনের মাথায় সরকারের কাছে ১৬২ পাতার প্রতিবেদন দেয়। যেখানে ২১ আগস্টের ঘটনার পেছনে বিদেশি শক্তির হাত আছে বলা হয়। কিন্তু কোনটি সেই দেশ তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
যেভাবে বেরিয়ে এলো থলের বিড়াল
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মামলাটির পুনরায় তদন্ত হলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বেরিয়ে পড়ে থলের বিড়াল। তদন্তে দেখা, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুর সহযোগিতায় জঙ্গিগোষ্ঠী হরকাতুল জিহাদ-হুজির জঙ্গিরা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে ওই হামলা চালিয়েছিল। মূলত তাদের লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে। চারদলীয় জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের সরাসরি মদদে তদন্তের নামে জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছিল বলেও জানা যায়।
২০০৮ সালের ১১ জুন হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আদালতে দুটি অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল কবিরের জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে হুজি নেতা মুফতি হান্নান, জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ও তার ভাই তাজউদ্দীনসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়। সেই সঙ্গে জজ মিয়াসহ ২০ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এলে মামলাটির অধিকতর তদন্ত করা হয়। ওই হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকা জঙ্গি সংগঠন হুজি নেতা মুফতি হান্নান জবানবন্দি দেন। যেখানে তিনি তারেক রহমান, বাবর, পিন্টু এবং হারিছ চৌধুরীর নামসহ তৎকালীন সিআইডি ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নাম ফাঁস করে দেয়।
পুনরায় তদন্তের ভিত্তিতে সিআইডি ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়। তাতে তারেক রহমান, বাবর, হারিছ চৌধুরী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ আরও ৩০ জনকে আসামি করা হয়। দুই অভিযোগপত্র মিলে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২ জনে। ২০১২ সালের ১৮ মার্চ হত্যা মামলায় ৫২ জনের বিরুদ্ধে এবং বিস্ফোরক মামলায় ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে আদালত বিস্ফোরক মামলায় সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের সাবেক ১১ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেন।
মামলার হালচাল
মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে মামলাটির তদন্ত কাজ শুরুর পর গত আড়াই বছরে মামলা দুটিতে নতুন করে ৩৮ জনের সাক্ষ্য-জেরা শেষ হয়। বাকিদের সাক্ষ্যও ধারাবাহিকভাবে নেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান অবশ্য জানিয়েছেন, মামলা নিজ গতিতেই চলছে। তিনি জানান, শেখ হাসিনাসহ মোট ৪৯১ জনকে সাক্ষী করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অভিযোগপত্র এবং সম্পূরক অভিযোগপত্র মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৯৯ জনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। বাকি সবারই সাক্ষ্য প্রয়োজন নেই। অভিযোগ প্রমাণে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই নেওয়া হবে। এ জন্য বছরখানেক লাগতে পারে।
রেজাউর রহমানের অভিযোগ, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মামলার বিচারকাজ দেরি করাতে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে জেরা করে সময় নষ্ট করেছেন। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া পাল্টা অভিযোগ করেন, সরকার মামলা দুটিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এ কারণে রাজনৈতিক আসামিরা উচ্চ আদালতেও জামিন পাচ্ছেন না।
সম্পূরক অভিযোগপত্রে আসামি যারা
তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, হারিছ চৌধুরী, সাবেক সাংসদ কায়কোবাদ, খালেদা জিয়ার ভাগনে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার, মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আমিন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (বরখাস্ত) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুর রহিম, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি খান সাইদ হাসান ও মো. ওবায়দুর রহমান, জোট সরকারের আমলে মামলার তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান ও এএসপি আবদুর রশিদকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া হুজির ১০ নেতা ও হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফও এই মামলার আসামি।
আসামিদের মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৯ জন পলাতক এবং পুলিশের সাবেক ৬ কর্মকর্তা ও বিএনপিসমর্থিত সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুর রহমান জামিনে আছেন। বাবর, পিন্টু, মুজাহিদসহ ২৬ আসামি কারাগারে আছেন।
তারেকের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
জঙ্গিনেতা মুফতি হান্নান এ মামলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের নভেম্বরে প্রথম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারেক রহমান ও বাবরসহ অন্যদের নাম বলেননি। এরপর ২০১১ সালের ৭ এপ্রিল দ্বিতীয় দফা জবানবন্দিতে তিনি তারেকসহ বাকি রাজনীতিকদের নাম বলেন। সম্পূরক অভিযোগপত্রে বলা হয়, মুফতি হান্নান বনানীর হাওয়া ভবনে গিয়ে তারেক রহমান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, লুৎফুজ্জামান বাবর, হারিছ চৌধুরী, রেজ্জাকুল হায়দার, আবদুর রহিমসহ অন্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবর হামলায় অংশগ্রহণকারীদের প্রশাসনিক সহায়তা ও নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দেন বলে অভিযোগ আনা হয়। আদালতে ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) সাদিক হাসান রুমি সাক্ষ্যে বলেন, রেজ্জাকুল হায়দার বিএনপি নেতা তারেক রহমান ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। বাবরের নির্দেশ পেয়ে ২১ আগস্ট ঘটনার রাতেই উদ্ধার হওয়া অবিস্ফোরিত গ্রেনেড দ্রুত ধ্বংস করে আলামত নষ্ট করা হয়।
সেদিন যা ঘটেছিল
সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার প্রতিবাদে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সমাবেশ ছিল সেদিন। সমাবেশ শেষে সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি মিছিল হওয়ার কথা ছিল। এ শান্তি মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার। মিছিল শুরুর আগ মুহূর্তে ট্রাকের ওপর নির্মত খোলা মঞ্চে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হওয়া মাত্র বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে তাকে লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। বিকট শব্দে একের পর এক বিস্ফোরিত হয় ১৩টি গ্রেনেড। মৃত্যুর জাল ছিন্ন করে প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। তারপরও শেখ হাসিনার গাড়িকে লক্ষ্য করে ১২টি গুলি ছুড়ে দুর্বৃত্তরা। নারকীয় ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন প্রাণ হারায়। আহত হন কয়েক শ নেতাকর্মী। এখনও যাদের অনেকে শরীরে শত শত স্পিøন্টারের তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে দিন পার করছেন।
হামলাকালে শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে গিয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের মাথায় অসংখ্য স্পিøন্টার বিদ্ধ হয়। প্রায় আড়াই বছর অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ এবং দেশ-বিদেশে চিকিৎসার পর ২০০৬ সালের ২৭ নভেম্বর মারা যান তিনি।
‘ওরা মানুষ নয়, পশু’
