এম এ ইউসুফ দীর্ঘ তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন ব্যাংকিং সেক্টরে। কর্মজীবনের এই দীর্ঘ পরিক্রমায় বিভিন্ন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সফলতার পাশাপাশি সুনাম কুড়িয়েছেন নিজের দক্ষতার জন্য। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক। নিজের কর্মজীবন ও এ দেশের ব্যাংকিংয়ের নানা দিক নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন সৈয়দ ঋয়াদ
প্রথম কোথায় পেশাজীবন শুরু করেন?
আমি পড়াশোনা শেষ করে বিআইডিএসে কাজ শুরু করি। সেখানে কাজ করার সময় আমি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সুযোগ পাই। সেটি ১৯৭৯ সালের কথা। তখন বিভিন্ন জায়গায় থেকে কাজের অফার আসে। আমি কৃষি ব্যাংককেই কাজের জায়গা হিসেবে পছন্দ করি। কৃষি ব্যাংকে প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে যোগদান করি। এভাবেই আমার ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু। দীর্ঘদিন কৃষি ব্যাংকে কাজ করি এবং এখান থেকেই আমি জেনারেল ম্যানেজার পদে পদোন্নতি পাই। অগ্রণী ব্যাংকেও জেনারেল ম্যানেজার পদে যোগদান করি। সেখান থেকে আবার কৃষি ব্যাংকে চলে আসি। কৃষি ব্যাংক থেকে ডিএমডি হয়ে জনতা ব্যাংকে যাই। জনতা ব্যাংক থেকে বিএমআরএসের এমডি হই। সেখান থেকে আবার অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগদান করি। তারপর কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, সবশেষে আবার কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগদান করি। গত দেড়-দুই বছর ধরে এখানে কাজ করছি।
আপনি কৃষি ব্যাংকে যোগদান করার পর বিভিন্ন সূচকে অগ্রগতি হয়েছে কি?
দেখুন আমি স্পষ্ট বলি, যারা কাজ করে, কাজটি যদি সে করতে চায় সে যেভাবেই করুক সেটা করতে পারবে। যদি দুরূহ হয় সেটি ভিন্ন বিষয়। আমার ছোট বেলার বিশ্বাস, মানুষ যদি চায় সব করতে পারে। আমরা ৯ মাস যুদ্ধ করে একটি দেশকে স্বাধীন করেছি। এ দেশের মানুষ পারে না এমন কোনো বিষয় নেই, এরা সর্বংসহা। এরা সব কিছু সইতে পারে। এই মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে আমার মনে হয় সব কিছু করা সম্ভব। আমি যোগ দেওয়ার পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বলেছি, তোমাদের জীবন-জীবিকা এই ব্যাংকের সাফল্যের ওপর নির্ভর করছে। আমি তাদের ব্যক্তিগতভাবে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলাম। সারা দেশ ঘুরে তাদের একটা আত্মবিশ্বাস দিতে পেরেছিলাম। কৃষি ব্যাংক যদি বাঁচে তুমি বাঁচবে। কৃষি ব্যাংকের ক্ষতি হলে তোমারও ক্ষতি হবে। আমি ছত্রিশ বছর এই পেশায় আছি, তাই অভিজ্ঞতা নয়, বিশ্বাস থেকে বলতে পারি যদি মানুষটি ভালো হয় প্রতিষ্ঠান ভালো হবে। আমি গ্রাহকদের বলেছি, আপনি ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন। আপনি কি ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিবেন না? আপনি কি এত বোকা! আপনি কি পঁচিশ হাজার টাকা নিয়ে বড়লোক হয়ে যাবেন? তারা এ কথাগুলো গ্রহণ করেছে। এ দেশের মানুষকে বোঝাতে পারলে তারা সোনা ফলাতে পারে। তারা বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। আমরা খানিকটা বুঝতে পেরেছি সে কারণে কৃষি ব্যাংকের একটু পরিবর্তন হচ্ছে। একটি ট্রেন্ড আমরা সৃষ্টি করেছি। কাজে গতি এসেছে। আমি নিজেও দেখেছি কৃষি ব্যাংক পরবর্তী বছরে ব্যালেন্স সিট বছরের শেষ ভাগের আগে কখনো দিতে