logo ২৮ এপ্রিল ২০২৫
টানা আন্দোলনেও খাঁখাঁ করছে জামায়াতের কার্যালয়!
আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ১১:৫৪:১৬
image

ঢাকা: রাজনীতির সেই চিরাচরিত ধারা এখন আর নেই। সাধারণত আন্দোলন জোরদার হলে রাজনৈতিক দলের অফিসগুলোও সরগরম হয়ে উঠে।


কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এটা চোখে পড়ছে না।গত প্রায় দেড় মাস ধরে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা আন্দোলন কর্মসূচি চললেও দলীয় কার্যালয়গুলোতে দাড়োয়োন ছাড়া আর কিছু দেখা যায়না।


এ ব্যাপারে বিরোধীদলগুলোর একরকম বক্তব্য থাকলেও বাস্তবতা হচ্ছে রাজনৈতিক দলের অফিসগুলো খাঁখাঁ করছে।


গতকাল বুধবার জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয় গিয়ে দেখা গেল একই চিত্র।


রাজধানীর বড় মগবাজারের এই কার্যালয়ে সাতজন নিরাপত্তা কর্মী ছাড়া আর কাউকেই দেখা গেল না।কথা বলে জানা গেল, গত প্রায় তিন বছরের বেশি সময় ধরে এই কার্যালয়টির এই হাল।কোনো রকম রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এই অফিসে হয় না।বছর তিনেক আগে মাঝে মধ্যে দুই চার জন নেতাকর্মীকে দেখা গেলেও গত প্রায় তিন বছর ধরে কাউকেই দেখা যায় না।


রাজধানীর পুরানা পল্টনে জামায়াতের ঢাকা মহানগর ও শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয় রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেই কার্যালয়েও নেই নেতাকর্মীদের আনাগোনা। জামায়াত-শিবির নেতারা অনেকটা আত্মগোপনে থেকেই মাঝে মাঝে দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন। আন্দোলনের ভরা মৌসুমেও দলের কার্যালয় জনমানব শূন্য থাকা নিয়ে কথা বলার জন্য জামায়াতের কোনো নেতাকর্মীকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে কয়েকজনকে ফোন করে তাদের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তাদের কাউকেই পাওয়া যায়নি।


তবে দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীদের বেতন নিয়মিত তাদের ব্যাংক একাউন্টে চলে যাচ্ছে।


বুধবার দুপুর ২টার দিকে বড় মগবাজারের ৫০৫ নম্বরের ওই বাড়ির প্রধান গেটে নক করলে গেট খুলে দেন সিকিউরিটি গার্ড আবদুল মজিদ। মুখে তার খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি। সাংবাদিক শুনে ভবনের ভেতরে নিয়ে একটি চেয়ার দিলেন বসার জন্য। কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।


অফিসে নেতাকর্মীরা আসেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে কেউ এখানে আসেন না। আমরা সাতজন এখানে থাকি। ছয়জন সিকিউরিটি গার্ড দুজন করে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করে থাকি। আর বাকি একজন ২৪ ঘণ্টাই এই অফিসের নিচে থাকে।


তিনি বলেন, নিয়মিত বেতন পাই। কোন ব্যাংক থেকে টাকা তুলেন-এই প্রশ্নের জবাব কৌশলে এড়িয়ে যান নিরাপত্তা কর্মী আবদুল মজিদ।


তিনি জানান, এই কার্যালয়ে জামায়াত-শিবিরের কোনো নেতাকর্মী আসেন না। আগে মাঝে মাঝেই পুলিশ এসে হানা দিতো। কিন্তু এখন আর আসে না। দলের নেতাকর্মীরা কেউ তাদের সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেন না বলেও জানান ওই নিরাপত্তা কর্মী।


জামায়াত অফিসের উল্টো দিকের কয়েকজন দোকানির সাথে এ ব্যাপারে কথা হয়। তারা বলেন, জামায়াতে ইসলামীর অফিসের পাশে দোকান হওয়ায় সারাক্ষণ ভয়ে থাকি, না জানি কোন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ি। তবে অনেক দিন ধরে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের এখানে দেখা যায় না।


তারা জানান, জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রাতে জামায়াত অফিসের সামনে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে আর কোনো ঝামেলা হয়নি। তবে সব সময় অজানা একটি আতঙ্ক কাজ করে বলে জানান ওই এলাকার বাসিন্দারা।


আবদুর রহমান নামে ফুটপাতের এক মাছ বিক্রেতা বলেন, মাছ বেচি, ভাত খাই। কোনো জামায়াত নেতারে চিনি না। আর কৈ, কতদিন ধইরা তো দোকান দিতাছি কাউরে তো দেহি না। আমগো কী? আমরাতো কাম করি আর ভাত খাই। কে জামায়াত আর কে বিএনপি আমাগো দেইহা লাভ আছে?


(ঢাকাটাইমস/ ১৯ ফেব্রুয়ারি /এএ /জেবি /এআর / ঘ.)