বরিশালে গড়ে উঠছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা- আইসিটি পার্ক (হাইটেক পার্ক), বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার ও অর্থনৈতিক অঞ্চল। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরির্বতন ঘটবে বলে মনে করছে প্রশাসন।
এ ছাড়া গড়ে উঠছে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলবাসীর প্রাণের দাবি পদ্মা সেতু। আছে লেবুখালী ব্রিজ, পায়রা সমুদ্রবন্দর। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে উচ্চমাত্রায় অর্থনৈতিক গতি সঞ্চার হবে বরিশালে।
পায়রা সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অন্যান্য স্থাপনাগুলোর কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান।
ডিসি বলেন, এসব স্থাপনার ফলে বরিশালে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাচ্ছে। এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে ঘটবে বৈপ্ল¬বিক পরিবর্তন। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বিশাল জনগোষ্ঠীর।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার স্থাপন করা হবে কীর্তনখোলা নদীর তীরে বরিশাল সদর উপজেলার চরআইচায়। বরিশাল নগরীর নথুলাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সংলগ্ন স্থানে স্থাপিত হচ্ছে আইসিটি পার্ক। অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপিত হচ্ছে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের বড়াবাড়ি মৌজায়।
বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের অদূরে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি থেকে ৫ একর জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে আইসিটি পার্ক স্থাপনের জন্য। এ জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রাণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। নির্ধারিত জমি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্প্র্রতি মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চিঠি এসেছে। গড়ে উঠবে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। শুধু দেশীয় নয় বিদেশি আইটি কোম্পানির কাজও সম্পাদন হবে এখানে।
জানা গেছে, আইসিটি পার্কের নাম দেওয়া হবে ‘চন্দ্রদ্বীপ ক্লাউট চর’। এ স্থানকে ৫টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। ৮টি ভবন নির্মাণ করা হবে। আর এতে ব্যয় হবে ২৭২ কোটি টাকা। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ২৩ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। আইসিটি পার্কে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, কম্পিউটার সফ্টওয়্যার, কমিউনিকেশন হার্ডওয়্যার, কমিউনিকেশন সফ্টওয়্যার, আইটি ভিত্তিক সেবা, ডিজাইন অ্যান্ড কনসালটেন্সি, বায়োইনফরমেটিকসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে।
সদর উপজেলার চরআইচায় ১০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়োর স্থাপনের জন্য। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে পর্যটন করপোরেশন। সেখানে জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। পর্যটন করপোরেশন থেকে প্রকল্প চাইলেই এ উদ্যোগ আলোর মুখ দেখবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ জানান, আগৈলঝাড়ায় অর্থনেতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। সেখানে ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক পবন চৌধুরী, প্রকল্প পরিচালক মো. হারুন অর রশিদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তরা গত শনিবার প্রকল্পের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেছেন।
পরিদর্শন শেষে নির্বাহী পরিচালক পবন চৌধুরী জানানা, খুব শিগগির প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) সূত্রে জানা গেছে, পদ্ম সেতুকে কেন্দ্র করে আগৈলঝাড়ায় অর্থনেতিক জোন বরিশালের অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটাবে। মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বৃহৎ শিল্প গড়ে তোলা হবে। ফলে বরিশালের মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। উৎপাদিত পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির পরিকল্পনাও রয়েছে।
বরিশাল জনস্বার্থ রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব মো. মুনাওয়ারুল ইসলাম অলি জানান, এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে অর্থনৈতিকভাবে বিপ্লব ঘটবে বরিশালে।
ভোলা থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে বরিশালে গ্যাস নিয়ে আসতে পারলে এ বিপ্লব আরো গতিশীল হবে বলে মুনাওয়ারুল ইসলাম মনে করেন।
(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/মোআ)