logo ০১ মে ২০২৫
সরব হয়ে উঠছে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, বিনিয়োগকারীদের স্বস্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
২৪ জুন, ২০১৫ ১৪:৫৩:০১
image

ঢাকা: সরব হয়ে উঠেছে পুঁজিবাজারের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। পুঁজিবাজার সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে এ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমে বিনিয়োগকারীদের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।


বর্তমানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মোট ৫৩৫টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি নিয়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কাজ শুরু করেছে। তবে এগুলোর মধ্যে ২৫০টির বেশি সার্টিফেকেট মামলার বিচার প্রচলিত আদালতে হবে। সার্টিফিকেট বাদে অন্যান্য মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে।


বিশেষ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম চালু হওয়ায় স্বস্তি পাচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছেন, এটি পুঁজিবাজারের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো। ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বাজারের জন্য ইতিবাচক হবে। এতে প্রকৃত আসামিদের সঠিক বিচার হবে। দ্বিতীয়বার তারা আবার কারসাজি করার সুযোগ পাবেন না। আর অন্য কেও এসব কারসাজি কেরা থেকে বিরত থাকবেন।


গত ২১ জুন রবিবার পুঁজিবাজার বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। বিচারক ছিলেন হুমায়ুন কবির (বিশেষ জজ)। এদিন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষে ২০১০ সালে দায়ের করা মামলার বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।


২২ জুন আরও দু’টি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল। তবে বাদীপক্ষ উপস্থিত থাকলেও বিবাদীপক্ষের কেউ উপস্থিত না থাকায় ওই মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়নি। মামলা দু’টির মধ্যে একটিতে আসামি হলেন আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ও মো. মোবিন মোল্লা। অন্যটিতে আসামি হলেন এ রউফ চৌধুরী, মশিউর রহমান, সাঈদ এইচ চৌধুরী ও আনু জায়গিরদার।


বিএসইসির ৫৩৫টি মামলার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আছে ১৭টি, হাইকোর্ট বিভাগে ২২১টি, স্পেশাল জজ কোর্ট এবং পরিবেশ আপিল আদালত ঢাকায় একটি, তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা জজ কোর্টে ছয়টি, মহানগর দায়রা জজ কোর্টে নয়টি, মহানগর দায়রা জজ প্রথম অতিরিক্ত কোর্টে তিনটি, মহানগর দায়রা জজ দ্বিতীয় অতিরিক্ত কোর্টে দুটি, মহানগর দায়রা জজ পঞ্চম অতিরিক্ত কোর্টে দুটি, মহানগর সহকারী দায়রা জজ প্রথম অতিরিক্ত কোর্টে একটি, চতুর্থ যুগ্ম জেলা জজ কোর্টে একটি, পঞ্চম যুগ্ম জেলা জজ কোর্টে নয়টি, চতুর্থ সহকারী জজ কোর্টে একটি, নবাবগঞ্জ সহকারী জজ কোর্টে একটি, মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ছয়টি, শ্রম আদালতে (লেবার কোর্ট) দুটি, জেনারেল সার্টিফিকেট কোর্টে ২৫৩টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।


এ ছাড়া ১৯৯৬ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারির মামলার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে একটি, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ৮টি, মহানগর দায়রা জজ এক কোর্টে ৬টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আর ২০০৯-২০১০ সালের শেয়ার কারসাজির বিরুদ্ধে ২০১১ সালে দায়ের করা দুটি মামলা সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।


পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সদস্যরা জানান, বিশেষ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়েছে জেনে খুশী হয়েছি। আমার মতে, যেকোনো দেশের পুঁজিবাজারের জন্য এ ধরনের ট্রাইব্যুনাল থাকা প্রয়োজন। তবে আসামীদের প্রকৃত বিচার হওয়াটা জরুরি।


তারা আরো জানান, এ ট্রাইব্যুনাল সঠিকভাবে বিচারিক কাজ চালিয়ে গেলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে। পাশাপাশি শেয়ারবাজার বিনিয়োগবান্ধব হয়ে উঠবে।


বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও যদি শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলাগুলো বিশেষ আদালতের মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তি করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া যায়, তাহলে বারবার এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের পুঁজিরও সুরক্ষা হবে বলে মত দেন তারা।


বাজার বিশেষজ্ঞরা জানান, পুঁজিবাজার সংক্রান্ত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল শুধুই পুঁজিবাজারের মামলা নিষ্পত্তি করবে, এতে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। এতের বছরের পর মামলা ঝুলে থাকবে না। এমনকী পুরানো মামলাগুলো এ ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি হবে। এছাড়া মামলা ঝুলে থাকে বলে অনেকে মামলা করেন না। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। 


(ঢাকাটাইমস/২৪জুন/এমএন)