কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা হলেও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের পদ ঘোষণা হয়নি। সম্পাদকীয় পদ হলেও বিএনপিতে এই পদটির প্রতি সাবেক ছাত্রনেতাদের নজর রয়েছে। বিশেষ করে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন এমন নেতাদের আকর্ষণের জায়গা এটি।
বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের পর ছাত্রবিষয়ক পদে বেশ কয়েকজন সাবেক ছাত্রদল নেতার নাম শোনা গিয়েছিল। এই পদের জন্য তখন আলোচনায় ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন ও সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক।
এদের মধ্যে হেলালকে বিএনপির তথ্য সম্পাদকের পদ দেয়া হয়েছে। এই পর্যায়ে ভবিষ্যত ছাত্র ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে পদে টুকু ও আনিসুরের নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে।
চলছে তদবির
কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর ছাত্র বিষয়ক সম্পাদকের পদ পেতে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে নিজের আকাঙ্ক্ষার কথা বলে এসেছেন আনিসুর রহমান। তিনি কথা বলেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটি ঘোষণার পরের প্রতিক্রিয়া, শূন্য পদে কারা আসবেন এসব বিষয় নিয়ে বিএনপির ভেতরে ভেতরে কাজ চলছে। সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন।
আনিসুর রহমান খোকনের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক থাকাবস্থায় তিনি রাজপথে ছিলেন। কিন্তু পরের কমিটিতে পদ না পেলেও তিনি বিগত আন্দোলন কর্মসূচিতে মাঠে ছিলেন। তিনি ‘গুম’ হওয়ার তিন মাস পর উদ্ধার হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের কর্মীরা। উদ্ধার হওয়ার পর কয়েক মাস তাকে আবার কারাগারে থাকতে হয়েছে।
বর্তমানে আনিসুরের বিরুদ্ধে ১১৭টি মামলা রয়েছে। সবগুলোতেই তিনি জামিনে আছেন। তবে নিয়মিত এসব মামলায় তাকে আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে।
আনিসুরের সমর্থক ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রনেতা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা দেখেছি যারা আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছে তারা বিএনপিতে পদ পেয়েছেন। আমরা আশা করি আনিসুর রহমান খোকনওকেও মূল্যায়ন করা হবে।’
আনিসুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘যে পদে কাজ আছে সেখানে আমি কাজ করতে চাই। আমি মনে করি ছাত্রবিষয়ক পদে দলের জন্য কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।’
এই পদ পেতে বসে নেই টুকুও। ঘোষিত কমিটিতে তার বড় ভাই কারাবন্দি নেতা আব্দুস সালাম পিন্টুকে আবারো ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে।
টুকুর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তিনি বিএনপির সাবেক সহছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রদলের সভাপতি থাকাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলায় তিনি গুরুতর আহত হয়েছিলেন। চেয়ারপারসনের গাড়িবহর থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনিও একাধিক মামলার আসামি।
টুকুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় একজন সহ-সভাপতি ঢাকাটাইমসকে বলেন,‘অতীতে দেখা গেছে ছাত্রদলের সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদককে এই পদে আনা হয়েছে। সে কারণে টুকু ভাই এই পদের জন্য এগিয়ে আছেন।’
বিএনপির একটি সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক পাশাপাশি যুবদলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হতে আগ্রহ আছে টুকুর।
বিষয়টি নিয়ে বিএনপির মধ্যম সারির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের পদে কে আসবেন তা অনেকটা নির্ভর করছে তারেক রহমানের উপর। তিনি যাকে এই পদে যোগ্য মনে করবেন তিনিই এই পদ পাবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আশা করি শিগগিরই বাকি পদগুলোর নেতাদের নাম ঘোষণা করা হবে। এখানে কে কার পছন্দের আর কে অপছন্দের তার চেয়ে কে কতটা যোগ্য তাই বিবেচ্য হবে।’
নজর রাখছে ছাত্রদলও
বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে কে আসছেন এ নিয়ে চোখ রাখছে ছাত্রদলও। এই সংগঠনের নেতারা চান মোটামুটি স্বচ্ছ ভাবমূর্তির একজনকে যেন নিয়োগ দেয়া হয়। তারা বলছেন, বিতর্কিত কাউকে এই পদে দিলে তার প্রভাব ছাত্রদলের ওপর পড়বে। কারণ ছাত্রদলকে দিক নির্দেশনা দেয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের বড় ভূমিকা থাকে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন তুষার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের কে হন তা নিয়ে আমরা যথেষ্ট চিন্তিত। আমাদের জন্য এটা বড় ফ্যাক্টর।
(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/বিইউ/ডব্লিউবি)