স্বাধীনতা স্তম্ভ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের টানাহেঁচড়া
হাবিবুর রহমান, ঢাকাটাইমস
০২ নভেম্বর, ২০১৪ ১৯:৫৬:৫০

ঢাকা: সোহরাওয়াদী উদ্যানে নির্মিত “স্বাধীনতা স্তম্ভ” নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে টানাহেঁচড়া চলছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্তণালয়ের মধ্যে এ টানাহেচড়া শুরু হয়েছে। উভয় মন্ত্রণালয়ই চাইছে স্তম্ভটিকে নিজেদের করে নিতে। তবে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটিই মেনে নেবে দুই মন্ত্রণালয়। এনিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠকও হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ১২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আব্দুস সোবহান সিকদারের সভাপতিত্বে বৈঠক হয়। বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম. এ হান্নান, সংস্কৃতিক সচিব রনজিৎ কুমার বিশ্বাস ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক নীলুফার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
সভার কার্যপত্রে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে “স্বাধীনতা স্তম্ভ” নির্মিত হয়েছে। বর্তমানে এ প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে। অ্যালোকেশন ও বিজনেস অনুযায়ী প্রকল্পটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার।
কার্যপত্রে আরও বলা হয়, “স্বাধীনতা স্তম্ভ” যদি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে দেয়া হয় তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া কার্য়পত্রে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়েল দাবির বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, স্বাধীনতা স্তম্ভ এর প্রকল্প এলাকা ও আশপাশের বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমিসহ ঢাকা শহরে সংস্কৃতি বলয় গড়ে উঠেছে। এজন্য এটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হউক।
সভায় চারটি বিষয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এগুলো হচ্ছে- স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পটি ও আশপাশ এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে গৃহায়ন ও গণপৃর্ত মন্ত্রণালয় কাযকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ জন্য গৃহায়ন ও গণপুর্ত মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রকল্পটির মাটির তলায় নির্মিত স্বাধীনতা যাদুঘরটির দায়িত্ব সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা যায়।
স্বাধীনতা স্তম্ভ মনুমেন্ট এর দায়িত্ব কোন মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে তা প্রধানমন্ত্রীর পরবর্তী নির্দেশনার জন্য উস্থাপন করা হবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নান ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্বাধীনতার স্তম্ভটি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে প্রকল্পটির স্থানেই দখলদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। সুতরাং ঐতিহাসিকভাবেই স্বাধীনতা স্তম্ভ মুক্তিযুদ্ধের অংশ। তাই এটি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়কেই দেয়া উচিত। তবে প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই করা হবে বলে জানান তিনি।
সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিত কুমার বিশ্বাস ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন. স্তম্ভটি সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় আনা হোক। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা নিয়ে সংস্কৃতি বলয় তৈরি হয়েছে। ওখানে আমাদের মন্ত্রণালয়ের আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই এটি আমাদের দিলে দেখভালের সুবিধা হবে। এটি নিয়ে আমরা দুই মন্ত্রণালয় সভা করেছি। সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা নির্দেশ দিবেন তাই হবে। আমরা তার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
(ঢাকাটাইমস/২নভেম্বর/এইচআর/এমএম)