পারেনি। আমি যোগদানের আগে এটা নিয়ে পত্র-পত্রিকায় অনেক কথা হয়েছে। আমি এসে প্রথমেই চেয়েছি কত দ্রুত ব্যালেন্স সিট দেওয়া যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের যে স্ট্যান্ডার্ড সেটাতেও আমাদের কিছু উন্নতি হয়েছে। লস করার ট্রেন্ডটা আমরা খানিকটা কমাতে পেরেছি। এই কৃতিত্ব আমার সহকর্মীদের। তারাই কাজগুলো করেছে। এর আগের বছরগুলোতে একই মানুষ ছিল। নতুন কেউ এসে করে দেয়নি। গত অর্থবছরে নেট লোকসান তিন হাজার কোটি টাকা ছিল সেটি কমিয়ে ২০০ কোটি সামথিংয়ে নামিয়ে আনতে পেরেছি। এর কারণ লোকেরা আমার কথা শুনেছে। এই ক্রেডিট আমার সহকর্মীদের। আমরা ব্যাংকের খরচ অর্থাৎ কষ্ট অব ফান্ড কমাতে পেরেছি। এবার একটি ভালো জায়গায় গেছে। প্রতিষ্ঠানটি ইফেক্টিভ ও ইফিসিয়েন্ট হয়েছে।
কৃষি ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে যদি বলেন...।
সারা দেশে এখন পর্যন্ত কৃষি ব্যাংকের এক হাজার ত্রিশটি শাখা কাজ করছে। রাজশাহী বিভাগে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক নামে একটি ব্যাংক আছে। এক সময় এটি কৃষি ব্যাংকের অংশ ছিল। এখন এটি আলাদা একটি ব্যাংক। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক নামে পরিচিত। কিন্তু তারা কৃষি ব্যাংকের মতো একই রকম কাজ করছে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক একমাত্র ব্যাংক যাদের গ্রাহক সংখ্যা ৩৫ লাখেরও বেশি। এই ৩৫ লাখ গ্রাহকের কাছে ষোলো হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া আছে। আমার সত্তর লাখ ডিপোজিটর, দুস্থ ভাতা, বিদ্যুৎ বিল, স্কুল ব্যাংকিং, গ্যাস বিল অনেক রকম কাজ সরকার আমার ওপর চাপিয়ে রেখেছে কিন্তু ততটা সুবিধা পাই না। তাতেও আমি অখুশি না। এক কোটি ২০ লাখ বা তার চেয়ে বেশি মানুষকে আমি সেবা দিতে পারছি। সরকার পনেরো হাজার কর্মী অ্যাপ্রুভড করেছে কৃষি ব্যাংকের জন্য। কিন্তু কর্মী আছে দশ হাজার। আরও পাঁচ হাজার কর্মীর ঘাটতি আছে। তার মধ্যেও কৃষি ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে।
কৃষি ব্যাংকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
এই ব্যাংক নিয়ে আমার বেশ বড় কিছু পরিকল্পনা আছে। এগুলো যদি সাকসেস হতে পারি তা হলে নিজের খরচ নিজেই তুলতে সক্ষম হবে কৃষি ব্যাংক। কৃষি ব্যাংক কৃষকের সঙ্গেই কাজ করবে এবং আমার ধারণা কৃষকদের দিয়েই কৃষি ব্যাংক দাঁড়াবে। হাজার কোটি টাকার প্রজেক্টে না গিয়েও আমি সেটা করতে পারব। দু বছর সময় লাগতে পারে আশা করি। যদি সুযোগ হয় সেটি করে যাব দেট ইজ প্লান।
মানবসম্পদ উন্নয়নে কৃষি ব্যাংকের ভূমিকা?
এই প্রতিষ্ঠানগুলো যে উদ্দেশে জন্মগ্রহণ করেছে সে উদ্দেশ্য সাধন করাই তার মূল কাজ। কৃষি ব্যাংক জন্মগ্রহণ করেছে গ্রামের কৃষককে আর্থিক সহায়তা দিয়ে। দুস্থদের দারিদ্র্যসীমা থেকে উদ্ধার করার জন্য। দেশটিকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে কাজ করে কৃষি ব্যাংক। আমাদের এই দরিদ্র মানুষের কৃষির জন্য ব্যয় করার ক্ষমতা নেই। আর্থিক সংগতি যেহেতু কম তাই ঋণ হিসেবে তার কাছে টাকা দিতে হবে। আর তাদের কাছে টাকাটা পৌঁছানোর একটি বিরাট চ্যানেল হলো কৃষি ব্যাংক। দেশের জন্মলগ্ন থেকে কৃষি ব্যাংকের এই দায়িত্ব বেড়েছে। এখন কৃষক হয়ত কমে গেছে কিন্তু কৃষিজাত পণ্যের গুরুত্ব কমেনি, এটা বহু গুণে বেড়েছে। বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে খাওয়ানোর কাজটি করছে কৃষকরা। কিন্তু