ঢাকা: সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।তবে ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি চলছে পুরোদমেই। চলছে লাভক্ষতির হিসাবও।
প্রার্থী যাচাই বাছাই শেষে ৩ এপ্রিল দলের পক্ষ থেকে বিষয়টি পরিস্কার করার কথা ভাবা হচ্ছে। এর আগে নির্বাচন নিয়ে আরো হোমওয়ার্ক করতে চায় দলটি।দলটির নীতি নির্ধারকরা ভাবছে-নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না? কারচুপি হলেইবা কতটুকু লাভ হবে দলের? নির্বাচন জয়লাভ করলেই বা কতটুকু লাভ হবে?
তবে আন্দোলন কর্মসূচিতে কিছুটা কাটছাঁট করার মধ্যদিয়ে দলটি নির্বাচনের ব্যাপারে একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, এর বাইরে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেইং ফিল্ড’ তৈরিসহ বেশ কিছু দাবিতে নির্বাচন কমিশনকে দুই/একদিনের মধ্যে চিঠি দেয়া হবে।
বিএনপি নেতা ও তাদের দল সমর্থিত পেশাজীবী নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যেই ব্যানারেই হোক বিএনপি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেবে। প্রস্তুতিও তাই বলছে। ইতিমধ্যে ঢাকা (দক্ষিণ-উত্তর) এবং চট্টগ্রামে মেয়র পদে দলের একাধিক শীর্ষ নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
বিশেষ করে চট্টগ্রামে বিএনপির রাঘব বোয়ালরাতো মনজুরের জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন প্রকাশ্যেই।বিএনপি নেতারা তলে তলে সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থন পাওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালিযে যাচ্ছেন।
চট্টগ্রামে উন্নয়ন আন্দোলনের ব্যানার আর ঢাকায় শত নাগরিক কমিটির ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি প্রায় পাকা হয়ে আছে।
উত্তরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আওয়াল মিন্টু ও চট্টগ্রামে আরেক উপদেষ্টা এম মনজুর আলম মেয়র পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
আর ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির চারজন আর বিএনপিপন্থি একজন শিক্ষক নেতা মেয়র পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
এছাড়া কাউন্সিলার পদে বিএনপি এবং জোটের নেতারা তিন সিটি করপোরেশনে প্রায় সবগুলো ওয়ার্ড থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
এদিকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়, পরাজয় যাই হোক তা নিয়ে অনেকটা ‘ফায়দা’ নেয়ার চিন্তা করছে বিএনপি। দলটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন ইঙ্গিতই পাওয়া যায়।
বিএনপি নেতাদের মতে, অতীত অভিজ্ঞতা বলছে-সরকার সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করবে না। যদি সুষ্ঠু হয় তাহলে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হবে।আর বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হলে সরকারের জনপ্রিয়তা নেই-এমন একটা বিষয় সামনে চলে আসবে। আর সরকার কি সেটা মেনে নেবে?
তবে বিএনপি ভাবছে-যদি নির্বাচনে সরকার কারচুপি করে তাহলে তারা সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন করার একটা সুযোগ তৈরি হবে।আর ঝিমিয়ে পড়া আন্দোলনেও তখন গতি আসবে।
এসব দিক বিবেচনা করে সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার পাল্লাই বিএনপির ভারি। এছাড়া বিএনপি সমর্থিত বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও বিএনপি প্রধানকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য অনুরোধ করছেন। বিশেষ করে ‘শত নাগরিক কমিটি’ এ লক্ষে কাজ করছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে শত নাগরিক কমিটির নেতারা প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপি প্রধান এখনো ইতিবাচক। তবে ১ ও ২ এপ্রিল মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে ৩ এপ্রিল নির্বাচনের বিষয় তার দলের বক্তব্য জানা যাবে।
এদিকে শুরুতে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দ্বিমত ছিল।কিন্তু এখন তিনি আন্দোলন ও নির্বাচন একসঙ্গে চালানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।
ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে মেয়র পদে সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমকে সমর্থন দিয়ে তারপক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে ২০ দল।
বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না শর্তে ঢাকাটাইমসকে বলেন, “বিএনপি নির্বাচনমুখী দল। তাই সিদ্ধান্ত হলে প্রার্থী নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। তবে সরকার দমন পীড়ন বন্ধ না করলে প্রক্রিয়া শুরুর পরও সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।”
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে: জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, “আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না।নির্বাচনের ব্যাপারে অল্প সময়ের মধ্যে স্পষ্ট বক্তব্য জানতে পারবেন ।”
ঢাকাটাইমস/২৯মার্চ/বিএন/এআর/ ঘ.)