ঢাকা: দীর্ঘ তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা আন্দোলন শেষে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি ছাড়াই কার্যালয়ে থেকে বাসায় ফিরে গেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
রবিবার দুটি দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়ে তিন মাস দুই দিন পর নিজের ভাড়া বাসায় ফেরেন।
বলাবলি হচ্ছিল, কার্যালয়ে বসে সরকার বিরোধী আন্দোলনের একটি যৌক্তিক পরিনতি না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়া বাসায় ফিরবেন না। শেষ পর্যন্ত সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার একটি সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি ফিরোজায় ফিরে লেগেন।
এর পর গত তিন মাসের আন্দোলন নিয়ে রাজনীতির মাঠের এই লড়াইয়ের লাভ-ক্ষতির চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। হিসাব-নিকাশ চলছে আওয়ামী লীগের ভেতরেও।
তবে আওয়ামী লীগ নেতারা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন আন্দোলনে খালেদা জিয়া ও তার দল পরাজিত হয়েছেন। এই লড়াইয়ে শেখ হাসিনার প্রাথমিক বিজয় হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েই বেগম জিয়া আদালতে হাজির হয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসায় ফিরে যাওয়াকে রাজনীতির জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. নূহ-উল-আলম লেনিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, আপসহীন নেত্রী এখন আপস করে বাসায় ফিরলেন। আন্দোলনে ফ্লপ হয়ে নিজের জেদাজেদির কাছ থেকে সরে এসে তিনি বাসায় ফিরে গেছেন। এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আশা করি বেগম জিয়া সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ছেড়ে গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসবেন।
দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, এটা আমরা কিভাবে দেখছি সেটা বড় কথা নয়। জনগণ কিভাবে দেখছে সেটা বড় কথা। জনগণ চেয়েছিল তিনি যেন ঘরে ফিরে যান। জনগণের সেই আশার প্রতিফলন হয়েছে। নতুন ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না। ৯১ দিনে যেখানে পারেননি আগামীতেও পারবেন না।
সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমি দুই মাস আগে বলেছিলাম গুলশানের কার্যালয় থেকে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ডেড বডি বের হবে। আজ তিনি নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে বের হয়ে তা প্রমাণ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, বিগত ৯২ দিনে হরতাল নৈরাজ্যের নামে যে অরাজকতা করেছেন এর জন্য খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তারপর এদেশের বিবেকবান মানুষ বিবেচনা করবে তাকে রাজনীতিতে সুযোগ দেওয়া যাবে কি না?
অন্যদিকে মানিক মিয়া এভিনিউতে একটি পদযাত্রায় নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান বলেন, খালেদা জিয়া পরাজিত সৈনিকের মতো বাসায় ফিরে গেছেন। উনি বলেছিলেন, আন্দোলনে চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত তিনি বাসায় ফিরে যাবেন না। কিন্তু এখন পরাজিত সৈনিকের মতো বাসায় ফিরে গেছেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও একই অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার বাসায় ফিরে যাওয়াকে নৈতিক পরাজয় বলে অভিহিত করেছেন।
এর আগে রবিবার পৃথক পৃথক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
(ঢাকাটাইমস/৬এপ্রিল/টিএ/জেবি/এআর/ঘ.)