ঢাকা: হতদরিদ্র মানুষের জন্য কাজ করছে এরকম প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমই আছে দেশে ।দরিদ্র্য মানুষের জন্য যেসব এনজিও কাজ করছে তাদের মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক ও আশার মতো অনেক প্রতিষ্ঠানই রয়েছে। তবে এসব বড় বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। হতদরিদ্রদের নিয়ে কাজ করছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়ের একটি বড় প্রকল্প হচ্ছে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প।
এই প্রকল্পটি ইতোমধ্যেই ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে।আগামী পাঁচ বছরে দেশে দরিদ্র্য মানুষের সংখ্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার জন্য কাজ করছে এ প্রকল্প।সরকার হতদরিদ্র মানুষের সহজশর্তে ঋণ দেয়ার জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকও চালু করেছে।এ ব্যাংক চালু হওয়ায় এর লভ্যাংশ সরাসরি এ হতদরিদ্র মানুষ পাচ্ছে।
হতদরিদ্রদের নিয়ে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের পরিচালক ড. প্রশান্ত কুমার রায় কথা বলেছেন ঢাকাটাইমসের সঙ্গে। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবিবুর রহমান।
ঢাকাটাইমস: একটি বাড়ি একটি খামার প্রল্পের মাধ্যমে সারাদেশে কতগুলো সমিতি রযেছে?
প্রশান্ত কুমার: বর্তমানে সারাদেশে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় ৩৭ হাজার ৭০০টি সমিতি গঠন করা হয়েছে।
ঢাকাটাইমস: এ প্রকল্পের উপকারভোগির পরিবারের সংখ্যা কত?
প্রশান্ত কুমার: বর্তমানে এ প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা ২১ লাখ ৬০ হাজার।
ঢাকাটাইমস: প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে উপকারভোগীর সংখ্যা কত?
প্রশান্ত কুমার: এই প্রকল্পে প্রত্যক্ষভাবে উপকারভোগীর সংখ্যা এক কোটির ওপর এবং পরোক্ষভাবে উপকারভোগীর সংখ্যা কয়েক কোটির ওপর।
ঢাকাটাইমস : এ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে কতজনকে?
প্রশান্ত কুমার: ১লাখ, ৩৪ হাজার ৪০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
ঢাকাটাইমস: এ সমিতির সদস্যদের সঞ্চয়ে কত টাকা জমা হয়েছে?
প্রশান্ত কুমার: বর্তমানে এ প্রকল্পের সমিতির আওতায় সদস্যদের ব্যক্তির সঞ্চয় জমা হয়েছে ৫৮৯ কোটি টাকা। এসব টাকা তাদের একাউন্ডে জমা রযেছে।
ঢাকাটাইমস: সদস্যদের মাঝে এপর্ন্ত কত টাকা বোনাস প্রদান করা হয়েছে?
প্রশান্ত কুমার: বর্তমানে এ প্রকল্পের আওতায় কোন সদস্য মাসে ২০০ টাকা সঞ্চয় করলে ২০০ টাকাই বোনাস পান। এ পযন্ত সরকার কর্তৃক দরিদ্র উপকারভোগিদের মাঝে ৫৮৯ কোটি টাকা বোনাস প্রদান করা হয়েছে।
ঢাকাটাইমস: সরকার কর্তৃক ঘূর্ণায়মান তহবিলের পরিমাণ কত দাঁড়িয়েছে?
প্রশান্ত কুমার: সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ঘূর্ণায়মান তহবিলের / সম্পদের পরিমান বর্তমানে ৮১৯ কোটি টাকা
ঢাকাটাইমস: বর্তমানে গ্রামের দরিদ্র জনগনের মোট টাকার পরিমান কত?
প্রশান্ত কুমার: গ্রামের দরিদ্র জনগনের মোট তহবিল দাঁড়িয়েছে ১৯৯৭ কোটি টাকা।
ঢাকাটাইমস: একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে অনলাইন ব্যাংকিং চালু করা হয়েছে সাড়া কেমন?
প্রশান্ত কুমার: অনলাইন ব্যাংকিং চালু করার পর ভালোই সাড়া পাওয়া যাচ্ছে এবং বর্তমানে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১০০ কোটি টাকা।
ঢাকাটাইমস : গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগর পরিমান কত?
প্রশান্ত কুমার: গ্রামীণ অর্থনীতিতে বর্তমানে বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১১৫ কোটি টাকা।
ঢাকাটাইমস: এ প্রকল্পের মাধ্যমে কি ধরনের ক্ষুদ্র খামার গড়ে উঠেছে?
প্রশান্ত কুমার: বর্তমানে এ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি গ্রামে ক্ষুদ্র খামার গড়ে উঠেছে ৭ লাখ ৫৫ হাজার। এর মধ্যে মৎস্য খামার ৯৮ লাখ ২০০টি, হাস-মুরগীর খামার ১ লাখ, ৯৭ হাজার ৮০০টি, গবাদিপশু পালন খামার ২ লাখ, ২ হাজার ৬০০টি, নার্সারী ৪৮ হাজার ৮০০টি। সবজী চাষ ৫২ হাজার এবং আয়বর্ধকর খামার ১ লাখ ৫০ হাজারটি রয়েছে।
ড. রায় আরো বলেন, এক বছরে প্রকল্পভুক্ত পরিবার প্রতি আয় বৃদ্ধি বেড়েছে ১০ হাজার ৯২১ টাকা। প্রকল্প এলাকায় নিম্ন আয়ের পরিবারের সংখ্যা ১৫ শতাংশ থেকে কমে ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া প্রকল্প এলাকায় অধিক আয়ের পরিবারের সংখ্যা ২৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও জানান আগামী ৩-৪ বছরে দেশের বাকি ৪ কোটি দরিদ্র লোককে প্রকল্পভূক্ত করে ২০২১ সালের পূর্বেই দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৫ আগস্ট /এইচআর/এআর/ ঘ.)