কৃষক এটা করবে কেন? কারণ এটি করে তার আর্থিক সংগতি আসছে। সে লাভবান হচ্ছে। দেশের খাদ্যনির্ভরতার জন্য কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে কৃষি ব্যাংক। কৃষি ঋণের ক্ষেত্রে কৃষি ব্যাংকের ভূমিকা অনেক বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫টি অথরাইজড ডিলার দিয়ে ব্যবসায়ীদের এক্সপোর্ট ও ইমপোর্টে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। তাছাড়াও কৃষি ব্যাংক কৃষি পণ্যের উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ ও বিপণন এই চারটি এরিয়ার কাজ করছে। বাংলাদেশ সরকার ২০১২ সালে বলে তোমরা আর কোনো বাণিজ্যিক ঋণ দিতে পারব না। এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা আমাদের ওপর দেওয়া হলো। তা হলে তো শুধু কৃষিই থাকল কৃষি ব্যাংকের জন্য। আমার কাছে থাকল, কৃষক, বর্গা কৃষক, ভূমিহীন কৃষক, দারিদ্র্যবিমোচন, দুস্থ ভাতা। দারিদ্র্যবিমোচন করে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান লাভবান হবে এটা আশা করা দুরূহ। গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য যে সব কাজে কৃষি ব্যাংক সম্পৃক্ত তার কোনোটিরই কোনো গ্যারান্টি নেই। আপনার ধান বা ফসলি জমি নষ্ট হবে না তা কে বলবে। ভাগ্য ভালো যে, গত কয়েক বছর আয়লা, সিডরের মতো কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল না। বন্যা হলে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই যে পরিস্থিতি এটা কৃষি এবং কৃষকের ক্ষেত্রে ঘটে। তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে ট্রিট করলে চলবে না। তাদের যতœ করে উপরে নিয়ে আসতে হবে। এই সরকার নানাভাবে কৃষককে সাহায্য করেছে। একটি কৃষিবান্ধব পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। আমেরিকায় শার্ট পাঠিয়ে দিলেন টাকাটা চলে এলো। লভ্যাংশ থেকে আপনি ব্যাংকের টাকা হিসাব করে দিয়ে দিলেন। কৃষি ক্ষেত্রে তো এমন নয়। যদি ফসল হয়, সে খেয়ে-পরে বেঁচে তারপর ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করবে। তার ছেলেকেমেয়েকে পড়াতে হবে। তারপর সে ঋণ পরিশোধ করবে। এটি একটি সেনসেটিভ ইস্যু। আপনারা জানেন দেশের ২০/২২ শতাংশ জিডিপি কৃষি থেকে। আর কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যগুলো মিলিয়ে মোট জিডিপিতে কৃষির অবদান অনেকখানি। অনেক সেক্টর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তারপরও এটি প্রথম। মানুষ খাইয়ে বাঁচানোর জন্য এই সেক্টর এখনও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কৃষি উৎপাদন না বাড়লে এই খাদ্য বাইরে থেকে আমদানি করতে হতো। এই খাদ্য আমদানি করতে কত অর্থ খরচ হতো তা ভাবাও কঠিন। তাই কৃষিতে লাভ হলো কি না হলো, কৃষিতে ফাইন্যান্স করে আপনি প্রফিট করলেন, কি না করলেন তা বাদ দিয়েও কৃষক আমাদের ষোলো কোটি মানুষকে খাইয়েছে তা একটি বিরাট অর্জন। সে জন্য দেশ বিরাট অগ্রগতির দিকে যাচ্ছে। এটি একটি অহংকারের জায়গা। আমি খাদ্যেস্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভ করার কাজটি করছি। ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসা কাজটি জড়িয়ে আছে কিন্তু কৃষি ব্যাংক অন্য একটি ব্যবসা করছে। আমি এটিকে বলি উন্নয়নের ব্যবসা। মানব সম্পদ উন্নয়ন কাজটি কৃষি ব্যাংক দারুণভাবে করছে।
বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর ব্যাংকিং খাতের মূল্যায়ন?
