প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৮:০৬:৩১আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ২০:৫৮:২৪
জলির মৃত্যুর দায় আমরা এড়াতে পারি না
রাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
‘প্রত্যেকটা আত্মহত্যাই হত্যাকাণ্ড। প্রত্যেকটা হত্যাকাণ্ডই একেকটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। মানুষ কী ধরনের পরিস্থিতিতে আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নেয়? জলির মৃত্যু আমাকে বলে গেছে সম্পূর্ণ একা না হয়ে পড়লে মানুষ মৃত্যুকে নিজের হাতে বরণ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। জলি কেন এতো একা হয়ে পড়েছিল? তার এ মৃত্যুর পেছনে আমাদের দায় আছে। আমরা কোনোভাবেই এ দায় এড়াতে পারি না।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আক্তার জাহান জলির স্মরণে আয়োজিত শোকসভায় তার সহকর্মী ও বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন এসব কথা বলেন।
রবিবার দুপুর ১২টায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আয়োজনে বিভাগের ১২৩ নম্বর কক্ষে এ শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় বিভাগের সামনে থেকে একটি শোক র্যালি বের করেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। র্যালিটি ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে শোক সভায় মিলিত হয়।
সহকারী অধ্যাপক শাতিল সিরাজের সঞ্চালনায় বিভাগের সভাপতি ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে বলেন, ‘আমরা কখনো ভাবতেই পারিনি জলি আপা এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেবেন। রাষ্ট্র আমাদের এ হত্যার বিচার করার ক্ষমতা দেয়নি। শুধুমাত্র আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করতে পারি। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রদীপ কুমার পান্ডে বলেন, ‘দু-একজন শিক্ষকের জন্য আমাদের সবাইকে কেন প্রশ্নের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে? আমরা সত্যের সঙ্গে আছি। আমরা নিজেরাই কমিটি গঠন করে মামলার নিয়মিত খোঁজ-খবর নিচ্ছি। তারপরেও কেন সব ক্ষোভ আমাদের ওপর?’
শোকসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- জলির বড় বোন ইসরাত জাহান, ছোট ভাই কামরুল হাসান, বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিহুর রহমান, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ আজম শান্তনু, মহিলা পরিষদের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মাধবী রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেত্রী মাহবুবা কানিজ কেয়াসহ শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বকুল ‘আকতার জাহানের সংক্ষিপ্ত জীবনালেখ্য’ শিরোনামে জলির জীবনী পাঠ করেন। এসময় বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ক্লাব জুবেরী ভবনে আকতার জাহান জলির নিজ কক্ষ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে জলির ছোট ভাই কামরুল হাসান রতন আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে অজ্ঞাতনামাদের নামে মামলা করেন।