logo ২৩ এপ্রিল ২০২৫
ভাই, ম্যাডাম আসবেন কবে...
বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
১৮ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:১৩:৩৪
image

ঢাকা: “ভাই ম্যাডাম  কবে আসবেন?  শুনতেছি আরো দেরি হবে। কোনো খবর আছে-আপনারা তো খবর জানেন।” রবিবার সিপাহী বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনায় এসে প্রতিবেদকের কাছে বিএনপি চেয়ারপারসনের দেশে ফেরার বিষয়ে এমন করেই জানতে চান বাংলা কলেজ ছাত্রদলের কর্মী ইবরাহীম।


শুধু ইবরাহীমই নয়, এমন প্রশ্ন এখন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের অনেকেরই। কারণ দেখতে দেখতে দুই মাস হয়ে গেছে দেশের বাইরে বেগম খালেদা জিয়া। চিকিৎসা শেষ করে কবে দেশে ফিরবেন সেই তথ্যও নেই কারো কাছে। এরইমধ্যে তার দেশের ফেরার ব্যাপারে বেশ কয়েকটি তারিখের কথা দলের পক্ষ থেকে বলা হলেও তার কোনটাই শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়নি।দলটির শীর্ষ নেতারাও এ বিষয়ে অনেকটাই অন্ধকারে।


সাংবাদিকরা জানতে চাইলে প্রায় সবাই একই বক্তব্য দিচ্ছেন। বলছেন, চিকিৎসা শেষ হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি দেশে ফিরবেন। কিন্তু দ্রুত সময়টা কবে তা কেউ বলতে পারছেন না।


এদিকে শুরু থেকেই ক্ষমতাসীন দলের নেতারা দাবি করে আসছেন, খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন না। কেউ বলছেন, লন্ডনে তিনি বাসা ভাড়া করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম বলেছেন, বিদেশে থাকলেও খালেদা জিয়াকে ধরে এনে বিচার করা হবে। আর তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দেশে এলে সরকার কোনো বাধা দেবে না। তবে মানুষ খুনের দায়ে তিনি বিচার এড়াতে পারবেন না।


অন্যদিকে নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই তাকে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী।


খালেদার বিলম্ব, সরকারি দলের নেতাদের বক্তব্য, আদালতের নির্দেশসহ সার্বিক ঘটনা নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।


এরইমধ্যে গুঞ্জন উঠে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লন্ডন সফরকালে তার সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠক হবে। শেষ পর্যন্ত তা গুজবই থেকে যায়।


বিভিন্ন সূত্রের খবর বলছে, খালেদা জিয়ার ফিরতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরে গড়াতে পারে।


অন্য একটি সূত্রের খবর হলো, বিএনপি চেয়ারপারসন পায়ের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ারও সম্ভাবনা আছে। কারণ এর আগে তিনি সেখানে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।


গত ১৫ সেপ্টেম্বর চোখের এবং হাঁটুর চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে তার চোখের অপারেশন হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে লন্ডন বিএনপির এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছেন।


জানা গেছে, চিকিৎসকের কাছে যাওয়া আসার বাইরে তিনি সন্তান ও নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। লন্ডনের কয়েকজন রাজনীতিবিদের সঙ্গে তার সাক্ষাতের সম্ভাবনা আছে শোনা গেলেও আদৌ হয়েছে তাও কারো জানা নেই।


বিএনপির তিনজন নীতি নির্ধারণী ফোরামের সদস্যের কাছে তার দেশে ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কিছুই জানেন না বলে ঢাকাটাইমসের কাছে স্বীকার করেন।


এদের মধ্যে একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আসলে চেয়ারপারসনের ফেরার বিষয়টি হাতেগোনা দুই একজন ছাড়া কেউ জানেন বলে মনে হয় না। তার চিকিৎসা চলছে ঠিক। তবে দলের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়েও তারেক রহমানের বিস্তারিত আলাপ হচ্ছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগেরও চেষ্টা করতে পারেন, তবে আমি নিশ্চিত না।”


বিএনপির কোনো পর্যায় থেকে ফেরার ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে চেয়ারপারসনের দেশে ফেরার বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। তবে তার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল দুই দফায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। যাতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রথমে ১০, পরে ১৬ নভেম্বর ফিরবেন বলে উল্লেখ করেছিলেন। বিমানের টিকেট সম্পন্ন হওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময়ও ইতিমধ্যে পার হয়ে গেছে। দেশে ফেরার জন্য নতুন কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়েছে কিনা জানতে চেষ্টা করলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।


(ঢাকাটাইমস/১৮নভেম্বর/বিইউ/জেবি/এআর/ঘ.)