logo ১৯ এপ্রিল ২০২৫
এডিস মশা এড়িয়ে চললে জিকা নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১২:৫০:৪৩
image



হঠাৎ করেই জিকা ভাইরাস নিয়ে শোরগোল, এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি অবস্থা জারি করেছে। দক্ষিণ আমেরিকাসহ ওই অঞ্চলের বেশ কিছু দেশে জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ব্রাজিলসহ অন্যান্য দেশের মায়েদের গর্ভে ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্ক নিয়ে শিশু জন্মের ঘটনা বাড়ছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত অনেকে মারাও গেছে। আর এ জন্যে এডিস মশাকেই দায়ী করছে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়ায় আতঙ্কটা যেন ডাল পালা মেলতে শুরু করেছে। জানা গেছে, মার্কিন গবেষকরা এর মধ্যে ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই আতঙ্ক বাংলাদেশেও। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এরই মধ্যে সরকারের সর্বোচ্চ প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন।






সার্বিক বিষয় নিয়ে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বলেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান (পিএইচডি)।বলছেন, বৃষ্টির সময় যদি পানি জমে থাকে তা থেকে এডিস মশার সৃষ্টি হবে। জিকা ভাইরাস বাহনকারী এডিস মশার উপদ্রবও তখন বেড়ে যাবে। তখন এ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হবে। তাই এডিস মশা এড়িয়ে চলতে পারলে জিকা ভাইরাসের ঝুঁকি থাকবে না।






রবিবার মুঠোফোনে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন  ঢাকাটাইমসের নিজস্ব প্রতিবেদক বোরহান উদ্দিন






ঢাকাটাইমস:জিকা ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশ কতটা ঝুঁকির মধ্যে?






মাহমুদুর রহমান: এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এই ভাইরাস পাওয়া যায়নি। কাউকে শনাক্তও করা যায়নি। তবে জিকা ভাইরাসের বাহক হলো এডিস মশা। বর্তমান মৌসুমে কিউলিস্ক মশা বেশি আছে। তবে এটা জিকা ভাইরাস ছড়ায় না। কিছুদিন পর যখন বৃষ্টি শুরু হবে তখন এডিস মশা বেড়ে যাবে। তখন ডেঙ্গু, নিউমোনিয়া ও জিকা ভাইরাসের মতো রোগের উপসর্গ দেখা দেবে। কিন্তু এখনো যেহেতু কোনো কিছু শনাক্ত হয়নি সে হিসেবে আমরা কম ঝুঁকিতে আছি। আর আশপাশের দেশগুলোতে শনাক্ত না হওয়ায় বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যেও নেই। তবে এই রোগের যেহেতু বাহক আছে সেক্ষেত্রে জনসচেতনা হলো বড় বিষয়। কারণ বাসা বাড়ির আশপাশে পানি জমে থাকলে তা থেকে এডিস মশার জন্ম হয়। এজন্য এসব জায়গা সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। তাহলে আশা করি ঝুঁকি থাকবে না।






ঢাকাটাইমস: এই রোগের প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে কেউ আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসা কিভাবে হবে?






মাহমুদুর রহমান: আসলে এই রোগ চার থেকে সাত দিনের মধ্যে ভালো হয়। অন্য কোনো চিকিৎসা লাগে না। তবে ব্রাজিল ও কলোম্বিয়ায় দেখা গেছে আক্রান্ত গর্ববতী মেয়েরা ছোট মাথাওয়ালা সন্তান প্রসব করছেন। অনেকে আবার মারা গেছে। এছাড়া নার্ভ সম্পর্কিত সমস্যা যাকে আমরা সিবিএস বলি। এটা যেকোনো বয়সের যে কারো হতে পারে।






ঢাকাটাইমস: ঢাকায় মশা উপদ্রব ক্রমেই বাড়ছে। সেক্ষেত্রে যদি এ  ধরনের রোগী শনাক্ত হয় সেক্ষেত্রে তা ছড়িয়ে পড়বে কি না?






মাহমুদুর রহমান: এডিশ মশা যেন সৃষ্টি হতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে আমাদেরকে। মশার কামড় থেকে দূরে থাকতে হবে। নিজে নিজে ভালো হলেও এই রোগ থেকে মুক্তির জন্য প্রতিষেধক তৈরির জন্য গবেষণা চলছে। আশা করছি খুব শিগগিরই এর প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন বাজারে আসবে। সেটা চলে এলে তা সবার জন্য ভালো খবর হবে।






ঢাকাটাইমস: এডিস মশা নিধনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকারের উদ্যোগে সমন্বিত কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে বলে বলা হচ্ছে। সমন্বিত উদ্যোগ চোখে পড়েছে কী?






মাহমুদুর রহমান: স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠক হয়েছে। সেখানে এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেহেতু বৃষ্টি শুরু হয়নি সে কারণে কার্যক্রমও শুরু হয়নি। বৃষ্টি হলে এই কার্যক্রম বাড়াতে হবে। আর ভাইরাস না পাওয়া গেলে তো ঝুঁকিও নেই আবার অন্যকিছুরও প্রয়োজন নেই। এখন ঝুঁকি অনেক কম। তবে বৃষ্টি হলে নজরদারি বাড়াতে হবে।






ঢাকাটাইমস: শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আসা এ ধরনের রোগী শনাক্তে ওয়েব ক্যামেরা বসানো হয়েছে। উদ্যোগটি কতটা ফলপ্রসূ হতে পারে বলে মনে করেন?






মাহমুদুর রহমান: এটা মোটামুটি একটা স্থায়ী ব্যবস্থা। দেশে প্রবেশের জায়গা নৌ, আকাশ ও স্থল পথে সাতটা স্ক্যানার মেশিন বসানো আছে। এটা অনেকদিন ধরে কার্যক্রম চলছে। তবে এই ভাইরাস আক্রান্ত কাউকে পাওয়া গেলে উপকৃত হওয়া যাবে। আর কাউকে না পাওয়া গেলে তো সমস্যা নেই।






ঢাকাটাইমস: সরকার এ ক্ষেত্রে আর কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে, আপনার পরামর্শই বা কী?






মাহমুদুর রহমান: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে এবং সেগুলো আমাদেরকে ফলো করতে হবে। যদি এ ধরনের রোগী দেখা যায় এবং ছোট মাথার বাচ্চার জন্মগ্রহণের বিষয়টি নজরে আসার পর আমাদের বেশ কিছু চমৎকার পদক্ষেপ রয়েছে।






ঢাকাটাইমস: আপনাকে ধন্যবাদ।






মাহমুদুর রহমান: ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকেও ধন্যবাদ।






(ঢাকাটাইমস/১৫ফেব্রুয়ারি/বিইউ/এআর/জেবি)