logo ২১ এপ্রিল ২০২৫
আসলাম-সাফাদি বৈঠক
বিএনপির একাধিক নেতার পেছনে গোয়েন্দা পুলিশ!
ইব্রাহীম খলিল
১২ জুন, ২০১৬ ০৯:৪২:২৯
image



চট্টগ্রাম: ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগে আটক বিএনপির নেতা আসলাম চৌধুরীর জিজ্ঞাসাবাদে দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দলটির একাধিক নেতাকে খুঁজছে পুলিশ। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির নেতাও রয়েছেন। নজরদারিতে থাকা এসব নেতা যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন।






চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।






আসলাম চৌধুরীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী বিএনপির ওই নেতারা কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, তাদের নেটওয়ার্ক কত দূর বিস্তৃত সেসব বিষয় খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা পুলিশ। বিশেষ করে সাফাদির সঙ্গেও বিএনপির ওই সব নেতা যোগাযোগ রাখছেন কি না, তাও দেখা হচ্ছে।






চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) এ রকম ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসলাম চৌধুরী ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে বিএনপির যেসব নেতার যোগাযোগ থাকার কথা বলেছেন, তাদের নামের তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে এসেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামসহ কেন্দ্রের একাধিক নেতার নাম রয়েছে, যাদের পিছু নিয়েছেন গোয়েন্দারা।






চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই ইকবাল হোসেন বলেন, “আসলাম চৌধুরীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামে বিএনপির কয়েকজন নেতাকে আমরা নজরে রেখেছি। তবে বিএনপির নেতারাও সতর্ক। যথোপযুক্ত প্রমাণসহ আমরা তাদের গ্রেপ্তার করতে চাই।”






সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আসলাম চৌধুরী ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি এটাও স্বীকার করেছেন, সরকার উৎখাত করার জন্য তিনি মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করেন।






স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসলাম চৌধুরীর সব কথা এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ কাজ করছে।






আসলামের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের সপক্ষে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ মিলেছে দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার (আসলাম) সঙ্গে আরো কয়েকজন রয়েছেন।






গোয়েন্দা সূত্র জানায়, আসলাম চৌধুরী প্রথম থেকেই তার সঙ্গে সাফাদির বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাফাদির সঙ্গে তার বৈঠক হয়। ওই অনুষ্ঠানের আগেও তাদের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে বলে আসলাম চৌধুরী জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।






সূত্রটি আরও জানায়, গোয়েন্দারা জানার চেষ্টা করেন আসলাম চৌধুরীকে বৈঠকে যাওয়ার জন্য কার নির্দেশ ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে আসলাম চৌধুরী তা বলে দিয়েছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রটি জানায়। তার দেয়া তথ্যর ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ তদন্ত করছেন।






এ ছাড়া আসলাম চৌধুরীর কাছ থেকে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে এর সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরপর প্রমাণের ভিত্তিতে একাধিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে সূত্র জানায়।






এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর দেখা হওয়ার বিষয়টি ভিন্ন খাতে ব্যবহার করে বিএনপির নেতাদের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। এর মধ্য দিয়ে একচ্ছত্রভাবে একনায়কতন্ত্র কায়েম করা সরকারের উদ্দেশ্য।






আমির খসরু অভিযোগ করে বলেন, ইতোমধ্যে আসলাম চৌধুরীর মতো রাষ্ট্রদ্রোহ বা অন্য মামলায় বিএনপির কোনো কোনো নেতাকে আসামি করার নীলনকশা করেছে সরকার। কিন্তু তাদের নীলনকশা কখনো পূরণ হবে না। বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরাই এ নীলনকশা গুঁড়িয়ে দেবে।






সাফাদির ফেসবুক পেজে আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে তার বৈঠকের ছবি প্রকাশ হওয়ার পর গত ১৫ মে সন্ধ্যায় ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে আসলাম চৌধুরীকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। আটকের পর তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়। এ ছাড়া মতিঝিল ও লালবাগ থানার দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে। আসলাম চৌধুরীকে তৃতীয় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।






(ঢাকাটাইমস/১২জুন/এমআর/মোআ)