আটকে আছে রনির সাংবাদিক পেটানো মামলার বিচার
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ০০:০৮:২৫

ঢাকা: অভিযোগপত্র দেয়ার প্রায় ১০ মাসেও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির বিরুদ্ধে সাংবাদিক হত্যা-চেষ্টার মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়নি। একটি রিভিউ পিটিশনের কারণে তার মামলার মূল নথি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রয়েছে। এজন্য শুনানি শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। আগামী ১৫ এপ্রিল ঢাকা মহানগর মূখ্য হাকিমের আদালতে (সিএমএম) মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ২১ জুলাই শনিবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজায় তৎকালীন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির কার্যালয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তার বক্তব্য নিতে যান বেসরকারি টেলিভিশন ইন্ডিপেন্ডেন্টের দুই ইন্ডিপেন্ডেন্টের দুই সাংবাদিক। এ সময় রনি ও তার সহযোগীরা ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনর সিনিয়র রিপোর্টার ইমতিয়াজ সনি ও ক্যামেরাপারসন মহসিন মুকুলকে মারধর করেন। পরে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
ওইদিন বিকালে ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের সহকারী ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইউনুছ আলী বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই ঘটনায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গোলাম মাওলা রনিকে গ্রেপ্তারও করে। বেশ কিছুদিন জেলে থাকার পরে তিনি জামিনে বের হন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু জাফর ২০১৪ সালের ২৬ জুন ঢাকা মহানগর মূখ্য হাকিমের আদালতে (সিএমএম) তৎকালীন এমপি গোলাম মাওলা রনিকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এরপর রনি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিউ পিটিশন দাখিল করেন। ওই পিটিশনের কারণে মামলার মূল নথি সিএমএম কোর্টে না আসায় আজ পর্যন্ত ওই মামলার অভিযোগ (চার্জ) গঠনের শুনানি সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী মোহাম্মদ ইউনুছ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোরডটকমের সাথে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে মামলার প্রধান ভিকটিম ইমতিয়াজ সনি বর্তমানে কাজ করছেন যমুনা টেলিভিশনে। তিনি ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“ভাই আমি এখন আর ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনে কাজ করি না। তাই ওই মামলার ব্যাপারে কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।”
জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, ওই মামলায় আমরা দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছি। বর্তমানে আদালতে কী হয়েছে তা আমার জানা নেই।
প্রসঙ্গত, পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে ২০০৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে প্রথমবারের মতো এমপি হন গোলাম মওলা রনি। অল্প দিনেই এলাকায় তিনি ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন টেলিভিশনের টকশোতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমানকে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির জন্য দায়ী করে দেয়া বক্তব্যে তিনি ব্যাপক আলোচনায় আসেন। তবে বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের পিটিয়ে তিনি সমালোচিত হন। সবশেষ সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের দুই সাংবাদিককে পিটিয়ে শেষ পর্যন্ত তাকে জেলে যেতে হয়। এ ঘটনার জেরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি আর মনোনয়ন পাননি।
(ঢাকাটাইমস/১০ফেব্রুয়ারি/এএ/জেবি)