ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ স্নাতক সম্মান শ্রেণির ‘খ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় নয় জনই ফেল করেছে। গত শুক্রবার নেয়া এই পরীক্ষায় পাসের হার মাত্র ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রশাসনিক ভবনের কেন্দ্রীয় অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন।
দেশের সবচেয়ে প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তির জন্য এবার খ ইউনিট থেকে অংশ নিয়েছিলেন মোট ৩৩ হাজার ২৫৫ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে পাস করেছে তিন হাজার আটশ জন।
গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিটে পাসের হার ছিল ১৪ দশমকি ৬৮ শতাংশ। এবার আরও কমলো পাসের হার।
এমসিকিউ প্রশ্নে ১২০ নম্বরের এই ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪৮। তবে আলাদাভাবে বাংলা এবং ইংরেজিতে আট করে ও সাধারণ জ্ঞানে ১৭ নম্বর পেতে হয়।
এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএ স্কোর মোট সাত থাকলে এই ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করার সুযোগ আছে। এই হিসাবে দুই পরীক্ষায় অন্তত এ মাইনাস পেলেই এই যোগ্যতা অর্জন করতে পারে শিক্ষার্থীরা। অর্থাৎ বেশ ভালো ফলাফলকারী ছাত্র-ছাত্রীই কেবল উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করতে পারে।
গত কয়েক বছর ধরেই এসএসসি এবং এইচএসসিতে ভালো ফলাফল করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা খেই হারিয়ে ফেলছে। এ কারণেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পড়াশোনার মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। খোদ সরকারই এখন বলছে, এতদিন সংখ্যাগত দিক দেখেছে তারা, এখন মানের বিষয়ে জোর দেয়া হবে।
প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় মাত্র ১১ শতাংশ পাস কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, এই পরীক্ষায় যারা অংশ নিয়েছিল তারা এর আগের শিক্ষাজীবনে ভালো ফলাফল করেই এসেছিল। এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে কেন ভর্তি পরীক্ষায় এই বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী ফেল করলো।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে সৃজনশীল পরীক্ষাপদ্ধতি চালুর পর থেকেই শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাসের সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু মান নিশ্চিত হচ্ছে না।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভর্তি পরীক্ষার ফল নিয়ে এর আগের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘আমাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মূল্যায়ন পদ্ধতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যায়ন পদ্ধতি এক নয়। তাছাড়া আমরা তো পরীক্ষা নেই শিক্ষার্থীদের বাদ দেয়ার জন্য। এ জন্য পরীক্ষার প্রশ্ন একটু কঠিনই হয়।’
ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু ২৮ সেপ্টেম্বর
পাস করা ছাত্র-ছাত্রীদের আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বিকাল তিনটা থেকে ৯ অক্টোবর বিকাল তিনটার মধ্যে ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে চয়েজ ফরম পূরণ করতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিভিন্ন কোটায় আবেদনকারীদের ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কোটার ফরম কলা অনুষদের ডিন অফিস থেকে সংগ্রহ করে যথাযথভাবে পূরণ করে ডিন অফিসে জমা দিতে হবে।
ফলাফল নিরীক্ষণের জন্য ফি প্রদান সাপেক্ষে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর হতে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত কলা অনুষদের ডিন অফিসে আবেদন করা যাবে।
‘খ’ ইউনিটের বিষয় মনোয়নের সাক্ষাৎকার আগামী ১৬ অক্টোবর থেকে শুরু হবে।
অনলাইনেফলাফলদেখারনিয়ম
অনলাইনে দেখতে http://admission.eis.du.ac.bd ঠিকানায় প্রবেশ করে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার রল নম্বর, বোর্ডের নাম, পাশের সন, এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার রোল নম্বরের মাধ্যমে লগইন করে ফলাফল জানা যাবে।
মোবাইল থেকে ফলাফল দেখার নিয়ম
যেকোনো মোবাইল অপারেটর থেকে DU স্পেস KHA স্পেস Roll Number টাইপ করে ১৬৩২১ নম্বরে সেন্ড করলে ফিরতি এসএমএস-এ ফলাফল পাওয়া যাবে।