logo ২২ এপ্রিল ২০২৫
পাঠ্যপুস্তক উৎসব সংশয়ে ফেলছে কেপিএম!
মহিউদ্দিন মাহী, ঢাকাটাইমস
১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:৩৬:৪১
image

ঢাকা: আগামী ২ জানুয়ারি সারা দেশে পাঠ্যপুস্তক উৎসব উদযাপনের দিনক্ষণ ঠিক থাকলেও একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে এখনো শেষ হয়নি বই ছাপানোর কাজ। ফলে সারা দেশে একযোগে পাঠ্যপুস্তক উৎসব উদযাপন নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে।


সরকারি কাগজ কল কর্ণফুলী পেপার মিল (কেপিএম) নির্ধারিত সময়ে কাগজ সরবরাহ না করায় এখনো ২৮ লাখ পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ বাকি আছে।


জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, কেপিএমের সঙ্গে সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন কাগজের চুক্তি করেছে এনসিটিবি। পাঁচ মাস আগে এসব কাগজ সরবরাহ করার কথা থাকলেও এখনো ১৪৭ মেট্রিক টন কাগজ সরবরাহ করা বাকি রয়েছে। বারবার তাগিদ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিটিবির এক কর্মকর্তা ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চুক্তিবদ্ধ দুটি প্রতিষ্ঠানই সরকারি। কেপিএমকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাগজ সরবরাহ করার জন্য বারবার তাগাদা দেয়ার পরও তারা বিষয়টিকে ‍গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফলে আমাদের ভোগান্তির পোহানোর পাশাপাশি ২ জানুয়ারি সারা দেশে একযোগে পাঠ্যপুস্তক উৎসব অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।”


ওই কর্মকর্তা বলেন, সর্বশেষ ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে এনসিটিবিকে সব কাগজ বুঝিয়ে দেয়ার কথা ছিল কেপিএমের। কিন্তু তিন দিন পেরিয়ে গেলেও তারা তা ‍দিতে পারেনি। এখনো ১৪৭ মেট্রিক টন কাগজ আটকে আছে কেপিএমে। এই কাগজে ২৮ লাখ বই ছাপা বাকি।


প্রসঙ্গত, বিনা মুল্যের বই প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী এনসিটিবি বই ছাপানোর জন্য কাগজের একটা অংশ কেপিএমের কাছ থেকে কিনে থাকে। এই কাগজ দেয়া হয় বই ছাপার কাজ পাওয়া বেসরকারি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে।


কেপিএমের সঙ্গে এনসিটিবির চুক্তি হয়েছে সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন কাগজের। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি সরবরাহ করতে পেরেছে তিন হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। বাকি রয়েছে ১৪৭ মেট্রিক টন কাগজ।


এ অবস্থায় কখন কাগজ মিলবে, আর কখন ছাপা হবে বই, আর কখন-ই বা তা উপজেলায় পাঠানো হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। 


এনসিটিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, “সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাগজ নিয়ে চুক্তি হওয়ার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ৩০ হাজার টাকা বেশি দামে কেপিএমের সঙ্গে আমরা চুক্তি করেছি। কিন্তু সেভাবে সেবা পাচ্ছি না। তবে আমরা কেপিএমকে বিভিন্নভাবে বলেছি যাতে তারা দ্রুত  পদক্ষেপ নেয়।”


এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক মোস্তাক আহমেদ ভুঁইয়া ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কেপিএম আমাদের চাহিদা মেটাতে পারেনি। তবে তারা চেষ্টা করছে।  অল্প কিছু কাগজ বাকি আছে। আশা করছি ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এগুলো ঠিক হয়ে যাবে। এর মধ্যে শেষ না হলে আমরা সমস্যা পড়ে যাব।”


জানতে চাইলে বাংলাদেশ মুদ্রণশিল্প সমিতির চেয়ারম্যান শহীদ সেরনিয়াবাত ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের মুদ্রণালয়ে বই ছাপানোর কাজ এগিয়ে চলছে। তবে কেপিএমের কাগজ ঠিক সময়ে না আসায় আংশিক বই ছাপানোর কাজে বিঘ্ন ঘটছে।”


এ বিষয়ে জানতে কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসাব্বেরুল ইসলামের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।


(ঢাকাটাইমস/১৪ডিসেম্বর/এমএম/মোআ)