logo ১৫ মে ২০২৫
ভেজাল শিশুখাদ্য তৈরি, সাতজনের দণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
০৬ অক্টোবর, ২০১৫ ১৯:৪৬:৩১
image

ঢাকা: রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকায় ভেজাল শিশুখাদ্য তৈরি ও বাজারজাতকরণের অভিযোগে কারখানার মালিকসহ সাতজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।


দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন রেভেন ফুড কোম্পানি লিমিটেডের মালিক মো. হারুন অর রশিদ (৩৮), প্রোডাকশন ও বিতরণ ম্যানেজার ত্রিলোক চাকমা (৩৭), প্রোডাকশন ম্যানেজার কামরুন নেছা (২৭), কারখানার হিসাব রক্ষক মো. খাইরুল আলম (২৫), মার্কেটিং ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন (৪০), মোকসেদুল আলম খান (৫০) ও কে. কে. ফুড প্রোডাক্টসের মালিক মো. ফারুক (৪০)।


এ সময় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থ দণ্ড দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজেস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে শুরু করে দুপুর দুইটা পর্যন্ত চলে আদালতের কার্যক্রম।


র‌্যাবের একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে র‌্যাব-২, ঢাকার এর একটি আভিযানিক দল তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের রেভেন ফুড কোম্পানিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় বি.এস.টি.আইয়ের অনুমোদন ব্যতীত, অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে তৈরিকৃত শিশুখাদ্য যেমন বিভিন্ন ধরনের লজেন্স, ললিপপ, মিক্সড ফ্রুট, কিডকো নাট, কিডকো মিল্ক ক্যান্ডি, লাভ ক্যান্ডি, লিচি, কাপ লিচি, চটপটি, ফ্লোরিডা অরেঞ্জ, ম্যাংগো জ্যাম ও প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ টেস্টি স্যালাইন, লাচ্ছা সেমাই, নুডুলস তৈরির সময় এগুলো জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য এক কোটি টাকা। এ সময় ওই কারখানার মালিক হারুন অর রশিদ, প্রোডাকশন ও বিতরণ ম্যানেজার ত্রিলোক চাকমা, প্রোডাকশন ম্যানেজার কামরুন নেছা, হিসাব রক্ষক খাইরুল আলম, মার্কেটিং ম্যানেজার জাকির হোসেন ও মোকসেদুল আলম খানকে আটক করা হয়।


অভিযুক্তরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তারা কয়েক বছর ধরে এই কারখানায় বিভিন্ন ধরনের রং, সেকারিন, বি.এস.টি.আই. অনুমোদন ব্যতীত নিজস্বভাবে শিশুখাদ্য উৎপাদন এবং পোগো মিল্ক ক্যান্ডি, নাজ লিচি ক্যান্ডি, মায়া মিল্ক ক্যান্ডি এসব নাম ব্যবহার করে উৎপাদন ও বি.এস.টি.আই. এর মানচিত্র ব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করে আসছে। শিশুখাদ্যে ব্যবহৃত এসব উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এছাড়া কারখানাটির আশেপাশের পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর। কারখানার মালিকদের এরূপ স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, বি.এস.টি.আই. অধ্যাদেশ ১৯৮৫ (সংশোধনী- ২০০৩) এর ১৯ ও ৩০ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের মালিক হারুন অর রশিদ, প্রোডাকশন ও বিতরণ ম্যানেজার ত্রিলোক চাকমা প্রোডাকশন ম্যানেজার খাইরুল আলম ও জাকির হোসেনকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে দুই মাসের কারাদণ্ড এবং অন্য কোম্পানির লোগো ব্যবহার করার অভিযোগে মার্কেটিং ম্যানেজার মোকসেদুল আলম খানকে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৪০ ধারা মোতাবেক দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড ও কিউ এস কামরুন নেছাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।


অপরদিকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় মঙ্গলবার দুপুর দুইটার সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বি.এস.টি.আই. এর অনুমোদন ব্যতীত অত্যন্ত নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিস্কুট ও কেক উৎপাদন ও বাজারজাত করার কারণে কে. কে. ফুড প্রোডাক্টসে ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময়ে  প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. ফারুককে গ্রেপ্তার করেন। প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে, বি.এস.টি.আইয়ের অনুমোদন ব্যতীত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট, কেক ইত্যাদি বেকারি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছেন। কারখানার মালিকের এরূপ স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, বি.এস.টি.আই. অধ্যাদেশ ১৯৮৫ (সংশোধনী-২০০৩) এর ১৯ ও ৩০ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের মালিক ফারুককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।


র‌্যাবের ভ্রাম্যমান আদালতে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএসটিআইয়ের উপ-পরিচালক ড. মো. দিদারুল আলম ওবিএসটিআইয়ের প্রতিনিধি ফিল্ড অফিসার সিকান্দার মাহমুদ।


(ঢাকাটাইমস/৬অক্টোবর/এএ/জেবি)