নিজামী-মুজাহিদের প্লটের ভাগ্য আপিলেই ঝুলে আছে!
মহিউদ্দিন মাহী, ঢাকাটাইমস
২৭ মার্চ, ২০১৫ ০০:০১:৪২

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে সর্বোচ্চ সাজা পেলেও বহাল আছে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে দেশ সেবার স্বীকৃতি হিসাবে দেয়া সরকারি প্লটের বরাদ্দ।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে গণহত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডের বিরুদ্ধে করা আপিল নিষ্পত্তি না হলে প্লটের বরাদ্দ বাতিল করা খুব কঠিন। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দেশ সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৫ সালে চার দলীয় জোট সরকার তাদেরকে এই বরাদ্দ দেয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার পর অবিলম্বে এই বরাদ্দ বাতিলের দাবি জানায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি।
আর গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঘৃণিত দুই অপরাধীর নামে বরাদ্দ বাতিলের আইনি দিক খতিয়ে দেখছে সরকার।
অভিজাত এলাকা বনানীর একটি প্লটের মালিক যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী। দেশ সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য চারদলীয় সরকার ২০০৫ সালে বদর নেতা নিজামীকে পাঁচ কাঠার এই দামি প্লটটি বরাদ্দ দেয়। একই সময় উত্তরার এক নম্বর সেক্টরে আরেকটি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয় আরেক আলবদর কমান্ডার আলী আহসান মুজাহিদের নামে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) তাকেও প্লট বরাদ্দ দেয় দেশ সেবায় বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসাবে!
চিহ্নিত স্বাধীনতা বিরোধীদের মূল্যবান সরকারি সম্পত্তি বরাদ্দ দেয়া নিয়ে অনেক আগে থেকেই প্রশ্ন ওঠে এবং এ নিয়ে প্রতিবাদ হয়। সর্বশেষ নিজামীর সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসির পর অবিলম্বে এই বরাদ্দ বাতিলের দাবি ওঠে জোরালো ভাবে।
এ সম্পর্কে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিজামী-মুজাহিদকে সরকারি জমি দেয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে দেশ ও জাতির জন্য বিশেষ অবদানের কারণে তাদের জমি দেয়া হয়েছে।
আসলে তো বিষয়টি হয়েছে উল্টো। তারা তো দেশ ও জাতির সর্বনাশ করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের সরকারি সম্পত্তি দেয়া এটাতো আমি মনে করি একটি জঘণ্য অপরাধ।
তিনি বলেন, ‘যারা প্লটের বরাদ্ধ বাতিল করছে না তারা তো মনে হচ্ছে জামায়াতের লোক। তানাহলে তারা কেন বাতিল করছে না। তাদেরকে বিষয়টি সম্পর্কে অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানান শাহরিয়ার কবির।
এদিকে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্য হচ্ছে- নিজামী-মুজাহিদের প্লটগুলো বাতিলের আইনগত দিক সরকার খতিয়ে দেখছে।
তিনি বলেন, তাদেরকে রাষ্টীয় কাজের অবদানের জন্য যে প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছিলো তা সত্য নয়। সেটি অবশ্যই আমরা ফেরত নেয়ার চেষ্টা করবো। তারা দেশের বিরুদ্ধে কাজ করেছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আপিল বিভাগ থেকে চূড়ান্ত রায় আসার আগে প্লট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন হতে পারে।
(ঢাকাটাইমস/২৬মার্চ/এমএম/ এআর/ ঘ.)