আমি দীর্ঘদিন ব্যাংকের সঙ্গেই আছি। আমি মনে করি, যে সোসাইটিতে যত ব্যাংক সেই সোসাইটি তত উন্নত। বুদ্ধিজীবী সমাজ, অর্থনীতিবিদ ও গবেষকদের মধ্যে এই কথাটি প্রচলিত আছে, ‘যত ব্যাংক তত উন্নতি।’ আমাদের দেশে অনেক প্রাইভেট ব্যাংক হয়েছে, তারা বেশ সফলতা পাচ্ছে এবং বেশ ভালোও করছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা যদি বলি, মানুষকে উন্নত করতে হবে, তা হলে ব্যাংকের গুরুত্ব সাংঘাতিক। অভাব এবং এর থেকে প্রতিকার, যা অর্থনীতি পাঠের প্রথম কথা। সে অভাবের প্রতিকার করতে হলে একটি কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। অর্থনৈতিক জোগানোর জন্যই ব্যাংক। নিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খলভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড করার জন্য ব্যাংক খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা জানেন, স্বাধীনতার পর ব্যাংকগুলোকে জাতীয়করণ করা হয়েছিল। তখন এটি ছিল বাস্তবতা। কারণ তখন বহু পাকিস্তানি ব্যাংক এখানে পড়ে ছিল। তখন আর্থিক ডিসিপ্লিন আনার জন্য ওটা দরকার ছিল। তারপর সেগুলোকে আবার রাষ্ট্রীয়করণ থেকে পৃথকভাবে স্বায়ত্ত্বশাসনে নিয়ে যাওয়া হয়। আমাদের দেশে অনেক ব্যাংক হয়েছে। এটা বিতর্ক হতে পারে, এতগুলো ব্যাংক কেন প্রয়োজন? সেটা এক ধরনের কথা। অর্থনীতির সাইজ অনুসারে সেটি ডিপেন্ড করে। কেউ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে লস করে চলে যেতে পারে সেটি তার ব্যক্তিগত ব্যবসার ব্যাপার। আমার মনে হয়, আজকে দেশে যে উন্নয়ন দেখছি, উদ্যোক্তা সৃষ্টি, ব্যবসায়িক লোন, এগুলো রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ উদ্যোক্তারাই দেশের একমাত্র শক্তি। তাদের উন্নয়নের জন্য ব্যাংক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনার অথনৈতিক নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব রকম কর্মকা-েই ব্যাংক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই সভ্য ও উন্নত সমাজ ব্যাংক ছাড়া কল্পনা করা যায় না।
বিশ্বায়নের যুগে প্রযুক্তি এসেছে ব্যাংকিং সেক্টরেও। কৃষি ব্যাংক কতটা প্রযুক্তি-নির্ভর?
কৃষি ব্যাংক গ্রামগঞ্জের প্রতিষ্ঠান। প্রযুক্তি কি জিনিস তারা আগে বুঝতে পারতেন না। কিন্তু এখন যেকোনো কৃষকের হাতেই একটি মোবাইল আছে। অতএব টেকনোলজি ইজ দেয়ার। প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো এবং আমার কর্মকাণ্ডের প্রযুক্তিটাকে আনা। আমি সবাইকে প্রযুক্তির মধ্যে নিয়ে আসব। এক হাজার ত্রিশটি শাখাকে অটোমেশন করব। বর্তমানে একশরও কম কেন্দ্রে আমরা অনলাইন সেবা দিচ্ছি। একটি সুন্দর সময় আমাকে কথাটি জিজ্ঞেস করেছেন। ২০১৬ সালের মধ্যে আমরা ২০০ শাখায় অনলাইন সেবা নিয়ে আসব। এভাবে সবকটি শাখাতেই অনলাইন ব্যাংকিং নিয়ে আসব। আমি হয়ত থাকব না, যারা থাকবে সে পথটা আমি তৈরি করে যাব। আর নতুন করে কৃষি ব্যাংকের যে শাখা হচ্ছে সেখানে অনলাইন করা হবে।
প্রতিযোগিতার বাজারে যুগোপযোগী কোনো নতুন সেবা আসছে কি?
আমরা কিন্তু দশ টাকার অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম চালু করি। এ বছর নতুন একটা কাজ শুরু করেছি। এটা ইনশাল্লাহ করে দেব। মোবাইল ব্যাংকিং। সেটা অন্য অনেকেই করছে। কিন্তু তাদের আমাদের মতো তৈরি করার বড় মার্কেট প্লেস নেই। আমরা ‘বাংলাক্যাশ’ নামে নতুন মোবাইল ব্যাংকিং চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটি ইউনিয়নের ই-সেবা কেন্দ্রের সঙ্গে আমরা এটি জুড়ে দেব। আমার তো সোয়া কোটি গ্রাহক আছেই। আমি যদি আর এক বা দুই কোটি গ্রাহক যুক্ত করতে পারি তা হলে এটি একটি বিপ্লব হবে। আপনাকে এটি বলতে চাইনি কিন্তু আপনার প্রশ্নের উত্তরে বলতেই হলো। ওটাই কিন্তু আমার বড় আশার জায়গা। ওটা করতে পারলে আমি ফ্রি টাকা পাব। কৃষি ব্যাংকের সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে এবং আমি এই স্বপ্নটা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। ফিজিক্যালি কৃষি ব্যাংক সেখানে যেতে না পারলেও এই সেবার মাধ্যমে সবার কাছে সেটা পৌঁছে যাবে।
বাংলাদেশ নিয়ে আপনার স্বপ্ন?
বর্তমান সরকার দেশের ইনফ্রাস্ট্রাকচারে পরিবর্তন করেছে। হাইওয়ে কমিউনিকেশন, ই-সেবা এসব ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি আমরা। সুন্দর ও উন্নত একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। দেশটা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে সেদিন খুব দূরে নয়।
সাপ্তাহিক এই সময় এর সৌজন্যে