ঢাকা: ঢাকা সিটি করপোরেশন (দক্ষিণ) নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির হয়ে লড়বেন মির্জা আব্বাস। দলীয় সমর্থনও চূড়ান্ত।অল্প পরিসরে প্রচারও চলছে তার পক্ষে।
তবে গ্রেপ্তারের ভয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন ঢাকা সিটির সাবেক এই মেয়র।
বলতে গেলে সরকার বিরোধী আন্দোলনের পর থেকেই তিনি রাজপথ থেকে উধাও।
খোকাকে বাদ দিয়ে ঢাকায় সরকারবিরোধী আন্দোলন জমানোর অঙ্গীকার নিয়ে ঢাকা মহানগরের দায়িত্ব কাধেঁ নেয়া বিএনপির এই হাইপ্রোফাইল নেতাই এখন লাপাত্তা।
খোঁজ নেই ঢাকা মহনগর কমিটির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলেরও।আত্মগোপনে থেকেই সিটি নির্বাচনের লড়ছেন। আগামী ৮ এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারে নামবেন প্রার্থীরা।
তাঁর ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় জামিন না নিয়ে প্রকাশ্যে আসতে চাইছেন না আব্বাস। তাই আদালতে যাওয়া, জামিন পাওয়াসহ সার্বিক বিষয়ে সরকার কী আচরণ করে মির্জা আব্বাস তা দেখার অপেক্ষায় আছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি।
কারণ ইতিমধ্যে পুলিশ ঘোষণা দিয়েছে, ফৌজদারি মামলার আসামিরা প্রার্থী হলেও জামিন ছাড়া কেউ প্রচারে অংশ নিলে ছাড় দেয়া হবে না।
আব্বাসের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রে জানা যায়, মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দেয়ার পর থেকে তিনি (আব্বাস) জামিনের বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই।
ওই সূত্রের দাবি, সরকার এখনও হার্ডলাইনে আছে। তাই পরিস্থিতি অনুকূলে না আসা পর্যন্ত মির্জা আব্বাস জামিন নিতে আদালতে যেতে চাচ্ছেন না। কারণ জামিন নেয়ার আগেই গ্রেপ্তার করা হতে পারে, যা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে তিনি।
অন্যদিকে বিএনপির যেসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা আছে তাদের বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
যদিও এর আগে ১ এপ্রিল প্রার্থীদের হয়রানি বন্ধসহ ১০ দফা দাবি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
সোমবার দুপুরে মির্জা আব্বাসের ঘনিষ্ঠ একজন নেতার সঙ্গে সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি ঢাকাটাইমস টুয়েন্টিফোরকে বলেন, “জামিন নেয়ার চেষ্টা চলছে। দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও যোগাযোগ হচ্ছে। কিন্তু সরকার তো হার্ডলাইনে।”
মির্জা আব্বাস কবে জামিন নিতে যাচ্ছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “এখনও সিউর বলতে পারছি না।”
জামিন না হলে কি আত্মগোপনে থেকে নির্বাচন করবেন-জানতে চাইলে ওই নেতা বলেন, “নেতাকর্মীরা নির্বাচন করবেন। নেতা জেলে থাকলে কী নির্বাচন হয় না?”
এদিকে ঢাকায় মেয়র পদে বিএনপির যে তিনজন নেতার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে তারা সবাই দক্ষিণ ভাগের। যদিও দক্ষিণে মির্জা আব্বাসের বিষয়টি অনেকটা চূড়ান্ত। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি।
সেক্ষেত্রে বাকি দুই প্রার্থী বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন ও অর্থ সম্পাদক আবদুস সালাম প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবেন বলে জানা গেছে।
সোমবার দুপুরে ড. আসাদুজ্জামান রিপন এমনই ইঙ্গিত দিলেন।
মির্জা আব্বাসকে প্রার্থী ঘোষণা করলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন কিনা এমন প্রশ্নে সরাসরি উত্তর না দিয়ে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, “সংগঠন করলে কেউ কি সংগঠনের নির্দেশের বাইরে যায়? আমিও যাবো না।”
এসব বিষয় নিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার অনেক বেআইনি কাজ করলেও আমরা আইনের প্রতি আস্থা রাখছি। দেখি কী হয়।”
বিএনপির প্রার্থীরা কবে নাগাদ প্রকাশ্যে আসবেন এবং প্রচারণা চালাবেন সে বিষয়ে তার কিছু জানা নেই বলেও জানান।
(ঢাকাটাইমস/৭এপ্রিল/বিএন/জেবি)