বাজেট জটিল, ব্যবসায়ীদের দাবির প্রতিফলন ঘটেনি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
০৩ জুন, ২০১৬ ১২:২৩:৪৪

ঢাকা: এফবিসিসিআই’র সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যবসায়ীদের দাবির প্রতিফলন ঘটেনি। শুক্রবার রাজধানীতে বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন। নতুন অর্থবছরের (২০১৬-১৭) প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট আগের বাজেটগুলোর তুলনায় বেশ জটিল মন্তব্য করে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিসিআই’র সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমদ বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটের সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে আগামী ৭ অথবা ৮ জুন এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
তিনি বলেন, এ বারের বাজেট বিশাল। এ বিশাল বাজেটে করের আওতা না বাড়িয়েও আয় বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে বাজেটের জন্য ৭টি পয়েন্ট (প্রস্তাব) দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখনো পর্যন্ত তার কোন প্রতিফল দেখতে পারিনি। অনেক অ্যাসোসিয়েশন ও ব্যবসায়ী সংগঠনের দাবির প্রতিফল বাজেটে ঘটেনি।
মাতলুব বলেন, বাজেট নিয়ে এফবিসিসিআই ৪ মাস ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড’র (এনবিআর) সঙ্গে আলোচনা করেছে। আমরা লক্ষ্য করেছি বাজেটের আকার অনেক বড় হয়েছে। বাজেটের আকার বড় হওয়া মানেই রাজস্বের আকার বড় হবে। রাজস্বের আকার বড় হওয়া মানেই ব্যবসায়ীদের আরও টাকা দিতে হবে। আমরা টাকা দিতে প্রস্তুত। কিন্তু আমরা আমাদের সাধ্যের মধ্যে থাকতে চাই।
অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য হয়রানির জন্য বন্ধ হয়ে গেছে এমন মন্তব্য করে মাতলুব বলেন, এ বারের বাজেট বিশ্লেষণের জন্য আমাদের তিনটি টিম কাজ করছে। বাজেটে যে ৭টা পয়েন্ট আমরা চেয়ে ছিলাম, সে ৭টা পয়েন্টের প্রতিফলন আমরা এখনো খুজে পায়নি। বরঞ্চ সরকার কিভাবে আরও ট্যাক্স আদায় করা যায় এবং ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের উপর ট্যাক্স আদায়ের নতুন ফর্মুলা দিয়েছে। সেই ফর্মুলা এখন আমাদের খুজে খুজে বের করতে হচ্ছে ওনারা কিভাবে এগুলো অর্জন করতে চান। ফেডারেশন মনেকরে কোন ভ্যাট বা ট্যাক্স অন্যায়ভাবে ব্যবসায়ীদের উপর চাপিয়ে দিলে, তা আদায় করা কঠিন হবে।
তিনি বলেন, এ বিশাল বাজেটকে পর্যালোচনার জন্য আমাদের আরও সময়ের প্রয়োজন আছে। কারণ কয়েকটি জায়গায় ভালো আছে, কয়েকটি জায়গায় খারাপ আছে। যেমন আমরা প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি জুয়েলারী সমেতি, হাইব্রীড গাড়রি আমদানিকারক, লোহা, ই-কমার্স, বেকারি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প যাদের আছে তাদের অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। এটি বিশাল বাজেট, তাড়াহুড়া করে এর উপর প্রতিক্রিয়া দেওয়া সম্ভব না। ব্যবসায়ীদের জীবন-মরন সমস্যা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আমরা বুঝতে পারছি মানুষের মুখে যে হাসি দেখতে চায়, সে হাসিটা এখন দেখতে পারছি না। কি করলে সেই হাসিটা দেখতে পাওয়া যাবে, সেটিই এখন আমাদের খুজে বের করতে হবে।
আগামীতে ব্যবসায়ীরা প্রাক-বাজেট আলোনায় নাও বসতে পারে এমন হুশিয়ারি দিয়ে মাতলুব আহমেদ বলেন, আমাদের ৪৮০টি অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে, ৮০টি চেম্বার রয়েছে, জয়েন্ট চেম্বার রয়েছে। অনেক অ্যাসোসিয়েশন এ বাজাটে গ্রাহণ করতে পারছে না। তারা আমাদের কাছে প্রতিক্রয়া পাঠাতে চাচ্ছেন। আমরা ব্যবসায়ীদের কথা সরকারের কাছে তুলে ধরবো এবং আমরা ৪ মাস থেকে যে প্রস্তাবগুলো সরকারের কাছে দিয়ে ছিলাম, সেটা কতোটুকু সরকার নিয়েছে, কতোটুকু নেয়নি তাও তুলে ধরবো। তাহলে আগামী বাজেটে আমরা বাজেট মিটিং (সভা) করবো কি করবো না, সেটা নিয়েও আমাদের চিন্তা করতে হবে। আমরা বলে যাবো, আর ওনারা শুনবেন, কিন্তু বাজেটে কোন প্রতিফল দেখবো না তাহলে আমরা এতো সময় নষ্ট করতে যাবো কেন? এ সময়টা আমরা আমাদের ব্যবসার কাজে দিতে পারি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র প্রথম সহ-সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, পরিচালক হাবিবুল্লা ডন, হারুনর রশিদ, শামীম আহমেদ প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/ ০৩ জুন /এআর/জেডএ)