১৯৭৫ সালে স্বজনহারানোর তিন দশক পর এই আগস্টেই আরেক বেদনাবিধুর অভিজ্ঞতা শেখ হাসিনার। দিনটি এলেই আপ্লুত হয়ে যান তিনি। বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে হামলাস্থলে গিয়ে এবারও আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেনেড হামলার পর হাসপাতালগুলোতে বিএনপিপন্থি চিকিৎসকরা চিকিৎসা পর্যন্ত দেয়নি। পিজি হাসপাতালে সেদিন কোনো রোগীকে ভর্তি করা হয়নি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা মানুষ হত্যা করে তারা মানুষ নয়, মানুষ নামের পশু।’ জিয়া পরিবারকে খুনি আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ বিসর্জন দিতে চায় তারা। খুনিদের স্থান বাংলার মাটিতে হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আহত অনেকের চলাফেরায় এখনো কষ্ট হয়। আমার তখন মনে হয়, আমার জীবনটা নিয়ে যদি তারা বেঁচে থাকত।’
জবানবন্দী
সাক্ষাৎকারে যা বলেছিলেন মুফতি হান্নান
এই সময় প্রতিবেদক
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় হামলার জন্য হরকাতুল জিহাদকে ১২টি গ্রেনেড দিয়েছিলেন সে সময়কার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ওই হামলায় পুলিশ এবং গোয়েন্দারা সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দিয়েছিলেন বাবর। এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন জোট সরকারের শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই তাজউদ্দীনও।
ওই গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন। ২০১০ সালে ঢাকার একটি আদালতে সাক্ষাৎকারটি নেন সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। এই সাক্ষাৎকারের ভিডিও চিত্রটি এই সময়ের কাছে এসেছে।
মুফতি হান্নান জানান, আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা ও জোট সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত নূর চৌধুরীও। এই হামলার আগে মোট চার দফা বৈঠক হয়েছিল বলেও জানান মুফতি হান্নান।
ওই সাক্ষাৎকারে মুফতি হান্নান বাংলাদেশে হরকাতুল জিহাদের জন্ম, এর সঙ্গে তার সম্পৃক্ত হওয়ার কাহিনিও তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনার মাঝামাঝি পর্যায়ে এর সঙ্গে জড়িত হন। তিনি জানান, ১৮ আগস্ট হরকাতুল জিহাদের আমির আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানউল্লাহ কাজল তাকে খবর দিলে তিনি তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে একটি কওমি মাদ্রাসায় যান। সেখানে ছিলেন হরকাতুল জিহাদের প্রধান কমান্ডার জাহাঙ্গীর বদর জান্দালও।
মুফতি হান্নান জানান, হরকাতুল জিহাদের নেতারা তাকে জানিয়েছেন, শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রথম বৈঠক হয় হাওয়া ভবনে। সেই বৈঠকে ছিলেন তারেক রহমান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, আল মারকাজুল ইসলামের নায়েবে আমির আবদুর রশিদও।
মুফতি হান্নান জানান, ওই বৈঠকে তারেক রহমান বলেন, দেশের পরিস্থিতি খুব খারাপ। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা অরাজকতা তৈরি করছে, ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে। জঙ্গিবাদের কথা বলে দেশকে নষ্ট করে দিচ্ছে। তখন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ বলেন, আওয়ামী লীগ ইসলামের বিরুদ্ধেও কাজ করছে। এদের থামাতে কিছু একটা করা দরকার।
মুফতি হান্নান জানান, এরপর লুৎফুজ্জামান বাবর বলেন, এ ক্ষেত্রে দুটি কাজ করতে হবে। প্রথমত, অরাজকতা তৈরির জন্য আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা, নইলে এ দেশ থেকে শেখ হাসিনাকে চিরবিদায় অর্থাৎ শেষ করে দেওয়া দরকার।
এরপর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত নূর চৌধুরী রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার পাশাপাশি শেখ হাসিনার বাড়িতে অথবা আসা-যাওয়ার পথে কিংবা কোনো জনসভায় আক্রমণ করে মেরে ফেলার পরামর্শ দেন। মুফতি হান্নান জানান, শেখ হাসিনার ওপর এই আক্রমণে জনগণের যেন ক্ষতি কম হয় সেদিকে নজর রাখার সুপারিশও করেন নূর চৌধুরী।
এরপর বাবর বলেন, তার কাছে গ্রেনেড আছে। সেটা ব্যবহার করা যায় কি না। জবাবে নূর চৌধুরী বলেন, এটা করা যাবে কিন্তু সে ক্ষেত্রে রাস্তায় নয়, আক্রমণ করতে হবে জনসভায়।
