logo ২৭ এপ্রিল ২০২৫
ডিসিসি নির্বাচন: তফসিলের আগেই সরব প্রার্থীরা
বিলকিছ ইরানী, ঢাকাটাইমস
১৫ মার্চ, ২০১৫ ০০:২১:০৬
image

ঢাকা: ঢাকার আসন্ন দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা।


রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সর্বত্রই ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড, পোস্টার ও লিফলেটে সয়লাব।


আওয়ামী লীগ থেকে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণের প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই প্রচার কাজ জমজমাট হয়ে উঠেছে।


প্রার্থীরা ঘরোয়া আলোচনাও চালাচ্ছেন বেশ জোরে সোরে।বসে নেই সম্ভাব্য কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরাও।যে যেভাবে পারছেন মাঠে-ঘাটে নিজেদের প্রার্থীতা জানান দিতে কোনো রকম কার্পন্য করছেন না।সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের সঙ্গে নিজের ছবি জুড়ে দিয়ে রঙিন পোস্টার শোভা পাচ্ছে দেয়ালে এখানে সেখানে।


তফসিল ঘোষণার আগে এমন প্রচার-প্রচারণা চললেও আইনের দোহাই দিয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন।


এ নিয়ে নগরবাসীর মনেও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। দেয়াল নস্ট করার জন্য অনেকে এ ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।


নির্বাচন কমিশন বলছেন, তফসিল ঘোষণার আগে আমরা এসব ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারি না। এটা আমাদের এখতিয়ারের বাইরে।


সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কমিশন এ ক্ষেত্রে অনেকটাই অসহায়।তাদের এই অসহায়ত্বের সুযোগে সম্ভাব্য প্রার্থীরা আরও উৎসাহী হয়ে প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা ভোটারদের প্রভাবিত করছেন।তবে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচন কমিশন মনে করলে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।


সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা-২০১০ এর অনুচ্ছেদ ৪- অনুযায়ী ‘কোনো প্র্রার্থী বা তার পক্ষ থেকে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত তারিখের ২১ দিন পূর্বে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে পারবে না’ বলে উল্লেখ আছে।


নগরীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, ডিসিসি দক্ষিণে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে ভোট চেয়ে বা দোয়া চেয়ে পোস্টার, ব্যানার টানিয়েছেন। রমনা থানার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থীর রঙিন পোস্টারে লেখা ‘মো. সাইদ খোকন ভাইকে মেয়র পদে ভোট দিন’। একই পোস্টারে আরেক সম্ভাব্য কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. আবুল বাসারের জন্যও ভোট চাওয়া হয়েছে। আরেকটি পোস্টারে একই ওয়ার্ডে ইদ্রিস আলীও ভোট চেয়েছেন।


উত্তরে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সমর্থনে লড়বেন ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে খ্যাত আনিসুল হক। তার পোস্টারে সয়লাব ঢাকার উত্তরাঞ্চল। ভোট চেয়েছেন তিনিও।


এদিকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেও মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিলবোর্ড শোভা পাচ্ছে। সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসাবে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী সেলিমও পিছিয়ে নেই।


আইন লঙ্ঘনের এ বিষয়টি ইসি কতটুকু নজর দিচ্ছে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাবেদ আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে শুরু হবে আমাদের কার্যক্রম। আমরা দেখবো তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচন সমাপ্ত হওয়া পর্যন্ত কেউ কোনো আইন লঙ্ঘন করছে কিনা। এর আগে পরে যেসব আইন লঙ্ঘন হবে সেগুলোর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যারা এখন প্রচার চালাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে তফসিল ঘোষণার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।


এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) সাখাওয়াত হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, এভাবে প্রচার চালানো আসলে ঠিক না। আইনে তফসিলের আগে প্রচার চালানোর  বিষয়ে ইসির পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে কিছু বলা না থাকলেও ইসি চাইলে এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এটা সম্পূর্ণ তাদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তবে আমাদের সময়ে এরকম প্রচার না চালানোর জন্য ঘোষণা দিতাম।


যারা এভাবে প্রচার চালাচ্ছে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে না বা নমিনেশন বাতিল করা হবে এমন প্রজ্ঞাপন চাইলে ইসি জারি করতে পারে। এটা সম্পূর্ণ ইসির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে।


প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ডিসিসি নির্বাচন হয়েছিল ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল। বর্তমানে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার রয়েছে ৪২ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৬ জন।


(ঢাকাটাইমস/১৫ মার্চ/ইরা/জেবি/ এআর/ ঘ.