অনির্দিষ্টকালের বন্ধের প্রায় দুই মাস (৫৫ দিন) পর রবিবার খুলেছে দেশের মধ্য-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। এরই সাথে জমে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস আঙিনা।
প্রায় দুই মাস পর ক্যাম্পাসে ফিরেই যেন প্রাণ ফিরে পেলেন শিক্ষার্থীরা। বন্ধুদের আড্ডায় একে একে জমে উঠছে কাঁঠালতলা, জিয়ার মাজার, লালন চত্বর, বর্ণমালা চত্বর, থিয়েটার চত্বর, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়াসহ পুরো ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ।
এতদিন ক্যাম্পাসের প্রতিটি স্পট যেখানে মৃতপ্রায় পড়েছিল সেখানে আজ আড্ডাবাজদের সরব উপস্থিতি। কেউ গান ধরছেন, কেউ বা গল্পে মেতে উঠছেন। তাদের আড্ডার চিত্র দেখে মনে হবে দীর্ঘদিনের এই বন্ধ তাদের মধ্যে কোনো প্রতিবন্ধকতাই সৃষ্টি করতে পারেনি।
দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাসে ফিরে নিজেদের অনুভূতি জানাতে গিয়ে বেশ উৎফুল্ল কণ্ঠস্বরে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন ও ইমরান হোসাইন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘অনেকদিন পর প্রিয় বন্ধুদের মুখগুলো দেখে সত্যিই অনেক ভালো লাগছে। এই কয়েকদিন তাদেরকে, এই সবুজ ক্যাম্পাসকে অনেক বেশি মিস করেছি। আমরা চাই এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন আর কখনো আমাদের আনন্দে ছন্দপতন না ঘটায়।’
‘অনেক দিন পর প্রিয় ক্যাম্পাসে ফিরতে পেরে যারপরনাই ভালো লাগছে। এই কয়েক দিন ক্যাম্পাস ছেড়ে থাকলেও মনটা ক্যাম্পাসেই পড়েছিল। আমাদের সেমিস্টার ফাইনাল এতদিনে হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আচমকা এই বন্ধ সেটা পিছিয়ে দিল। আশা করি, এখন খুব তাড়াতাড়িই সেটি অনুষ্ঠিত হবে’- বলছিলেন বর্ণমালা চত্বরে আড্ডারত ক্যাম্পাসের নতুন মুখ প্রত্নতত্ব বিভাগের নাজনীন হীরা ও সাবিকুন্নাহার যুথি।
বিবিএ ফ্যাকাল্টি থেকে একটু সামনে গেলেই লালন চত্বর। এতদিন সেখানে শুকনো পাতা ও আগাছা-পরগাছার রাজত্ব চললেও আজ থেকে সেখানে আড্ডাবাজদের শাসন শুরু হয়েছে। একদল আড্ডাবাজের মধ্য থেকে কথা হলো লোকপ্রশাসন বিভাগের নওয়াজ শরীফ, মাহিন আহমেদ রুবায়েদ হোসাইনের সঙ্গে। ‘দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা আমাদের জীবন থেকে প্রায় দুই মাস কেড়ে নিলো।এই কয়েকদিন প্রিয় মুখগুলোকে ছেড়ে থাকতে কষ্ট হয়েছে খুব। তাই আমরা এই ঘটনার পূনরাবৃত্তি আর চাই না’ -বলছিলেন তারা।
এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) বিশ^বিদ্যালয়ের সবগুলো আবাসিক হল খুলে দেয়া হয়েছে। শনিবার দুপুর থেকেই শিক্ষার্থীরা হলগুলোতে ফিরতে শুরু করেন।
গত ১ আগস্টের প্রথম প্রহরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্রলীগ নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ম ব্যাচের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী খালেদ সাইফুল্লাহ নিহতের ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।