logo ২১ এপ্রিল ২০২৫
খালেদার দোহাই একাধিক পদধারীদের
বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
২০ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০৮:০০
image



ঢাকা: বিএনপিতে ‘এক নেতার এক পদ’ নীতি কার্যকরের সিদ্ধান্ত হলেও একাধিক পদ ধরে রাখতে নানা ‘বাহানা’ করছেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়া নেতারা।






ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের পর নতুন কমিটিতে নতুন পদ পাওয়ার পরও একাধিক পদে আছেন এমন নেতাদের অনেকে বাড়তি পদ ছাড়তে রাজি নন।সেসব পদ ধরে রাখতে বিভিন্ন অজুহাত দাঁড় করাচ্ছেন কেউ কেউ। তবে চেয়ারপারসন চাইলে যেকোনো সময় একটি রেখে বাকি পদ ছেড়ে দিতে রাজি বলেও জানান অনেকে।






একাধিক পদ আছে এমন নেতাদের অনেকে আরো কিছুদিন পদ ধরে রাখতে চান।এ ক্ষেত্রে তারা একাধিক দায়িত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্রে চেয়ারপারসনের ক্ষমতার দোহাই দিচ্ছেন।






তবে গঠনতন্ত্র সংশোধন উপকমিটির সদস্যরা বলছেন, এ বিষয়ে চেয়ারপারসনের যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, তা সাময়িক সময়ের জন্য।  






ষষ্ঠ কাউন্সিলের পর এখন পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ৩৯ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে মহাসচিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, সাতজন যুগ্ম মহাসচিব, দশজন সাংগঠনিক সম্পাদক,২০ জন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের নাম।






কাউন্সিলের আগে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে যথাক্রমে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নির্বাচিত হন। কমিটির অন্য পদগুলোতে পরণের জন্য খালেদা জিয়াকে ক্ষমতা দেন কাউন্সিলররা।






সম্মেলনের ১১ দিন পর দলের মহাসচিব পদে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া। এর কয়েক দিন পর মির্জা ফখরুল কৃষক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতির পদ ছেড়ে দেন। 






৯ এপ্রিল দলের নতুন সাত যুগ্ম মহাসচিব ও নয় সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম  ঘোষণার ১০ দিন পরও তাদের কেউ অন্য পদ ছাড়েননি।






তবে যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল অন্য পদ ছাড়তে বিএনপির চেয়ারপারসনের কাছে পদত্যাগপত্র  নিয়ে গেলেও তিনি তা গ্রহণ করেননি বলে জানা গেছে। খালেদা জিয়া তাকে যুবদলের কমিটি দেয়ার সময় পদত্যাগ করার জন্য বলেছেন বলেও জানা গেছে।






সাতজন যুগ্ম মহাসচিবের মধ্যে আগের কমিটির এ এম মাহবুবউদ্দিন খোকনই শুধু রয়েছেন। বাকি সবাই নতুন।






নতুন যুগ্ম মহাসচিবদের অন্য সবাই একাধিক পদে রয়েছেন। তাদের মধ্যে মজিবর রহমান সরোয়ার গত কমিটিতে বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি বরিশাল মহানগরের সভাপতিও।  যুবদল সভাপতি আলাল ছিলেন যুববিষয়ক সম্পাদক; ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কও তিনি। খায়রুল কবির খোকন শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। হাবিব উন নবী খান (সোহেল)স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিবের দায়িত্বেও রয়েছেন। সাবেক সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আসলাম চৌধুরী চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আহ্বায়ক।






একাধিক পদ ছাড়বেন কি না এমন প্রশ্নে আসলাম চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, “পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে পদত্যাগ করার সুযোগ ছিল। কিন্তু আহ্বায়ক কমিটি হওয়ায় নতুন কমিটি না হওয়া পর‌্যন্ত তো দায়িত্ব ক্যারি করতে হবে।”






মজিবুর রহমান সরোয়ার ঢাকাটাইমসকে বলেন,“দলের স্বার্থে যেকোনো সময় যেকোনো পদ ছাড়তে রাজি। তবে একটা জিনিস বুঝতে হবে, বিএনপি কোনো রেজিমেন্ট ফোর্স নয়। সে কারণে বরিশালের মতো জায়গায় দলের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে হলে কেমন নেতৃত্ব প্রয়োজন তাও দলকে বুঝতে হবে। তবে চেয়াপারসন যেখানে চাইবেন সেখানেই দায়িত্ব পালন করা যাবে।”






সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে ফজলুল হক মিলন ও আসাদুল হাবিব দুলু ছাড়া বাকি সবাই নতুন পদ ছাড়াও অন্য পদে আছেন।






খুলনায় নজরুল ইসলাম মঞ্জু।তিনি আগে ওই বিভাগের সহ-সাংগঠনিক ছিলেন। আছেন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতিও।






রাজশাহীতে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, দলের স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদকও তিনি। চট্টগ্রামে শাহাদাত হোসেন; তিনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকও। ময়মনসিংহ বিভাগের সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক। ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন ছিলেন সিলেট বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।






নতুন পদ রেখে বাকি পদ ছাড়ছেন কবে এমন প্রশ্নে নজরুল ইসলাম মঞ্জু ঢাকাটাইমসকে বলেন, “চেয়ারপারসনের তো একটা সুযোগ আছে।  তিনি চাইলে কাউকে একাধিক পদে রাখতে পারবেন।”






এ ছাড়া প্রথমবারের মতো সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আসা দুই নারী নেত্রীও একাধিক পদে আছেন। বরিশালের বিলকিস শিরীন মহিলা দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আর ফরিদপুরের শামা ওবায়েদ দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য।






আর সবশেষ ঘোষিত সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে জয়ন্ত কুণ্ডু সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।  কলিম উদ্দিন মিলন ও মাহবুবুল আলম নান্নু, আখন্দ কুদ্দুছুর রহমান,শাহীন শওকত বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। আর মোশতাক মিয়া কুমিল্লা দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আবদুল আউয়াল খান মৎস্যজীবী দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আর রংপুরের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান নীলফামারী জেলা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।






(ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/বিইউ/মোআ)