logo ০৫ মে ২০২৫
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠি সাড়া দেয়নি ১৪ মন্ত্রণালয়
হাবিবুর রহমান, ঢাকাটাইমস
২৭ জুন, ২০১৫ ০০:১৬:০৮
image

ঢাকা: ২০১৪ সালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে উত্থাপিত প্রকল্পের বাস্তবায়নের অগ্রগতির রিপোর্ট চেয়ে তিন দফায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু সেই চিঠির কোনো উত্তরই দেয়নি ১৪ মন্ত্রণালয়।


প্রথম দফা চিঠি দেয়া হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। ওই চিঠিতে বলা হয়, মার্চে মধ্যে সকল মন্ত্রণালয়কে ডিসি সম্মেলনের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। কিন্তু সেই মার্চ চলে গেছে বেশ আগেই। কিন্তু জমা পড়েনি প্রতিবেদন।


এরপর দ্বিতীয় দফায় মার্চ মাসে ফের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য চিঠি দেয়া হয়। তাতেও কোনো সাড়া মেলেনি।


এর পরে গত এপ্রিল মাসে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মো: শাফায়াত মাহবুব চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মে মাসের মধ্যে ডিসি সম্মেলনে উত্থাপনীয় বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত পাঠাতে বলা হয়েছে।


এরই মধ্যে পেরিয়ে যাচ্ছে জুন মাস। কিন্তু ঘুম ভাঙেনি ১৪ মন্ত্রণা্লয়ের। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।


মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের সম্মেলনে ডিসিরা যেসব বিষয় উত্থাপনে আগ্রহী তার আওতাধীন জেলা থেকে সংগ্রহ ও সমন্বয় করে প্রস্তাবের সফট কপি ই-মেইলে পাঠাতে হবে। তা মন্ত্রণালয়গুলো স্ব স্ব অগ্রগতি রিপোর্ট আকারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে পাঠাতে হবে। জেলা প্রশাসকরা কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদন দিলেও মন্ত্রণালয়গুলো এখনো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে তা পাঠাননি বলে চিঠিতে বলা হয়েছে ।


যে সব মন্ত্রণালয় গত ডিসি সম্মেলনের অগ্রগতি রিপোর্ট মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাননি সে গুলো হচ্ছে, অর্থমন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, ভুমি মন্ত্রণালয়. সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ. রেলপথ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।


গত বছর জেলা প্রশাসক সম্মেলনে যেসব বিষয় কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত ও বাস্তবায়িত হয়েছে সেসব বিষয় প্রস্তাব আকারে না পাঠাতেও চিঠিতে অনুরোধ করা হয়েছে।


গত বছর ডিসি সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বিভিন্ন বিষয়ে ২৪২টি প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসিরা। সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-সচিবদের উপস্থিতিতে এসব বিষয়ে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের গৃহীত উন্নয়নকাজের বাস্তবায়ন নিয়েও মন্ত্রী-সচিবরা ডিসিদের দিকনির্দেশনা  দেয়।


২০১৩ সালের ডিসি সম্মেলনে ৫৩৩টি সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ৪৮৬টি বাস্তবায়িত হয়েছে। অর্থাৎ ৯১ দশমিক ১৮ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি ১৩০টি সিদ্ধান্তের মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ১২৯টি, মধ্যমেয়াদি ১৭২টি সিদ্ধান্তের মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ১৬১টি এবং দীর্ঘমেয়াদি ২৩১টি সিদ্ধান্তের মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে  ১৯৬টি।


প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোশাররফ হোসেন ভুইয়া ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমরা মন্ত্রিপরিষদের চিঠি পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। আমাদের প্রকল্পের অগ্রগতি কম হলেও অন্য মন্ত্রণালয়ের চেয়ে অনেক ভাল। আগামীতে বাকিগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।


ডিসি সম্মেলনে আলোচিত প্রস্তাব ছিল, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে জিকে সেচ প্রকল্পের আওতাভুক্ত ক্যানেলগুলো সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সেই প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়রে সচিব ড. জাফর আহমেদ খান ঢাটাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। কিছুদিন আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে আমাদের চুক্তি হয়েছে। আগামী ৫ বছরের মোট বরাদ্দ থেকে ২ শতাংশ সেচ কাজের ব্যয় করা হবে এবং নদী ড্রেজিং করা হবে। আমাদের মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতিন রিপোর্ট পাঠিয়েছি। তবে কবে পাঠানো হযেছে তা বলেননি তিনি।


(ঢাকাটাইমস/২৭জুন/এইচআর/এআর/ ঘ.)