পরদিন আরেকটি বৈঠক হয় বলে জানান হান্নান। তবে বৈঠকটি কোথায় হয় তা বলেননি তিনি। তিনি বলেন, গ্রেনেডের পাশাপাশি রাইফেলও দরকার হবে। সেদিনই ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে হামলার সিদ্ধান্ত নয়। এই অভিযানে পুলিশ এবং গোয়েন্দারা সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দেন লুৎফুজ্জামান বাবর।
মুফতি হান্নান জানান, ওই হামলার আগে তৃতীয় বৈঠকটি হয় মিন্টু রোডে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের সরকারি বাসভবনে। ওই বৈঠকে তারেক রহমান উপস্থিত ছিলেন না। সেদিন বাবর ছাড়াও ছিলেন জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, হরকাতুল জিহাদের আমির আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ, রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী মাদ্রাসার আরিফুল ইসলাম আরিফ এবং মারকাজুল ইসলামের নায়েবে আমির আবদুর রশিদ।
মুফতি হান্নান জানান, সবশেষ বৈঠকটি হয় হামলার তিনদিন আগে। ১৮ আগস্টের ওই বৈঠকটি হয় উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর বাসায়। সেখানে পিন্টুর ছোটো ভাই তাজউদ্দীন ও তার আত্মীয় আবু তাহের ছাড়াও ছিলেন হরকাতুল জিহাদের আমির আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ, প্রধান কমান্ডার জাহাঙ্গীর বদর জান্দাল এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল্লাহ কাজল।
মুফতি হান্নান জানান, বৈঠক চলাকালে তিনটি কালো গাড়ি যায় ওই বাসায়। এর একটিতে ছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর। অন্য দুটি গাড়ি থেকে নামেন আরও দুইজন। হান্নান জানান, বৈঠক চলাকালে একটি সবুজ রঙের ব্যাগ থেকে দুটি প্যাকেট বের করেন বাবর। এর প্রতিটিতে পাঁচটি করে দশটি এবং আরও দুটি খোলাসহ মোট ১২টি গ্রেনেড দেন। এর পরের ঘটনাপ্রবাহ অবশ্য ভিডিওটিতে নেই। মুফতি হান্নানের এই বর্ণনার পর ভিডিওটির সমাপ্তি হয়।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সময় ওই সমাবেশে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াও। তিনি ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফসহ কয়েকজন মানববর্ম রচনা করে শেখ হাসিনাকে বাঁচান। মায়া জানান, সেদিন বারোটার মতোই গ্রেনেড মারা হয়েছিল। এর মধ্যে চারটি ছিল অবিস্ফোরিত।
হামলা থেকে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করে গাড়িতে তুলে দেওয়ার সময় গুলিও করা হয় বলে জানান মায়া। তবে সেটা রাইফেল না কি পিস্তলের তা জানার সুযোগ ছিল না বলে জানান তিনি।
মুফতি হান্নানের জবানবন্দি অনুযায়ী পুলিশ ও গোয়েন্দারা হামলাকারীদের সহযোগিতা করেছিল বলে বাবরের আশ্বাসেরও সত্যতা মেলে বলেও জানান আওয়ামী লীগ নেতারা। সে সময় হামলাকারীদের ধরার চেষ্টা না করে উল্টো আওয়ামী লীগের কর্মীদের ওপর হামলা করে পুলিশ। এই সুযোগে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ করছে আওয়ামী লীগ।
এই হামলার পর অবিস্ফোরিত চারটি গ্রেনেড আলামত হিসেবে না রেখে তা ধ্বংস করে দেয় জোট সরকার। আবার জজ মিয়া নামে একজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও আদায় করা হয়। সে সময় বিচার বিভাগীয় এক তদন্ত কমিটিও গঠন করে দাবি করা হয়, ভারত থেকে এসে একদল লোক এই হামলা করেছে। তখন বিএনপি নেতারা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে এই হামলার ঘটনাকে আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক বলেও দাবি করেছে।
তবে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জজ মিয়াকে মুক্তি দিয়ে মামলাটি পুনরায় তদন্ত করা হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর অধিকতর তদন্তের পর তারেক রহমান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে এই মামলায় আসামি করে পুলিশ।
তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া দাবি করেছেন, এই জবানবন্দির কোনো ভিত্তি নেই। তারেক রহমানকে রাজনৈতিকভাবে শেষ করে দিতেই ২১ আগস্টের ঘটনায় জড়িয়েছে সরকার। এই বিএনপি নেতার দাবি, মুফতি হান্নানকে ১২০ দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে এমন জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে সরকার।
(ঢাকাটাইমস/২৩ আগস্ট/ এইচএফ/ এআর/ ঘ.)