logo ২৩ এপ্রিল ২০২৫
বিজিএমইএ ভবন: রায়ের অনুলিপির অপেক্ষায় কর্তৃপক্ষ
মোসাদ্দেক বশির, ঢাকাটাইমস
১৭ জুন, ২০১৬ ২১:৫৩:২৩
image



ঢাকা: রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় গড়ে ওঠা বিজিএমইএ ভবনটিকে আপিল বিভাগ ক্যানসারের সঙ্গে তুলনা করেছিল। বলেছিল, ধ্বংসাত্বক এই ভবনটিকে অচিরেই বিনষ্ট করতে হবে।তা না হলে এটা গোটা ঢাকা শহরকে সংক্রমিত করবে।তবে আপিল বিভাগের রায়ে যাই বলা হোক না কেন বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ এর শেষ দেখতে চায়।তারা এখনো তাদের অবস্থানে অনঢ়।বিজিএমইএ নেতারা সরকারের নানা পর্যায়ে দৌড়ঝাঁপ অব্যাহত রেখেছে।রিভিউ করার প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে।কর্তৃপক্ষ বলছে, আমরা মনে করি এই ভবন সকল বিধিবিধান মেনেই করা হয়েছে।সংশ্লিষ্ট সবার ছাড়পত্র নিয়েই আমরা ভবনটি গড়ে তুলেছি।আমরা এখন আপিলের পূর্ণাঙ্গ কপির অপেক্ষায়।রায়ের কপি হাতে পেলেই আমরা রিভিউ করবো।আশা করি সেখানে আমরা ন্যায়বিচার পাবো।






পরবর্তী অ্যাকশন প্রোগ্রাম নিয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ভবনটি নিয়ে কি করা যায়- সে বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে আপিলের রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, এই ভবন কোনো ভাবেই অবৈধ নয়। সব নিয়ম মেনেই ভবনটি তৈরি করা হয়েছে।আমরা কোনো অন্যায় করিনি।






গত ২ জুন বিজিএমইএ ভবন ভাঙার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ভবনটি ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেয়। রায়ে হাতিরঝিলে বিজিএমইএ ভবনটিকে একটি বিষফোড়ার হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।






বিজিএমইএ ভবনের ভিবিষ্যৎ জানতে চাইলে এই মামলার অ্যামিকাস কিউরি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ ঢাকাটাইমসকে  বলেন, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন। রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে বলা হয়েছে। ঈদের পরেই এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হতে পারে। রায় প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করা যাবে।






খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ আইনি প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ পর্যন্ত যাওয়ার কথা বিবেচনায় নিয়ে এ ব্যাপারে সরকারকে আস্থায় নিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে।সম্প্রতি সৌদি আরব সফরের সময় এ ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করার কথা শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে কতটা আনতে পেরেছেন বা পারলেও প্রধানমন্ত্রী তাদের কী পরামর্শ দিয়েছেন তা জানা যায়নি।






এ ব্যাপারে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন,  প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওমরা হজ পালন করতে গিয়ে সেখানে বিজিএমইএ ভবনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। এছাড়া সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গেও ভবন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেছেন।কী কথা হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি।দেখা যাক।






এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জারি করা রুলের শুনানি শেষে বিজিএমইএর ভবন ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।






এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৫ এপ্রিল আবেদন করা হলে শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। পরবর্তী সময়ে আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরো বাড়ান। এর দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ২০১৩ সালের ২৩ মে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়।






(ঢাকাটাইমস/ ১৭ জুন/ এমএবি/ এআর/ ঘ.)